শিরোনাম:
পাইকগাছা, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
শনিবার ● ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » পরিবেশ » পাখিদের নিরাপদ প্রজনন ও অভয়ারণ্য গড়ে তুলতে গাছে গাছে বসানো হচ্ছে কৃত্রিম বাসা
প্রথম পাতা » পরিবেশ » পাখিদের নিরাপদ প্রজনন ও অভয়ারণ্য গড়ে তুলতে গাছে গাছে বসানো হচ্ছে কৃত্রিম বাসা
৩৫ বার পঠিত
শনিবার ● ৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পাখিদের নিরাপদ প্রজনন ও অভয়ারণ্য গড়ে তুলতে গাছে গাছে বসানো হচ্ছে কৃত্রিম বাসা

 --- প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছাঃ   পাখির জন্য নিরাপদ প্রজনন ও অভয়ারণ্য গড়ে তুলতে গাছে গাছে বাঁধা হচ্ছে কাঠ, বাঁশ ও মাটির পাত্র। পাইকগাছার পরিবেশবাদী সংগঠণ বনবিবি পাখিদের নিরাপদ আশ্রয় তৈরিতে গাছে গাছে কৃত্রিম বাসা স্থাপনের এক ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালন করেছে।
পাখিদের অবাধ বিচরণ, নিরাপদ আশ্রয় তৈরি ও বংশবৃদ্ধির জন্য গাছে গাছে মাটির হাঁড়ি, কাঠ-টিনের তৈরি বাসা ও বাঁশের তৈরি বাসা বসানো হয়েছে। এতে ঝড়, বৃষ্টি, রোদ থেকেও বাঁচবে পাখিরা। পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়, রক্ষা ও তাদের বংশবৃদ্ধির জন্য  উঁচু গাছগুলোতে আড়াই হাজার কৃত্রিম বাসা  বসানো হয়েছে। হাঁড়িগুলোতে ছোট ছোট ছিদ্র করে দেওয়া হয়েছে। এতে বৃষ্টির পানি ঢুকলেও নিচের ছিদ্রগুলো দিয়ে পড়ে যাবে। তাছাড়া হাঁড়ির দুই দিকে বড় দুটি মুখ রাখা হয়েছে। ফলে হাঁড়ির মধ্যে ঢুকতে ও বের হতে পাখিদের কোনো সমস্যা হবে না।

আমাদের দেশে বড় বড় গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় পাখিরা বাসা বাঁধার স্থান পাচ্ছে না। বড় বড় গাছ না থাকায় বাচ্চা দেওয়ার সময় পাখিরা দিশেহারা হয়ে যায়। তাই পাখি প্রজাতির প্রজননের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে মাটির হাঁড়ি লাগানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দেশীয় পাখির বংশ বিস্তার এবং আগের মতো পাখির কলরব ফিরিয়ে আনতে গাছে গাছে পাখিদের কৃত্রিম আবাসস্থল গড়ে দেওয়ার এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

পরিবেশবাদী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বনবিবি’র সভাপতি সাংবাদিক ও কলামিস্ট প্রকাশ ঘোষ বিধান বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিতে দারুণভাবে পরিবর্তিত হয়ে গেছে জলবায়ু, আবহাওয়ায় এসেছে পরিবর্তন। বিভিন্ন মৌসুমী বৈশিষ্ট্যের তারতম্য ঘটেছে। অসময়ে অতিবৃষ্টি, খরা ও ঝড়ের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাখির প্রধান প্রজনন মৌসুম ফেব্রুয়ারি - জুন পর্যন্ত সময়ে অতি বৃষ্টি ও ঝড়ের মত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে পাখিদের বাসা বাঁধা, ডিমের সুরক্ষা ও সংখ্যা বৃদ্ধির কার্যক্রম। আর তাই অনেক সাধারণ পাখি প্রজননের সুযোগ না পেয়ে বংশ হ্রাসের কারণে বিপন্ন হয়ে পড়েছে। অথচ পাখিদের প্রজাতি বৈচিত্র ও সংখ্যার সাম্যাবস্থা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। তাই পাখি সংরক্ষণে পরিবর্তিত পরিবেশে বাসা বাঁধার সুযোগ সৃষ্টি করে সংখ্যা বৃদ্ধির উদ্যোগ খুবই দরকার।

পাখিদের নিরাপদ অভয়াশ্রম গড়ে তোলার লক্ষ্যে পরিবেশবাদী বনবিবি সংগঠনের উদ্যোগে ২০১৬ সাল থেকে পাখিদের নিরাপদ কৃত্রিম আবাসস্থল গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সে সময় গাছে গাছে মাটির হাঁড়ি লাগানো হয়। কিন্তু দেখা যায়, ঝড়ের সময় কিছু গাছের ডাল ভেঙ্গে ও ডালে ডালে চাপ লেগে হাঁড়ি ভেঙে পাখির ছানাগুলো নিচে পড়ে মারা যাচ্ছে। তাই মাটির পাত্রের পাশাপাশি বাঁশ ও কাঠ দিযে তৈরি করা বাসা গাছে বাধা হচ্ছে, যাতে এগুলো নিরাপদ থাকে, ভেঙে না যায়। এই বাসাগুলো বসানোর মাধ্যমে পাখিরা আরও নিরাপদ আবাসস্থল পাবে। এসব মাটির হাঁড়ি ঝড়-বৃষ্টি ও শীত থেকে সুরক্ষিত থাকার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও প্রজননে পাখিদের সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ উদ্যোগ ধীরে ধীরে জেলা-উপজেলায় ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। খুলনা জেলা সদর, ডুমরিয়া, পাইকগাছা, কয়রা ও তালা উপজেলার বিভিন্ন গাছে পাখির জন্য বাসা স্থাপন করা হয়েছে।

  পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র রক্ষায় পাখিদের ভূমিকা অপরিসিম। পরিবেশবান্ধব এই প্রাণীরা মানুষের সুস্থ্য জীবনধারাকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করে। পাখি শিকার বন্ধে প্রশাসন সব সময় তৎপর রয়েছে এবং পাখি শিকারীর বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পাখি শিকার বন্ধে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য সচেতন এলাকাবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
পাখিরা প্রকৃতির অপরিহার্য সৌন্দর্য এবং  আমাদের পরিবেশের অপরিহার্য অংশ। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখির গুরুত্ব অপরিসিম এবং জীববৈচিত্র্যের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। জীববৈচিত্র্য রক্ষার দায়িত্ব সবার। জীববৈচিত্র্য ভালো থাকলে আমাদের পরিবেশ ভালো থাকবে। আমরাও ভালো থাকবো। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখিদের নিরাপদ ঘর ও বসবাস নিশ্চিত করা সকলের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)