বুধবার ● ৮ জানুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » লাইফস্টাইল » ৩০ বছর পিঠা বিক্রিতে জীবন চলে শওকত আলীর
৩০ বছর পিঠা বিক্রিতে জীবন চলে শওকত আলীর
শাহীন আলম তুহিন ,মাগুরা থেকে : পৌষের শুরুতে শীতের পিঠার অনেক কদর। এ সময় গ্রামের ঘরে ঘরে নতুন ধানের চাল দিয়ে মহিলারা নানা ধরণের শীতের পিঠা তৈরি করে। ভাপা পিঠা,কুলসিপিঠা,রসের পিঠা,পাটিসাপটা,চিতই পিঠা অন্যতম। গ্রামের পাশাপাশি শহরেও রাস্তার পাশে অনেক দরিদ্র মহিলারা এ পেশার সাথে বেশি জড়িত। মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষের দেখা যায় খুবই কম। মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী এলাকার শওকত আলী ৩০ বছর ধরে রাস্তার পাশে বসে শীতের বিভিন্ন পিঠা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। বছরের ৪ মাস চলে তার পিঠা বিক্রি। ভাপা পিঠা,রস পিঠা ও চিতই পিঠা বেশি চলে তার। তার দোকানে পিঠার কারিগর ২ জন ও শ্রমিক ২ জনও পুরুষ। ইতিমধ্যে শহরের নোমানী ময়দান এলাকায় তার পিঠার দোকান। সেখানে বিকাল ৪টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষেরা তার দোকানে ভিড় করে পিঠা খেতে। আবার অনেক সরকারি কর্মকর্তাসহ অনেক বেসরকারি অফিসের মানুষ তার দোকানে আসে পিঠা খেতে । পিঠা কারিগর শওকত আলী বলেন,আমি ৩০ বছর এ পেশার সাথে জড়িত । বছরের ৪ মাস এ পেশায় থাকি আর বাকী ৮ মাস অন্য পেশায় নিয়োজিত থাকি। বরাবরই আমার পিঠার কদর বেশি। শহরের নোমানী ময়দানে বিকাল ৪ টায় শুরু হয় আমার পিঠা বিক্রির কাজ। চলে রাত ১১ টা পর্যন্ত। বর্তমানে শীতে বেশি থাকায় চিতই পিঠা ও রসের পিঠার চাহিদা বেড়েছে। চিতই পিঠার সাথে,সরিষা বাটা,কচুশাগ,পালং শাগ ঘোটা,ধুনিয়া বাটা দেওয়া হয় খেতে। প্রতিদিন নারী-পুরুষসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ আসে আমার দোকানে। চিতই পিঠা প্রতি ৩০ টাকা ,ভাপা পিঠা প্রতি পিচ ১০ টাকা ও রসের পিঠা ৫ খানা ৫০ টাকা। বর্তমানে খেজুরের রস সংকট থাকার কারণে ভালো পাটালি দিয়ে রস তৈরি করে পিঠা ভেজাতে হয়। ভালো পাটালি ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা । তাই রসের ফিটা তৈরিতে অনেক খরচ হয়। প্রতিদিন আমার ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা আয় হয়। দোকানে মোট শ্যমিক ৪ জন। তাদের খরচ বাদে ২ হাজার টাকা উপার্জন হয়। আবার কোন কমও হয়। আমার ২ ছেলে ১ মেয়ে। এভাবে চলে যাচ্ছে সংসার। পিঠা খেতে আসা শিক্ষক আব্দুল আজিজ বলেন,শওকত ভাইয়ের পিঠার খুবই স্বাদ। তার চিতই পিঠা খেতে আমি বার বার আসি। পাশাপাশি ভাপা পিঠাও খায়। মাঝে মাঝে আমি তার তৈরি পিঠা বাড়িতেও নিয়ে যায়। গৃহিনী নাজমুন নাহার বলেন,বাড়ীতে আমরা পিঠা তৈরি করি কিন্তু তেমন ভালো হয় না। তাই মাঝে মাঝে শওকত ভাইয়ের পিঠা খেতে আসি। আমার পরিবারের সবাই মিলে তার দোকানে এসে সব ধরণের পিঠা খায়।