বৃহস্পতিবার ● ৩ নভেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » সাহিত্য » যেতে চাইছে না ঋতু রানী শরৎ
যেতে চাইছে না ঋতু রানী শরৎ
মোঃ আব্দুল আজিজ ॥
কাশফুল, পরিষ্কার নীল আকাশ আর সবুজ মাঠ৷ শব্দগুলো শুনলেই মনে আসে ঋতুর রানি শরতের নাম ৷ বাংলার প্রকৃতিতে শরতের আবির্ভাব মুগ্ধ করে সবাইকে। ‘‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি, ছড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গলি৷” এভাবেই বাঙালির সামনে শরতের সৌন্দর্য উপস্থাপন করেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর৷ তাঁর মতোই শরতে মুগ্ধ বাংলার কবিকূল৷
তবে শুরুটা করেছেন কবিগুরুই৷ শরৎ নিয়ে তাঁর কবিতা কিংবা গানে যেন কমতি নেই৷ বিভিন্নভাবে শরৎ সম্পর্কে নিজের আবেগকে তুলে ধরেছেন রবীন্দ্রনাথ৷ কথাগুলো বলেছেন আরেক শরৎপ্রেমী মুস্তফা মনোয়ার৷ তিনি বলেন, ‘‘শরৎ যে এত সুন্দর আগে হয়ত বাঙালি জানতোও না৷ রবীন্দ্রনাথই তাঁর গান, কবিতার মাধ্যমে সবাইকে শরৎকাল উপভোগ করতে শিখিয়েছেন৷ তাঁর গানগুলো শুনলেই শরতের সমস্ত সৌন্দর্য ধরা পড়ে৷”
মুস্তফা মনোয়ার মতে, শরৎ হচ্ছে চমৎকার মেঘের ঋতু, স্পষ্টতার ঋতু৷ কেননা শরতের আকাশ থাকে ঝকঝকে পরিষ্কার৷ নীল আকাশের মাঝে টুকরো টুকরো সাদা মেঘ যেন ভেসে বেড়ায়৷ তিনি বলেন, ‘‘গ্রামের বধূ যেমন মাটি লেপন করে নিজ গৃহকে নিপুণ করে তোলে, তেমনি শরৎকাল প্রকৃতিকে সুন্দর করে সাজিয়ে দেয়৷ বর্ষার পরে গাছগুলো সজীব হয়ে ওঠে৷ আকাশে হালকা মেঘগুলো উড়ে উড়ে যায়৷” শরৎ মানেই নদীর তীরে কাশফুল৷ শরৎ মানেই গাছে গাছে হাসনুহানা আর বিলে শাপলার সমারোহ৷ শরৎ মানেই গাছে পাকা তাল৷ সেই তাল দিয়ে তৈরি পিঠা, পায়েস৷ আর ক্ষেতে ক্ষেতে আমন ধানের বেড়ে ওঠা চারা৷
ইতোমধ্যে শরৎ চলে গেছে প্রায় ১মাস হতে চলেছে। কিন্তু শরৎ প্রেমীদের মাঝে এখনো রয়েগেছে শরতের রূপ এবং বৈচিত্র। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। আর ফেসবুক ব্যবহারকারী অসংখ্য শরৎ প্রেমী বাঙালী তাদের প্রোফাইল পিকচার কিংবা কভার ফটোর মাঝে ধরে রেখেছেন শিশিরভেজা কাশফুল আর সাদা মেঘের ছবি সম্বলিত শরতের প্রকৃত রূপ। অসংখ্য ফেসবুক ব্যবহারকারীদের শরতের এসব ছবি দেখে মনে হচ্ছে শরৎ এখনো আমাদের মাঝে বিদ্যমান রয়েছে। প্রকৃত প্রেমীদের ছেড়ে শরৎ যেন যেতে চাইছে না। এক ফেসবুক ব্যবহারকারী জানান, শরতের রূপ, বৈচিত্র যেন অন্য যে কোন ঋতুর চেয়ে আলাদা। প্রকৃতি থেকে শরৎ চলে গেছে তাই বাস্তবে শরতকে উপভোগ করার কোন সুযোগ নাই। এ জন্য শরতের শিশির কাশফুলের মাঝে পরিবারের ছবি সম্বলিত ছবিটি ফেসবুকের কভার ফটো হিসাবে রেখে দিয়েছি। অনেক শুভাকাঙ্খিরাই অনুরোধ করেছেন ছবিটি যেন কভার ফটো থেকে সরিয়ে না ফেলি। প্রকৃতি থেকে শরৎ বিদায় নিলেও ছবিটির মাঝে শরতের রূপ এবং বৈচিত্র উপভোগ করার সুযোগ পাই।