বুধবার ● ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » প্রকৃতি থেকে বিলুপ্তির পথে উপকারী রিফিউজি লতা
প্রকৃতি থেকে বিলুপ্তির পথে উপকারী রিফিউজি লতা
রিফিউজি ঔষধি লতাগুল্ম। আমাদের গ্রাম-গঞ্জের পথে জঙ্গলে ফুঁটে থাকে নানা প্রজাতির আমাদের গ্রাম-গঞ্জে, পথে-ঘাটে, জলে-জঙ্গলে ফুঁটে থাকে নানা প্রজাতিরলতা ও বুনো ফুল। তেমন ই একটি গুল্ম হল রিফিউজি লতা। এ এলাকায় মানান্তার লতা নামে পরিচিত। অতি পরিচিত এই লতার বহু নাম। একে জার্মানি লতা, বিকাশ লতা, গ্যাষ্ট্রিক লতা, আসাম লতা ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। লতা খুব দ্রুত বর্ধনশীল। গ্রামের বিভিন্ন বনজঙ্গল,গাছ গাছালি পূর্ণ বন এলাকায় এ লতা দেখা যায়। এটি এমনি এমনিই যেখানে সেখানে জন্মায়। গ্রামের রাস্তার পাশে ছোট ছোট গাছের উপর এ লতা গাছ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতে দেখা যায়। পথে ঘাটে এগুলা অনেক অবহেলা ও অযত্নে জন্মালেও এগুলার সৌন্দর্য ও প্রকৃতিতে এদের অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই।
১৯৬০ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের পরেই এই লতাটি বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র নজরে আসে। বাংলাদেশ পেরিয়ে ভারতের আসামেও এটি দেখা যায়। তবে চট্টগ্রামেই এর সর্বাধিক মাত্রায় বিস্তার ঘটে। রিফিউজি শব্দটি ইংরেজি যার সহজ বাংলা প্রত্যাখ্যাত। এই লতাটি প্রত্যাখ্যাত হয়ে বাংলার আবহাওয়ার কাঁধে চড়ে, অন্য গাছের অন্যতম শত্রু হিসেবে ভূমিকা রাখে। এ কারণেই তাকে রিফিউজি লতা বলা হয়।
রিফিউজি লতা, বিকাশ লতা বা মিকানিয়া হচ্ছে একটি গণ যারা কয়েকশ প্রকার সপুস্পক লতা জাতীয় উদ্ভিদ। মিকানিয়া গণভুক্ত প্রায় ৪৫০ ধরনের প্রজাতি রয়েছে। এটি অতি বৃদ্ধিপ্রবল জাতীয় একটি লতাগুল্ম। এর আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকা। এটি অতি দ্রুত বর্ধনশীল বলে ইংরেজিতে একে মাইল-আ-মিনিট নামে ডাকা হয়।
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে রিফুজি লতার অসামান্য ঔষধি গুণাগুণ রয়েছে। উপকারী এই লতা ও তার পাতা প্রাচীনকাল থেকেই মানবদেহের নানা রোগ নিরাময়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে এসেছে। লতাটি বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, ফলে দেশ ভেদে তার ব্যবহারও ভিন্ন। কাটা ক্ষত, রক্তপড়া বন্ধ, গ্যাস্ট্রিক আলসার, ডায়রিয়া, ঘা, দাদ, চুলকানি, খোস-পাঁচড়া, অ্যাকজিমা, সিফিলিস, সাপের কামড়ে বিষক্রিয়া, বিভিন্ন বিষাক্ত পোকার কামড়, পাকস্থলীর প্রদাহ, ম্যালেরিয়া জ্বর, মাথাব্যথা ও ঠান্ডা নিবারণে এবং ডায়াবেটিস রোধ ও যকৃতের সুরক্ষায় এটি ব্যবহৃত হয়। রক্তপাত বন্ধে বেশ কার্যকর এর পাতা ও গাছের রস। ম্যালেরিয়া জ্বরের প্রকোপ কমাতে এর পাতা সিদ্ধ করে পান করা হয়। এটি চামড়াকে ফাঙ্গাস মুক্ত রাখে। জন্ডিসের জন্য এটা সেবন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও আরো অগণিত কাজে মানুষ ব্যবহার করে থাকে।