

সোমবার ● ২৪ মার্চ ২০২৫
প্রথম পাতা » বিশেষ সংবাদ » পাইকগাছায় সড়কের মোড়গুলি ভেঙ্গে বিপর্যস্ত ; ধুলা ও দূষণে জনজীবন দুর্ভোগে
পাইকগাছায় সড়কের মোড়গুলি ভেঙ্গে বিপর্যস্ত ; ধুলা ও দূষণে জনজীবন দুর্ভোগে
প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছা ; খুলনার বেতগ্রাম- আঠার মাইল সড়কের পাইকগাছা জিরো পয়েন্ট হতে কপিলমুনি বাজার পর্যন্ত ১০ থেকে ১২টি মোড় সংস্কার না করায় রাস্তা ভেঙ্গে খানা-খন্দ ও ধুলোর ভরা সড়কে পরিণত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কার না হওয়ায় রাস্তার ইট, খোয়া, পাথর, উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কার্পেটিং উঠে এবড়ো-থেবড়ো হয়ে পড়েছে। রাস্তার গর্তের মাটি, ইটের গুড়ো, ধুলা-বালিতে ধুলোময় হয়ে পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে প্রতিদিন ঢাকাগামী পরিবহন, বাস-ট্রাক, ছোট যানবাহনসহ অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। প্রতিনিয়ত যানবাহন চলাচল করায় সারাদিন সড়কের ধুলো উড়ছে। সড়কের ধুলোয় পথচারী, যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ দূর্ভোগে শিকার হচ্ছে। সড়কের দুপাশের বাড়ী ঘর, দোকানপাট, সবুজ বৃক্ষ, ফসল ও সবজী ক্ষেত ধুলোয় বর্ণহীন হয়ে পড়েছে। একই সঙ্গে হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য।
জানা গেছে, বাক সরলী করণের জন্য বেতগ্রাম- আঠার মাইল সড়কের পাইকগাছা জিরো পয়েন্ট হতে কপিলমুনি বাজার পর্যন্ত ১০ থেকে ১২টি মোড়ের প্রায় তিন কিলোমিটার সড়ক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার হয়নি। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় গর্তে পড়ে যানবাহনের এস্কেল ও পাতি ভেঙ্গে দাড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া ভাঙ্গাচুড়া সড়কে যানবাহন চলাচলের কোন শৃংখলা নেই। যে যেভাবে পারছে সে সেভাবেই চলছে। এতে করে সড়কে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা বাড়ছে। চলন্ত যানবাহনের পিছনের উড়ান্ত ধুলোয় পথচারীরা দিশাহারা হয়ে পড়ছে। ধুলোর শ্বাস প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। এ জন্য অনেকেই আগে থেকে মুখে মাক্স ব্যবহার করছে।
ধুলা আর দূষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিন দিন ক্রমাগত বেড়েই চলেছে এই দূষণ। অতিরিক্ত ধুলাবালি বাতাসে যোগ হয়ে মাঝে-মধ্যেই ধোঁয়ায়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে পুরো এলাকা। ধুলা এমনভাবে বাড়ছে যে শ্বাস-প্রশ্বাসে বিশুদ্ধ বাতাস নেয়ারও সুযোগ নেই। প্রতিনিয়ত ধুলায় মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন স্থানীয়রাসহ যানবাহনে চলাচলকারীরা। এতে অনেকেই হাঁচি-কাশিসহ ব্রঙ্কাইটিসের মতো নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে অ্যাজমা, এলার্জি, কাশিসহ শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। হাসপাতাল, ক্লিনিক ও চিকিৎসকদের চেম্বারে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। সড়কের ধুলোয় স্থানীয় অনেকেই শ্বাসকষ্ট সহ নানা অসুখে ভুগছেন। এমন দূষণে চরম হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য।
যানবাহনের চালকরা ঝুকি নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। ভাঙ্গা সড়কে প্রতিদিন ছোট বড় দূর্ঘটনা ঘটছে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় গাড়ির চালক ও স্থানীয় অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এখন ধুলো বালিতে সড়কে চলাচলে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, আর সামনে বর্ষাকাল ভাঙ্গাচুরা সড়কের কাদা পানির বিড়ম্বনা শুরু হবে।
গোলাবাটি সড়ক সংলগ্ন বাড়ীর গৃহিনী রহিমা আক্তার বলেন, রান্না ঘরে কাপড় দিয়ে আলাদা পর্দা লাগিয়ে ধুলো বালি থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা করেও তা সম্ভব হচ্ছে না। ঘরের বিছনা পত্র, আসবাব পত্র দিনে তিন-চার বার পরিষ্কার করতে হয়ে, একদিন পরিষ্কার না করলে দেখে মনে হয় কয়েক বছরের পুরোনো। অধ্যাপক আজিজুর রহমান বলেন, বাসা থেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পরে বের হই। কর্মস্থলে পৌছানোর আগেই ধুলোবালিতে পোশাক বিবর্ণ হয়ে যায়। চোখে মুখে ধুলো বালি লেগে থাকে।
এ বিষয় খুলনা জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগে নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ তানিমুল হক বলেন, ঠিকাদার বেতগ্রাম- আঠার মাইল সড়কের মোড়ের ভাঙ্গা স্থান সংস্কার করার জন্য ভাঙ্গা স্থানের পরিমাপসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। ঈদের পরে রাস্তার সংস্কারের কাজ শুরু হবে।