

বৃহস্পতিবার ● ১০ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » আঞ্চলিক » ৮০০ মিটার রাস্তার জন্য ভোগান্তিতে দশ হাজার পৌরবাসী
৮০০ মিটার রাস্তার জন্য ভোগান্তিতে দশ হাজার পৌরবাসী
মাগুরা প্রতিনিধি : মাত্র ৮০০ মিটার রাস্তা ও ড্রেন তৈরি না হওয়ায় মাগুরা পৌরসভার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকায় অন্তত দশ হাজার মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। রাস্তাটি তৈরীর জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার লিখিত দরখাস্ত দেয়ার পরও আলোর মুখ দেখেনি তা। এর ফলে এলাকার কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রীর যাতায়াত বিরম্বনায় লেখাপড়ায় বিঘ্ন হচ্ছে।
মাগুরা শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দোয়ারপাড় মিজানুর রহমানের বাড়ি থেকে কারিকরপাড়া দুই দোয়ার মধ্যবর্তী এলাকা হয়ে শহিদুলের বাড়ি পর্যন্ত এ এলাকাটিতে ৫ শতাধিক পরিবারের বসতি। এছাড়া এই রাস্তাটি দিয়ে এতিমখানাপাড়া, শিবরামপুর, বাটিকাডাঙ্গা, পুলিশলাইন, মসলা গবেষণা, সাজিয়ারা সহ বিভিন্ন এলাকার অন্তত দশ হাজার বাসিন্দা বাইপাস সড়ক হিসেবে ব্যবহার করেন। শীতকালে রাস্তাটি দিয়ে সীমিত পরিসরে চলাচল করা গেলেও বর্ষাকালে এটি সম্পূর্ণ চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ সময় ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষকে শহরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অন্তত তিন কিলোমিটার বেশি পথ ঘুরতে হয়। এ এলাকার বাসিন্দা সরকারি কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জানান, দুই দোয়ার মধ্যবর্তী স্থানে জমি কিনে প্রায় ১০ বছর আগে ব্যাংক লোনের সহযোগিতায় তিনি একটি তিন তলা বাড়ি করেছেন। তখন থেকেই শুনে আসছেন বাড়ির সামনের রাস্তাটি পাকা হবে। কিন্তু আজও পর্যন্ত পাকা রাস্তার দেখা পাননি তিনি। রাস্তা না থাকায় তার বাড়িতে ভাড়াটে থাকতে চায় না। তিনি আরো বলেন, পৌরসভার সকল ধরনের ট্যাক্স উচ্চ হারে পরিশোধ করার পরেও তারা নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। বিশেষ করে বর্ষার সময় বাড়ির সামনে হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হয় । একই এলাকার বাসিন্দা মামুন হোসেন জানান, পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবে শহরের সবচেয়ে কাছাকাছি তারা বসবাস করেন। কিন্তু বাড়ির সামনের রাস্তা না থাকায় সারা বছর ধরে বিব্রতকর অবস্থায় থাকতে হয় । রিক্সা নিয়ে বাড়ি আসতে হলে প্রায় দ্বিগুণ পথ ঘুরে আসতে হয়। পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় অনেক রাস্তা তৈরি হলেও বহু বছর ধরে এ রাস্তাটি তৈরিতে কেউ উদ্যোগ নিচ্ছে না। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার পৌরসভায় লিখিতভাবে সবাই মিলে দরখাস্ত করে কোন ফল পাননি তারা। এজন্য বর্তমান পৌর প্রশাসকের কাছে রাস্তাটি তৈরিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি । কারিগর পাড়া এলাকার বাসিন্দা সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এই রাস্তা এবং রাস্তার সঙ্গে পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সামনেই বর্ষাকাল, আমরা আশঙ্কা করছি রাস্তা ও ড্রেন না হলে অন্যান্য বছরের মত এ বছরও ব্যাপক জলাবদ্ধতায় আমাদেরকে ভোগান্তিতে থাকতে হবে। এ রাস্তাটি তৈরি হলে অত্র এলাকার অন্তত দশ হাজার মানুষ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি বলেন, পৌরসভার অফিস থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার এর মধ্যে বসবাস করেও আমরা সকল ধরনের পৌর সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এ বঞ্চনার দ্রুত সমাধান দাবি করেন তিনি। মাগুরা দুধ মল্লিক বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী পূর্ণতা বাড়ই, দড়ি মাগুর ৯৯ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সারা হোসেন সহ একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বর্ষাকালে এই রাস্তাটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। ফলে তাদেরকে সহ এই এলাকার শত শত ছাত্র-ছাত্রীকে স্কুলে যেতে তিন কিলোমিটার বেশি ঘুরতে হয়। এতে তাদের অর্থ এবং সময় দুটোই নষ্ট হয়। তারা দ্রুত রাস্তাটি তৈরীর দাবি জানান।
এ প্রসঙ্গে মাগুরা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান বারী জানান, মাগুরা পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের জন্য ৪৫০ কোটি টাকার চাহিদাসহ একাধিক প্রোজেক্ট সরকারের কাছে জমা দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার কোনটি এখনও পাস হয়নি। ফলে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রজেক্টগুলো পাস হলে দ্রুতই রাস্তা ও ড্রেন সমূহের কার্যক্রম শুরু করা যাবে।