শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১

SW News24
বৃহস্পতিবার ● ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
প্রথম পাতা » কৃষি » পাইকগাছায় তরমুজ চা‌ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা
প্রথম পাতা » কৃষি » পাইকগাছায় তরমুজ চা‌ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা
৩৯ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পাইকগাছায় তরমুজ চা‌ষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা

 --- খুলনার উপকূলীয় অঞ্চল পাইকগাছায় তরমুজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। কেউ বীজতলা প্রস্তুত করছেন, কেউ বীজ রোপণ করছেন, আবার কেউ কেউ পানি সেচ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাদের যেন দম ফেলার সময় নেই। তবে এ বছর সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধিতে চিন্তিত তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এ বছর তরমুজের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ১৪শ ৪৫ হেক্টর। এর মধ্যে ১৭ শত হেক্টর আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। কৃষকের মধ্যে যে উদ্দেপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে। গত বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হাওয়ায় এবছর তরমুজ চাষে বেশি আগ্রহ নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে তরমুজ চাষ করা হচ্ছে। ব্যাপক হারে রিজেন-২, বিগ পাঞ্জাব, আস্থা, আস্থা ১০০, ড্রাগন, সুইট ড্রাগন, পাকিজা, বীগ ফ্যামিলি, কালো মানিক সহ বিভিন্ন জাতের তরমুজ বীজ বপণ করা হয়েছে। কৃষকরা তরমুজের বাম্পার ফলনের আশা করছেন।

পাইকগাছা কৃষি কর্মকর্তার দিক নির্দেশনায় এবং কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা এসএম মনিরুল হুদা, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুমিত দেবনাথ, ফয়সাল আহমেদ, মোঃ সোহাগ হোসেন ও আকরাম হোসেন কৃষকদের পরামর্শ, আলোচনা সভা ও বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। তরমুজ লাভজনক চাষ হওয়ায় উপজেলার দেলুটি ও গড়ইখালী  ছাড়াও অন্যান্য ইউনিয়নের চাষিরাও ঝুঁকছেন। তরমুজের জীবনকাল ৯০-১২০ দিন। তবে ফল ধরা শুরু হয় ৬০ দিন পর থেকে। এই উপজেলায় ব্যাপকহারে ড্রাগন, পাকিজা, বীগ ফ্যামিলি ও কালো মানিক জাতের তরমুজ চাষ হচ্ছে।

উপকূলের লবণ পানি এলাকা গড়ুইখালী ও দেলুটি ইউনিয়ন। গড়ুইখালী ইউনিয়নের ঘোষখালী নদী ও দেলুটি ইউনিয়নের ডিহিবুড়া খাল খননে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে তরমুজের চাষ করা হচ্ছে। তরমুজে ভালো ফলন হওয়ায় এ বছর বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। যে কারণে তরমুজ আবাদ নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা। দেলুটির উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুমিত দেবনাথ, ফয়সাল জানান, এ উপজেলায় আমন ধান কাটতে দেরি হওয়ায় তরমুজ চাষাবাদ একটু দেরিতে শুরু হয়েছে। আগামি দুই সপ্তাহের মধ্যে বাকি জমিতে তরমুজের আবাদ সমাপন্ন হবে। গড়ইখালীর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আকরাম হোসেন ও মোঃ সোহাগ হোসেন জানান, গতবারের তুলনায় এবছর দ্বিগুণ বেশি জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। বিঘা প্রতি খরচ ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আর বিঘা প্রতি বিক্রি হয় ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা। সঠিকভাবে চাষাবাদ করলে হেক্টর প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ মেট্রিকটন তরমুজ উৎপাদন করা সম্ভাব বলে জানান সংশ্লিষ্টরা ।

দেলুটি ইউনিয়নের দারুণমল্লিক গ্রামের চাষি বরুণ মন্ডল বলেন, গত বছর ১১ বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ করি। বাম্পার ফলন হওয়ায় ২০ বিঘা জমিতে আবাদ করছি। কেবল ছোট ছোট পাতা বের হয়েছে। ফুলবাড়ির প্রকাশ হালদার বলেন, আমি প্রতিবছর তরমুজ চাষ করি। এ বছর ২৫ বিঘা জমিতে তরমুজ লাগিয়েছি, কেবল ছোট ছোট পাতা বের হয়েছে। এরকম কালিনগরে কৃষক পরিতোষ, সেবনেরবেড় হিরেন্ময় ও গোপীপাগলা গ্রামের প্রহ্লাদ, গেউয়াবুনিয়া প্রসেনজিৎ জানান, গত বছরের তুলনায় এবার খরচ অনেক বেশি পড়তেছে শ্রমিকের দাম ও জিনিসপএের দাম বেশি। তাছাড়া চাষাবাদে পাওয়ারটিলার এর তীব্র সংকটে চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। গড়ইখালী ইউপির দক্ষিণ আমেরপুর গ্রামের সনত সরদার বলেন, বাম্পার ফলনের আশায় ধার দেনা করে এ বছর ৩৬ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। এলাকার মিল্টন সানা, অনিমেষ মন্ডল, বাইনবাড়িয়ার বীরেন্দ্রনাথ, গোবিন্দ, উত্তম, শান্তার শফিকুল ইসলাম, কুমখালী দিলীপ ঢালী ও ব্যাসদেব কবিরাজ, হোগলারচক গ্রামের মলয়, কানাখালীর জ্যোতিকা মন্ডল তরমুজ চাষ করেছেন। তরমুজ চাষী বিনয় বলেন, পাইকগাছা এলাকার তরমুজ খুব মিষ্টি। বাজারে চাহিদাও ব্যাপক। এবার ব্যাপক হারে তরমুজের চাষ করা হয়েছে। তারা দুই বিঘা থেকে বারো-তেরো বিঘা জমিতে এবার তরমুজের বীজ বপন করেছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন জানান, তরমুজ একটি লাভজনক ফসল। গতবছর তরমুজের বাম্পার ফলন হওয়ায় এবছর   লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবছর তরমুজের বাম্পার ফলন হবে।কৃষি অফিস সব সময় তাদের পাশে আছে। উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ দিন রাত পরিশ্রম করে কৃষকদের মাঠে গিয়ে পরমর্শ দিচ্ছেন।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)