বুধবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » অপরাধ » কয়রায় চাঁদাবাজীর অভিযোগে আ,লীগ নেতা বাহারুল সহ ১০ জনের নামে মামলা
কয়রায় চাঁদাবাজীর অভিযোগে আ,লীগ নেতা বাহারুল সহ ১০ জনের নামে মামলা
কয়রা, খুলনা প্রতিনিধিঃ খুলনার কয়রা উপজেলা আ,লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী ও অপহরণ করে মারধরের অভিযোগে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের হয়েছে।
৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার উপজেলার ২ নং কয়রা গ্রামের মৃত আব্দুল হক শেখের পুত্র জাহাঙ্গীর কবির টুলু শেখ (৪৯) বাদি হয়ে কয়রা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট কোর্টে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামীরা হলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সদর ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি কাজল(৩৬), কয়রা কপোতাক্ষ কলেজের সাবেক সভাপতি ইখতিয়ার উদ্দীন হিরো (৩২), সুশান্ত (৩২), শহিদুল (৩৭), দিদার (৩৬), মিজানুর রহমান (৪৫), শাহিন শেখ (৩৮), কোহিনুর ঢালী (৪০), মিন্টু সানা (৪১) সহ আরো অজ্ঞাত ২০-২৫ জন।
মামলার এজহার সুত্রে যানা যায়, তাদের একমাত্র কাজই ছিল নিরীহ বক্তিদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করা। অন্যের জমি জবর দখল, অস্ত্রের মুখে অবৈধ বল প্রয়োগ করে টাকা ও সম্পত্তি আদায় এবং এলাকা ছাড়া করা। অপরদিকে বাদী একজন গ্রাম্য সহজ, সরল মানুষ ও পেশাদার সাংবাদিক ।
বাদী এলাকায় আসামীদের লবন পানি উত্তোলনে বাধা ও আসামীদের অপরাধ/অনিয়ম/ক্ষমতার প্রভাবে এলাকা ছাড়া করা। মামলা- হামলা দিয়ে হয়রানি ইত্যাদির বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে প্রচার করা ও তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় আসামীগণ প্রায়ই বাদীর ওপর হামলা মামলা দিয়ে ও অস্ত্রের মুখে চাঁদা দাবী করে হয়রানি করে । আসামীগণ পরিকল্পিতভাবে বাদীর ক্ষতি করার জন্য ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিল। বাদী অত্যন্ত অসহায় জীবন যাপন করেও আসামীদের বিভিন্ন দফায় তাদের দাবীকৃত চাঁদা প্রদান করলেও আসামীদের চাঁদার দাবী দিন দিন বাড়িয়ে চাঁদা দাবী করতে থাকলে ও বাদী চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে আসামীগণ বাদীর গতিবিধি অনুসরণ করতে থাকে। গত ইং ১০/০৬/২০১২ তারিখে সময় দুপুর আনুঃ ১ টার দিকে বাদী তার স্ত্রীসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্র পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামীগণ তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো দা, কাটারি, লোহার রডসহ অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বেআইনিভাবে বাদীর গতিরোধ করে ১নং আসামী হুকুম দিয়া বলে যে, শালাকে আজ জীবনে শেষ করে দে, আমাদের কাজে বাধা ও আমাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার ও প্রতিবাদ করার সাধ মিটিয়ে দে, শালাকে আজ তুলে নিয়ে চল, হুকুম পাওয়ার সাথে সাথে অন্যান্য আসামীরা বাদীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেদমভাবে প্রহার করে অপহরণপূর্বক হত্যার উদ্দেশ্যে আমাকে একটি মোটর বাইকে জোরপূর্বক তুলে তাদের আস্তানায় নিয়ে আসে। এবং ১নং আসামী বলে যে, শালা এক লক্ষ টাকা চাঁদা না দিলে তোকে গুলি করে হত্যা করব। ২ ও ৮নং আসামী গলায় গামছা পেঁচিয়ে বাদীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করতে চেষ্টা করে। বাদীর স্ত্রী অর্থাৎ ২নং সাক্ষী তাদের আস্তানায় গিয়ে বাদীকে ছেড়ে দিতে বলিলে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ সহ হত্যার হুমকি দেন।
এস, এম বাহারুল ইসলাম গত বুধবার (২৭ নভেম্বর) মালয়েশিয়া পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকার হজরত শাহজালাল অন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেসন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে । পরে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে পাইকগাছা থানায় আনা হয়। পাইকগাছার আগড়ঘাটা এলাকায় ট্রলারে হামলার অভিযোগে গত ২৬ আগষ্ট ফসিয়ার রহমান নামে এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। ঐ মামলায় তাকে গ্রেপ্তারপূর্বক আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া তার হাতে লাঞ্ছিত হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, অধ্যক্ষ, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তি সহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ।