

শুক্রবার ● ১১ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » পাইকগাছায় আমের গুটিতে দুলছে চাষীর স্বপ্ন
পাইকগাছায় আমের গুটিতে দুলছে চাষীর স্বপ্ন
প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছাঃ অনাবৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ার দোলাচলে আমের গুটিতে দুলছে আমচাষীর স্বপ্ন। অনাবৃষ্টি আর প্রখর তাপে আমের গুটি ঝড়ে পড়ছে। তার সাথে কিছু কিছু আমের গুটি ফেটে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চাষীরা গাছে স্প্রে করে ঔষধ প্রয়োগ করা পরও গুটি ঝড়া ও ফাটা বন্ধ হচ্ছে না। এবছর আমের ফলন খুব ভালো হয়েছে।
আম গাছের মুকুলের ডগায় ডগায় দোল খাচ্ছে আমের গুটি। দিন দিন বড় হচ্ছে আমের গুটি। আশা-হতাশায় আমের গুটিতে দোল খাচ্ছে আম চাষীর স্বপ্ন। নানা জাতের আম, স্বাধ এবং রং-বেরঙের আমের রং লেগেছে চাষীর মনে। সোনালী এই স্বপ্ন পূরণে চাষীরা বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে মনে রয়েছে শংঙ্কা অনাবৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়া। বৈশাখের তান্ডব, বৃষ্টি, ঝূর্নিঝড় ও শীলাবৃষ্টি আমের শত্রু। প্রকৃতির সাথে মিতালী করে চাষীরা সোনালী স্বপ্ন বুকে ধারণ করে বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষীরা। তারপরও আমের বাজার পাবে কি না তা নিয়ে চাষীরা হতাশায় ভুগছেন।—
পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, উপজেলায় ৫৮৫ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে ছড়ানো ছিটানো আম গাছ রয়েছে। এ বছর আম বাগান থেকে ৭ হাজার ২০ মেট্রিকটন আমের ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এলাকায় স্থানীয় জাতের পাশাপাশি আম রূপালী, হিম সাগর, গোপাল ভোগ, বোম্বাই লতা, মল্লিকা, ল্যাংড়া, ফজলি সহ বিভিন্ন জাতের আম বাগানের সংখ্যা বেশি। আমের মুকুল থেকে প্রচুর পরিমান গুটি ধরেছে তাতেগাছের ডাল নুয়ে পড়েছে। তবে অনাবৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছে চাষীরা। গদাইপুর গ্রামের আম চাষী মোবারক ঢালী জানান, গাছে মুকুল আসার আগে বাগান পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল আসার পরে ও আগে দু’দফাসহ ছয় বার ছত্রাক নাশক স্প্রে করেছেন। তারপরও আমের গুটি ঝড়া ও ফাঁটা বন্ধ করতে পারেনি। কাজের জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না বিধায় বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে বাগান পরিচর্যা করায় অতিরিক্ত অর্থ খরচ হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন জানান, এ বছর আম গাছে প্রচুর পরিমাণ আমের গুটি ধরেছে। প্রকৃতিক বিপর্যায়ের উপর কারও কোন হাত থাকে না। অনাবৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ায় আমের গুটি ঝড়ে পড়ছে ও ফেঁটে যাচ্ছে। এ জন্য আমচাষীদের সকাল ও বিকালে আম গাছের গোড়া মাটি দিয়ে গোল করে বেধে পানি ঢালতে এবং গাছে পানি ও ঔষধ স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ থেকে কিছুটা হলেও আমের গুটি ঝড়া ও আম ফেঁটে যাওয়া বন্ধ হতে পারে। তবে বড় ধরণের কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে পাইকগাছার আম চাষীরা ভালো ফলন পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।