শিরোনাম:
পাইকগাছা, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১

SW News24
রবিবার ● ৯ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » সৌন্দর্য ও ভেষজ গুণসমৃদ্ধ বাসক
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » সৌন্দর্য ও ভেষজ গুণসমৃদ্ধ বাসক
২২ বার পঠিত
রবিবার ● ৯ মার্চ ২০২৫
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

সৌন্দর্য ও ভেষজ গুণসমৃদ্ধ বাসক

 --- প্রকাশ ঘোষ বিধান

বাসক ছোট আকৃতির চিরহরিৎ গুল্মজাতীয় ভেষজ উদ্ভিদ। বাসক ভারত উপমহাদেশীয় ভেষজ উদ্ভিদ। আদি নিবাস আফ্রিকা ও এশিয়ার উষ্ণ অঞ্চল। ভারতীয় উপমহাদেশের প্রায় সর্বত্র এটি জন্মে। আর্দ্র, সমতলভূমিতে এটি বেশি জন্মে। লোকালয়ের কাছেই জন্মে বেশি।  ক্ষোপ জাতীয় বাসক গাছ প্রায় ৫/৬ ফুট উঁচু হয়। অধিক শাখা-প্রশাখাযুক্ত এই উদ্ভিদের কাণ্ড ও শাখা-প্রশাখা খুব বেশি শক্ত নয়। পাতা আকারে বড় ও ঘন, রং সবুজ, গন্ধযুক্ত, দেখতে ভল্লাকার, অগ্রভাগ সুচালো, শিরা-উপশিরা স্পষ্ট।

বাসকের ফুল ফোটে বসন্তকালে। গাছের শাখা-প্রশাখার অগ্রভাগে থোকায় থোকায় ফুল ঘন, ছোট স্পাইকের ওপর ফোটে। ছোট এই ফুলগুলোর নমনীয় কোমল পাপড়ির রং সাদার সঙ্গে বেগুনি মেশানো। এই ফুলের মাঝে লম্বা পুংদণ্ড থাকে। ফুল গন্ধহীন হলেও সবুজ পাতার মাঝে থোকায় থোকায় থাকা ফুলগুলো দেখতে বেশ মনোরম। ফুল শেষে ফলে পরিণত হয়। ফল সুপারির আকৃতির এবং এর ভেতরে থাকে বীজ। বীজ ও ডাল কাটিংয়ের মাধ্যমে এর বংশবিস্তার করা যায়।

প্রায় সব ধরনের মাটি এবং উঁচু থেকে মাঝারি উঁচু ও সমতল ভূমি বাসক রোপণের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া আর্দ্র ও ভেজা মাটি এবং হালকা ছায়া থেকে ছায়াযুক্ত স্থানেও বাসক জন্মে। বাসক বেশ কষ্টসহিষ্ণু উদ্ভিদ। পরিবেশের প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম।

ভেষজ গুণে গুণান্বিত বাসকের মূল, পাতা, ফুল ও ছালে রয়েছে নানা রকম ঔষধি গুণ। তাজা ও শুকনো উভয় পাতাই ভেষজ গুণসম্পন্ন।  বাসকের পাতায় ভার্সিনিন নামের ক্ষারীয় পদার্থ এবং তেল থাকে। শ্বাসনালীর লালাগ্রন্থিকে সক্রিয় করে বলে বাসক শ্লেষ্মানাশক হিসেবে প্রসিদ্ধ। বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ শ্লেষ্মা তরল করে নির্গমে সুবিধা করে দেয় বলে সর্দি, কাশি এবং শ্বাসনালীর প্রদাহমূলক ব্যাধিতে বিশেষ উপকারী। বাসক পাতার রস মাথায় লাগালে উকুন থাকলে চলে যায়। গায়ের ঘামের গন্ধও দূর করতে এই রস সহায়ক। সর্দি-কাশি, কফ, হাঁপানি, কৃমি, শ্বাসকষ্টজনিত রোগ, খিঁচুনি, প্রস্রাবের জ্বালা-যন্ত্রণা এবং চুলকানি ও চামড়ার দাদ সারাতে বাসক পাতা কাজে লাগে। এ ছাড়া বাসক পাতায়  ক্ষারীয় পদার্থ থাকায় ছত্রাক জন্মায় না, সহজে পচন ধরে না ও পোকার আক্রমণ হয় না। তাই ফল প্যাকিং ও সংরক্ষণের কাজে বাসক পাতা ব্যবহার করা হয়।

পাতা দিয়ে ফসলি জমির জন্য সবুজ সার এবং পাতার রস দিয়ে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক তৈরি করা যায়, যা জৈব কৃষিতে কাজে লাগে। বাসক গাছ ভূমি ক্ষয় রোধে সহায়ক। তাই তো পুকুরপাড়, রাস্তার ধার, খেতের আইল, বাঁধের ধার, পতিত জমিতে বাসক দেখতে পাওয়া যায়।

লেখক; সাংবাদিক ও কলামিস্ট





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)