শনিবার ● ২৫ মার্চ ২০১৭
প্রথম পাতা » ইতিহাস ও ঐতিহ্য » একাত্তরের মার্চেই সংগঠিত হয় মুক্তিকামী মাগুরাবাসী
একাত্তরের মার্চেই সংগঠিত হয় মুক্তিকামী মাগুরাবাসী
এস আলম তুহিন , মাগুরা
১৯৭১ সালের মার্চেই পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে মাগুরায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে উঠে। এ লক্ষ্যে তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক ওয়ালিউল ইসলাম শহরের পুরানো কোর্ট চত্বরে দাড়িয়ে আগুনঝরা বিপ্লবী বক্তব্য রাখেন। তার সেই বক্তব্য উপস্থিত মুক্তিপাগল মাগুরাবাসিকে আবেগাপ্লুত করে তোলে। এ সময় তাৎক্ষনিকভাবে আওয়ামীলীগ নেতা আছাদুজ্জামানের নেতৃত্বে গঠিত হয় সংগ্রাম কমিটি। উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন জাতীয় পরিষদ সদস্য সোহরাব হোসেন ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য সৈয়দ আতর আলী। সেই সাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনেচ্ছু ছাত্র-জনতা, আনসার, পুলিশ, ইপিআর, সেনা সদস্যদের সংগঠিত করে মাগুরার নোমানী ময়দান, পারনান্দুয়ালী, শেখপাড়া আমবাগান, ওয়াপদা, কাটাখালীসহ বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। এ সময় পুলিশ প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করে মাগুরা ট্রেজারী থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি সরবরাহ করা হয় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে। পাকিস্তানী বাহিনীর হামলা প্রতিরোধে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নেয় মাগুরায় প্রবেশ পথের চারিদিকে। প্রতিরোধ যুদ্ধের বিভিন্ন ক্যাম্প ও অন্যান্য জেলা ও মহাকুমার সাথে যোগাযোগ রক্ষার জন্য নোমানী ময়দান আনসার ক্যাম্পে সংগ্রাম কমিটির মুল অফিস ও তৎকালীন এসডিও অফিসে স্থাপন করা হয় কন্ট্রোল রুম। নাসিরুল ইসলাম আবু মিয়া ও আবু জোহা পিকুল কন্ট্রোল রুমের দায়িত্ব পালন করেন।
এ সময় মাগুরা সদরসহ তৎকালীন মহকুমা শহরের বিভিন্ন প্রতিরোধ ক্যাম্পে নিয়োমিত খাদ্য গোলাবারুদ সরবরাহসহ সার্বিক যোগাযোগের দায়িত্ব পালন করেন আব্দুল ফাত্তাহ, সৈয়দ মাহবুবুল হক বেনু, এস এ সিদ্দকী বেবী, মুন্সী রেজাউল হক, আব্দুল গফুর ভূইয়া, আবুল খায়ের, আবু নাসের বাবলু প্রমুখ।
এছাড়া মার্চ মাসেই জেলার শ্রীপুর অঞ্চলে আকবর হোসেন মিয়ার ও মোল্যা নবুয়ত আলীর নেতৃত্বে আকবর বাহিনী নামে শ্রীপুর আঞ্চলিক বাহিনী গঠিত হয়। অপর দিকে মহম্মদপুরে ইয়াকুব হোসেনের নেতৃত্বে ইয়াকুব বাহিনী এবং মাগুরা সদরে খন্দকার আব্দুল মাজেদের নেতৃত্বে মাজেদ বাহিনী গঠিত হয়। এ সকল বাহিনী যুদ্ধ চলাকালীন সময় পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিক বিরচিত অভিযান পরিচালনা করেন।