

রবিবার ● ১৩ এপ্রিল ২০২৫
প্রথম পাতা » কৃষি » পাইকগাছায় তরমুজের বাম্পার ফলন; বাজার মূল্য ১২০ কোটি টাকা
পাইকগাছায় তরমুজের বাম্পার ফলন; বাজার মূল্য ১২০ কোটি টাকা
খুলনার পাইকগাছায় তরমুজের বাম্পার ফলন কৃষকের মনে আনান্দের বন্যা বইছে। মাঠের পর মাঠ তরমুজের সবুজ খেত। সেই ক্ষেতে ধরেছে ছোট-বড় রঙ-বেংড়ের সবুজ তরমুজ। এ মৌসুমে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠ জুড়ে তরমুজ ক্ষেতে মহা-উৎসব চলছে। মৌসুমি শ্রমিকদেরও যেন দম ফেলার ফুরসত নেই। গাছ থেকে তরমুজ উঠানো,আড়ৎ ও পরিবহন কাজে ব্যাস্ত সময় পার করছে।
পাইকগাছা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। যা বিগত বছরের চেয়ে ৭শত হেক্টর বেশি। মোট আবাদের ১ হাজার ৯০ হেক্টর দেলুটিতে এবং ১ হাজার ৫০ হেক্টর গড়ইখালীতে। মাত্র ৩ মাসে বাজারজাত করা যায় এবং উৎপাদন খরচ ও তুলনামূলক অনেক কম হওয়ায় তরমুজ চাষ অধিক লাভজনক। বিঘা প্রতি গড়ে ৭০-৮০ হাজার টাকা দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। সে হিসাবে প্রায় ১২০ কোটি ৩৭ হাজার ৫০ টাকার তরমুজ বিক্রি হবে। তরমুজের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।
তরমুজ রবি মৌসুমের একটি সুস্বাদু একটি ফল। বাজারে এর চাহিদা ও রয়েছে বেশ। এর উৎপাদন খরচ অনেক কম এবং অল্প দিনেই বাজারজাত করা যায়। এজন্য অন্যান্য ফসলের তুলনায় তরমুজ চাষ অনেক বেশি লাভজনক। অল্প সময়ে কম বিনিয়োগের দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ লাভ করায় দিন দিন কৃষকদের তরমুজ চাষ ভরসা হয়ে উঠছে। উপকূলীয় পাইকগাছায় প্রতিবছর বাড়ছে তরমুজের আবাদ। কোটি কোটি টাকার উৎপাদিত তরমুজ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে।
সাদা সোনা খ্যাত বাগদা চিংড়ি অর্থনীতির চাকা দীর্ঘদিন সচল করে রেখেছে। রোগবালাইয়ের প্রকোপ বৃদ্ধিসহ নানা কারণে চিংড়ি শিল্প এখন অনেকটাই হুমকির মুখে। উপকূলীয় এলাকায় চিংড়ির পরেই অর্থকরী ফসলের তালিকায় তরমুজ যুক্ত হয়েছে। সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় লবনাক্ত এলাকায় বর্তমানে ব্যাপকভাবে চাষাবাদ হচ্ছে তরমুজ। তরমুজ চাষ লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছর তরমুজের আবাদ বাড়ছে এবং এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকরাও তরমুজ চাষের সাথে যুক্ত হচ্ছে ।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ একরামুল হোসেন বলেন, তরমুজ স্বল্প মেয়াদি একটি লাভজনক ফসল। রবি মৌসুমে বিলের পতিত এবং ফেলে রাখা জমিতে তরমুজ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন এলাকার কৃষকরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে উন্নত বীজ সরবরাহ সহ কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। খাল খনন সহ তরমুজ চাষ সহজ করতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। তরমুজ চাষ সহ কৃষকের সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন বলেন, এখানকার তরমুজ সুস্বাদু হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। মান সম্মত উপায়ে বেশি বেশি উৎপাদন করে তরমুজ চাষের সম্ভবনা কে কাজে লাগাতে হবে।