শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
রবিবার ● ১৪ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » উপ-সম্পাদকীয় » মা দিবসের ভাবনা
প্রথম পাতা » উপ-সম্পাদকীয় » মা দিবসের ভাবনা
৬২৯ বার পঠিত
রবিবার ● ১৪ মে ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

মা দিবসের ভাবনা

---

প্রকাশ ঘোষ বিধান

মা একটি ছোট্ট শব্দ। কিন্তু কি তার বিশাল পরিধি, যেমন মমতা জড়ানো, হৃদয় ছোয়া তেমনি এক বিশাল শক্তির আধার। মা, সবচেয়ে প্রিয় একটি শব্দ। পৃথিবীতে যতগুলো শব্দ আছে তার মধ্যে মধুর শব্দ, মা। মায়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য প্রতি বছর সারা বিশ্বে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার পালিত হয় আন্তর্জাতিক মা দিবস। সে হিসাবে এ বছর ১৪ মে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মা দিবস।

বর্তমান সময়ে বিশ্বের অনেক দেশেই মা দিবস পালিত হচ্ছে।  আগেও অনেক জায়গায় মা দিবস পালিত হতো। এ প্রাচীন গ্রীসে ‘মা দিবস’ এর প্রচলন ছিল। যেখানে প্রতি বছর বসন্তকালে একটি দিন দেবতাদের মা আইসিস, সিবিলি, রিয়া’র উদ্দেশ্যে ‘মা দিবস’ উদযাপন করা হতো। সে সময় বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে বিভিন্ন সময় মা দিবস পালিত হতো। আমেরিকায় গৃহযুদ্ধ চরাকালীন সময় এক মায়ের সন্তান অন্য মায়ের সন্তানকে অবলিলায় হত্যা করছিল। আমেরিকার জুলিয়া ওয়ার্ড হাও নামে এক গীতিকার এ ঘটনায় ব্যথিত হন। গৃহযুদ্ধ বন্ধ করতে সব মা’দেরকে একত্র করতে চেয়ে ছিল। এ কারণে তিনি ১৮৭০ সালে মা দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। তবে যে সব মহিয়সী নারীর কল্যাণে এ দিবসটি পালিত হয় তার মধ্যে অন্যতম হলেন অ্যানা জার্ভিস। তিনিই আধুনিক মা দিবসের প্রবর্তক। ১৮৬৪ সালের ১ মে অ্যানা জার্ভিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েষ্ট ভার্জিনিয়ার ওয়েবস্টারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ১১ ভাইবোনের মধ্যে নবম। অ্যানার মা অ্যান জারভিসের খুব ইচ্ছা ছিল জীবিত ও মৃত সব মায়েদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা। এ জন্য তিনি মাদার ফ্রেন্ডশিপ ডে প্রচলনের ব্যাপারে উদ্যোগী ছিলেন। ১৮৬৫ সালে অ্যান জার্ভিস গ্রাফটনের একটি গির্জার মাদার’স ফ্রেন্ডশিপ যে প্রচলন করেন এবং কয়েক বছরের মধ্যে এটা বার্ষিক এক উৎসবে পরিণত হয়। ১৯০৫ সালে অ্যানা মেরি রিভস জারভিস মারা গেলে অ্যান জারভিস সিদ্ধান্ত নেন যে মা’র স্মরণে কিছু করবেন যা মায়েদের সম্মান বৃদ্ধিতে কাজ করবে। সে সময় তিনি লক্ষ্য করেন যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ পূর্ণবয়স্ক সন্তানই তাদের মাতা পিতার প্রতিবেশ অবহেলা প্রদর্শন করে। এ থেকে তিনি ঠিক করেন জাতীয় পর্যায় একটি মা দিবসের সুচনা করে মায়েদের প্রতি সন্তানদের শ্রদ্ধা-ভালোবাসার চর্চাকে একটি প্রতিষ্ঠানিক রূপ দেবেন। ১৯০৭ সালের মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার অ্যান জারভিস মৃত্যু বার্ষিকী। সেই দিনটিকে অ্যানা জারভিস মা দিবস হিসাবে পালন করেন। সেই মুহূর্ত থেকে তার সাধনা শুরু হয় কিভাবে মা দিবস প্রতিষ্ঠা করা যায়। তিনি রাজনীতিবিদ, ধর্মযাজক, ব্যবসায়ী ও সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছে চিঠি লিখতে শুরু করেন, এই দিনটি কে মা দিবস হিসাবে পালন ও সরকারি ভাবে ঘোষণা দেওয়ার জন্য। পশ্চিম ভার্সিনিয়ার গ্রাফটনের একটি গির্জায় অ্যান জারভিস জীবনের ২০ বছর কাটান। ১৯০৮ সালে গির্জার তত্ত্বাবধায়কের কাছে করা একটি আবেদনের পরিপেক্ষিতে ঐ বছর পেনসিলভেনিয়া ও ভার্জিনিয়ার কয়েকটি গির্জায় মা দিবস পালিত হয়। অ্যান জারভিসের অক্লান্ত পরিশ্রমের সুবাদে ১৯১১ সালে আমেরিকার প্রায় সবগুলো রাজ্যেই মা দিবস পালিত হয়। এরপর ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস হিসাবে ঘোষণা করে। মার্কিন রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন আমেরিকায় প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস হিসাবে পালিত হবে ও মায়েদের জন্য রবিবারকে উৎস্বর্গ করে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। অ্যানা জারভিস ১৯৪৮ সালের ২৪ নভেম্বর ৮৪ বছর বয়সে মারা যান। আজ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্ত র্জাতিক ভাবে মা দিবস পালিত হচ্ছে।

সন্তানের কাছে পৃথিবীর সব থেকে নিরাপদ আশ্রায়, মা। মায়ের ভালবাসা আর øেহে সন্তান সব কষ্ট আর দুঃখ ভুলে যায়। মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেস্ত। তাই মা হোক প্রতিদিনের উপসানা। মায়েদের জন্য শুভ কামনা এ ধারণা সব সময় সন্তানদের মনে জাগ্রত হোক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)