

রবিবার ● ৬ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » আঞ্চলিক » পাইকগাছায় মিথ্যা মামলা করায় বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতে পুলিশের প্রসিকিউশন দাখিল
পাইকগাছায় মিথ্যা মামলা করায় বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতে পুলিশের প্রসিকিউশন দাখিল
খুলনার পাইকগাছায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মিথ্যা মামলা করায় পুলিশ বাদীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে ২১১ ধারায় আদালতে প্রসিকিউশন দিয়েছেন। আলোচিত জি,আর-৪৭/২৫ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজুর রহমান দীর্ঘ তদন্ত সম্পন্ন করে পাইকগাছার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফাইনাল রিপোর্টের পর গত ২৭ মার্চ বাদীর বিরুদ্ধে এ প্রতিবেদন দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুলিশের এ পদক্ষেপে এলাকায় মিথ্যা মামলার প্রবনতা কমবে এবং কেউ সাজানো মামলা করার সাহস পাবেনা। জানাগেছে, উপজেলার চাঁদখালীর হাসিমপুরে মাত্র ১২ শকত কৃষি জমি নিয়ে কাশেম সরদার ও প্রতিবেশী রজব আলী সরদারের পরিবার বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। গত ৫ আগস্টের পর আবুল কাশেমের দখল থেকে ১২ শতক ক্রয়কৃত জমি রজব-রুস্তম গংরা দখল করে ধান চাষ করলে দুইপক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে পাল্টা-পাল্টি মামলা করেন। সুত্র বলছেন, রজব-রুস্তম পরিবার প্রতিপক্ষ কাশেম-খায়রুল সরদার পরিবারের বিরুদ্ধে পাইকগাছা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিআর-১১৭/২৫ ও থানায় জিআর-১০/২৫ মামলা করেন। অপরদিকে আবুল কাশেমর পরিবার রজব-রুস্তম গংদের বিরুদ্ধে জি,আর-১১/২৫, ২৫/২৫, ৪৭/২৫, এমআর-৫৯/২৫ ও খ অঞ্চল খুলনা, নারী-শিশু আদালতে পিটিশন-১৬/৩৫ মামলা করেন। সবগুলো মামলা চলমান আছে এবং দুইপক্ষই আদালত থেকে জামিনে আছে। ইতোমধ্যে কাসেম সরদারের ছেলে নজরুল সরদারের দায়ের করা জিআর-৪৭/২৫ মামলার তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজুর রহমান আসামী রুস্তম সরদার ও তার ছেলে সাদ্দাম,রজব আলী ও তার হাসান, মান্নান গাজীসহ সব আসামীদের নাম উল্লেখ করে আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছেন। এ মামলাটি পুরোপুরি মিথ্যা হওয়ায় তদন্ত কর্মকর্তা গত ২৭ মার্চ বাদী নজরুল সরদারের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। পুলিশ প্রতিবেদন ও অনুসন্ধানে জানাগেছে, হাসিমপুরের আবুল কাশেমের ছেলে রবিউল ইসলাম ইতোপুর্বে স্থানীয় মান্নান গাজী বিরুদ্ধে আদালতে একটি সিআর-১২৪৭/২৪ মামলা করেন। এ মামলায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারী আদালতে নথি উপস্থাপন করে মান্নান গাজী জামিন প্রার্থনা করেন। নিয়োগকৃত আইনজীবীর মারফত খবর পেয়ে রবিউল তার ভাই নজরুল সরদার দুইজনে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ী থেকে পাইকগাছার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। দ্রুত বেগে আসার পথে বেলা ২ টার দিকে কৃষি কলেজ সংলগ্ন সড়কে ভ্যানের সঙ্গে মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনায় রবিউলের নাক ফেটে রক্তাক্ত জখম হয়। তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে এ দুর্ঘটনাকে পূজিঁ করে প্রতিপক্ষদের ঘায়েল করতে আহত রবিউলের ভাই নজরুল সরদার বাদী হয়ে প্রতিপক্ষ রজব-রুস্তম সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দন্ডবিধির৩৪২/১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬ (২)/ ১১৪ ধারায় থানায় জিআর-৪৭/২৫ মামলা করেন। এ মামলার আসামীরা অনেকেই জেল খেটেছেন। মামলা তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে তদন্তকালে এ ঘটনা সম্পর্কে কোন ব্যক্তি বা দোকানদার কোন তথ্য বা কিছুই বলতে পারেনি। আসামীদের মোবাইলের সিডিআর চেক করে দেখা যায় ঐদিন ঘটনার সময় আশপাশে কোথাও আসামীদের অবস্থান ছিলনা। তিনি আরোও বলেন, বাদী কাল্পনিক মামলা করেই ক্ষ্যান্ত। তদন্তকাজে কোন রকম সহয়তা করেনি। এমনকি আহত ভিটটিমের স্বাক্ষ্য ও হাসপাতালের ছাড়পত্রও দেয়নি। বার-বার তাগাদার পর শেষ মুর্হুতে মেডিকেল সার্টিফিকেট দেয়। এভাবেই শুধু হয়রানী করেছেন। এ মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবী এফএমএ আঃ রাজ্জাক জানান, দুর্ঘটনার আহত ব্যক্তিকে পূঁজি করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে সাজানো মামলার ঘটনাটি খুবই আলোচিত। ওসি মোঃ সবজেল হোসেন জানান, মিথ্যা মামলা করে কারোর হয়রানী হবার সুযোগ নেই।জিআর-৪৭/২৫ মামলায় বাদীর বিরুদ্ধে আদালতে প্রসিকিউশন দাখিল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।