রবিবার ● ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রথম পাতা » রাজনীতি » দাকোপে জমে উঠেছে জেলা পরিষদ নির্বাচন ঃ শেষ মুহুর্তের জোর প্রচারনায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা
দাকোপে জমে উঠেছে জেলা পরিষদ নির্বাচন ঃ শেষ মুহুর্তের জোর প্রচারনায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা
আজগর হোসেন ছাব্বির, দাকোপ ॥
আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দাকোপে শেষ মুহুর্তের প্রচারনায় মুখর প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীরা। দাকোপের সর্বত্র প্রার্থীদের নিয়ে ভোটার থেকে সাধারন মানুষ আলোচনা সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছে। নতুন নিয়মের এই নির্বাচনে ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের কদর প্রার্থীদের কাছে আকাশচুম্বি হওয়ায় অনেকে ঝোপ বুঝে কোপ এই নীতিতে আছেন এমন ধারনা সাধারনের মাঝে।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর জনপ্রতিনিধিদের সরাসরি ভোটে সারা দেশের ন্যায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচন। নতুন নিয়মে প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনকে ঘিরে গ্রামাঞ্চলে এক ধরনের উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের কোন প্রার্থী না থাকলেও দাকোপে আওয়ামীলীগের সাথে আওয়ামীলীগের প্রতিদ্বন্দিতার আভাষ পাওয়া যাচ্ছে। সাধারন সদস্য পদে দাকোপের ৯ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হয়েছে ১ ও ২ নং ওয়ার্ড। সরেজমিন নির্বাচনী এলাকা ঘুরে এবং ভোটারদের সাথে কথা বলে ধারনা করা যাচ্ছে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী সদ্য সাবেক জেলা পরিষদের প্রশাসক শেখ হারুনুর রশিদ বেশ এগিয়ে। তাঁর প্রতিক আনারস। পোষ্টার প্রচারনায় একচেটিয়া প্রভাব আনারসের বিজয় নিশ্চিত করতে দাকোপ উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবানে একাধীক সভায় সকল জনপ্রতিনিধি তাঁদের অকুণ্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। এ পদে অপর ২ প্রার্থী একই দলের শেখ আলী আকবর ও অজয় সরকারের প্রকাশ্যে তেমন কোন প্রচারনা দেখা যাচ্ছেনা। এমনকি তাঁদের কোন পোষ্টার বা প্রচারনা দাকোপে দৃশ্যমান নয়। এবারের নির্বাচনে দাকোপে ভোটারদের মাঝে মুল আকর্ষন হয়ে দাড়ীয়েছে সদস্য প্রার্থীরা। সদস্য প্রার্থীদের তৎপরতায় ভোটার জনপ্রতিনিধিদের কদর অনেকাংশে বেড়ে গেছে। ১ নং ওয়ার্ড তথা চালনা পৌরসভা, পানখালী, তিলডাঙ্গা, কামারখোলা ও সুতারখালী ইউনিয়নের মেয়র কাউন্সিলর চেয়ারম্যান মেম্বরদের ভোট নিজেদের অনুকুলে আনতে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীরা দিনরাত গনসংযোগে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। এই ওয়ার্ডে ৩ প্রার্থীর মধ্যে তালা প্রতিক নিয়ে কবির হোসেন খান উপজেলা আ’লীগের সমর্থন পেয়েছেন। বিগত পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দিতায় নেমে শেষ পর্যন্ত দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। কালাবগী ৮ নং ওয়ার্ড সভাপতি ও সুতারখালী ইউনিয়ন আ’লীগের সহসভাপতি কবির হোসেন এলাকায় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক হিসেবে পরিচিত। ইতিমধ্যে তিনি স্কুল মাদ্রাসা মসজিদসহ সেবা মুলক কাজে সাধারনের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। সর্বশেষ জনমত জরিপে নির্বাচনে তাঁর বিজয় অনেকটা নিশ্চিত। এই ওয়ার্ডে তাঁর সাথে প্রতিদ্বন্দিতায় আছেন টিউবওয়েল প্রতিক নিয়ে তিলডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জালাল গাজী এবং হাতী প্রতিক নিয়ে সাবেক ছাত্রনেতা উপজেলা আ’লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক গোলাম মোস্তফা খান। ২ নং ওয়ার্ড তথা বাজুয়া, দাকোপ, কৈলাশগঞ্জ, লাউডোপ ও বানীশান্তা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নির্বাচনী এলাকায় সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন ২ জন প্রার্থী। লাউডোপ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শেখ যুবরাজ (টিউবওয়েল)। এবং উপজেলা আ’লীগনেতা এ্যাডঃ রজত কান্তি শীল (তালা)। জানা গেছে ২ নং ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দি ২ প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে। এ ছাড়া দাকোপের ৯ ইউনিয়ন ও চালনা পৌরসভা এবং কয়রার ৫ ইউনিয়ন নিয়ে (সাধারন ১,২ও ৩) নং ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ১ নং ওয়ার্ড। এখানে প্রতিদ্বন্দি ২ প্রার্থীর মধ্যে দাকোপ উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আ’লীগের সদস্য জয়ন্তী রানী সরদার (হরিণ) এবং দাকোপ উপজেলা মহিলা আ’লীগের সহসভাপতি সাবেক ইউপি সদস্য বিজলী বৈদ্য (দোয়াত কলম)। দাকোপে ভোটের মাঠে ২ প্রার্থী কেউ কাউকে হয়ত ছেড়ে কথা বলবেনা এমন ধারনা সাধারনের। প্রথমবারের নতুন নিয়মের এই নির্বাচনে কারা বসবেন জেলা পরিষদে এ নিয়ে সব মহলে চলছে জল্পনা কল্পনা। তবে শেষ মুহুর্তে সমর্থন নিজেদের অনুকুলে রাখতে ভোটারদের নানা কৌশলে বসে আনার সকল প্রচেষ্টা অব্যহত রেখেছেন প্রার্থীরা।