বুধবার ● ৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » রাজনীতি » গণপরিষদের মিছিল-সমাবেশ
গণপরিষদের মিছিল-সমাবেশ
মাগুরা প্রতিনিধি ; জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যা ও গুম, খুন, উন্নয়নের নামে লুটপাট, অর্থ পাচারসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের দ্রুত বিচার ও রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে মাগুরায় মিছিল সমাবেশ ও স্মারকলিপি দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। বুধবার দুপুরে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। সংগঠনের মাগুরা জেলা সভাপতি মোঃ বরকত আলীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি ওবায়দুল্লাহ বিন হাফিজারসহ অন্যরা।
বর্তমান অন্তবর্তী সরকারে থাকা ছাত্র প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বক্তারা বলেন আপনারা বয়সে ছোট হলেও দায়িত্ব নিয়েছেন অনেক বড়। সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে না পারলে আপনাদেরও বিচারের আওতায় আসতে হবে। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে একটি স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে পাঠানো হয়। তারা বলেন, ছাত্র-নাগরিকদের জুলাই ৩৬’ গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখে পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা তার প্রভু রাষ্ট্র ভারতে পালিয়ে গিয়েও অডিও রেকর্ড প্রকাশের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করতে একেরপর এক উস্কানি প্রদান করছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিয়ে গণহত্যাকারী আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা সারাদেশে গুপ্ত হামলা, ঝটিকা মিছিল ও কথিত গণসংযোগ করেছে। এমনকি গত ০২/০২/২৫ ইং তারিখে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে আওয়ামী দুর্বৃত্তরা পুলিশের গাড়ি থেকে পাবনার সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাবকে ছিনিয়ে নিয়েছে। ছাত্র-নাগরিক গণঅভ্যুত্থানের সরকারকে উৎখাত করতে দেশব্যাপী নাশকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সারাদেশে হরতাল-অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে তারা বলেন, সরকারি প্রথম ধাপের তালিকায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ৮২৬ জন শহিদ ও ১১৩০৬ জনের গুরুতর আহত হওয়ার তথ্য উঠে এসেছে। প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশী বলে আন্দোলনকারী নেতৃবৃন্দ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা মনে করে। ছাত্র-জনতা-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ইতিহাসের বর্বরোচিত হামলা, হত্যাযজ্ঞ চালিয়েও অপরাধীরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে, গ্রেফতারকৃতরা জামিনে মুক্ত হচ্ছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ইতোমধ্যে ৫৭২ জন আসামি জামিনে মুক্তি পেয়েছে। গত ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণহত্যাকারী আওয়ামী দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার ও বিচারের বিষয়ে যতোটা কঠোর হওয়া দরকার ছিলো, আমাদের কাছে তার বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগের ও শঙ্কার।
অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সহস্রাধিক মানুষ হত্যা , হাজার হাজার মানুষকে পঙ্গু করা, রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লেলিয়ে চালানো ইতিহাসের এ জঘণ্যতম গণহত্যার সঠিক বিচার না হলে ভবিষ্যতেও এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা থাকে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে রাজপথের আপোষহীন নেতৃত্ব ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অংশীজন হিসেবে আমরা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধসহ একদলীয় ফাসিস্ট শাসন কায়েমে বিগত ১৬ বছরের সকল গুম, খুন, উন্নয়নের নামে লুটপাট ও অর্থ পাচারের সাথে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় এনে বিচার নিষ্পত্তি ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তি ও সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান তারা।
লিখিত স্মারকলিপিতে পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে - (১)আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিগত ১৬ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আহত, ক্ষতিগ্রস্ত ও শহীদদের সঠিক তালিকা তৈরি, ক্ষতিপূরণ এবং যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। (২)জুলাই গণহত্যায় জড়িত বিদেশে পলাতক গণহত্যার মাস্টারমাউন্ড শেখ হাসিনাসহ সকলকে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা এবং বিচারিক প্রক্রিয়ায় গণহত্যার সাথে জড়িতদের রাজনীতি নিষিদ্ধের পদক্ষেপ গ্রহণ করা। (৩)ফ্যাসিবাদের আমলে উন্নয়নের নামে লুটপাট, অর্থ পাচারে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচার নিশ্চিত করা। (৪)জন-আকাঙ্ক্ষার নতুন বাংলাদেশ বির্নিমাণে রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে কার্যকর সংস্কার নিশ্চিতে অভ্যুত্থানের অংশীজনদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুর্নগঠন ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা। ও (৫) বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার রেজিমে সংগঠিত গুম-খুন ও ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ভূয়া নির্বাচনের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা। সময় অন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওবায়দুল্লাহ বিন হাফিজার, জেলা গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম,সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিল জামান, যুব পরিষদ পরিষদ মাগুরা সদর উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ রাজিব মোল্লাসহ অন্যরা।