মঙ্গলবার ● ২৩ মে ২০১৭
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » পাইকগাছায় জনসাধারণের ব্যবহৃত পানি সরবরাহের ক্যানেলে বাঁধ দেয়ায় হুমকির মুখে শত শত চিংড়ী ঘের
পাইকগাছায় জনসাধারণের ব্যবহৃত পানি সরবরাহের ক্যানেলে বাঁধ দেয়ায় হুমকির মুখে শত শত চিংড়ী ঘের
এস ডব্লিউ নিউজ ॥
পাইকগাছায় জনসাধারণের ব্যবহৃত পানি সরবরাহের ক্যানেলে বাঁধ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে মঙ্গলবার সকালে ইউনিয়নের কামুক্ষী খালের মাথায় বাঁধ দিলে পানি সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। এতে এলাকার একাংশের দেড় হাজার বিঘা চিংড়ী ঘেরের পানি সরবরাহ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বাঁধটি দ্রুত অপসারণ করা না হলে শত শত চিংড়ী চাষীদের কোটি টাকার ক্ষতিসাধন সহ আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বিস্তির্ণ এলাকা জলাবদ্ধতার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্ষতিগ্রস্থ চিংড়ী চাষী ও এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, উপজেলা লস্কর ও চাঁদখালী ইউনিয়নের চকচাঁদমুখ, কেওড়াতলা, হেতালবুনিয়া, উত্তর বিল, কৈয়াসিটিবুনিয়া ও গজালিয়া সহ কয়েকটি গ্রামের চিংড়ী ঘের ও এলাকার পানি সরবরাহের জন্য রেকর্ড ভুক্ত জমির উপর দিয়ে শরণখালীর মাঠামের গেট হতে মিনহাজ নদী পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার ক্যানেল তৈরী করে গত ২০ বছর যাবৎ পানি সরবরাহের জন্য ব্যবহার করে আসছে। এতে একদিকে ৫ শতাধিক চাষীর ৬ হাজার বিঘা চিংড়ী ঘেরের পানি উঠা নামা করার ফলে প্রতিবছর উল্লেখিত ঘের থেকে কোটি কোটি টাকার মৎস্য ও চিংড়ী উৎপাদিত হয়ে আসছে। অপরদিকে ক্যানেল দিয়ে বর্ষা মৌসুমে এলাকার পানি নিষ্কাসন হয়ে থাকে। এদিকে এলাকার জনসাধারণের ব্যবহৃত ক্যানেলের কামুক্ষী খালের মাথায় মঙ্গলবার সকালে ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন কর্মসৃজন প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে বাঁধ দেয়। এর ফলে ক্যানেলের দক্ষিণ পাশের দেড় শতাধিক চিংড়ী ঘেরের পানি সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে চিংড়ী চাষী আলহাজ্ব ইকবাল কাগুজী জানান, চেয়ারম্যান কোন ঘের মালিক বা এলাকাবাসীকে অবহিত না করে হঠাৎ করে পানি সরবরাহের ক্যানেলে বাঁধ দিয়ে পানি সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে এলাকার শত শত চিংড়ী ঘের বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়াও বাঁধের ব্যাপারে এলাকার কেউ কথা বলতে গেলে তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। টুটুল কাগুজী জানান, বাঁধ দেওয়ার প্রয়োজন হলে চেয়ারম্যান ঘের মালিক ও এলাকাবাসীর সাথে আলাপ-আলোচনা সাপেক্ষে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে নিজের ইচ্ছানুযায়ী জন সার্থকে উপেক্ষা করে বাঁধ দিয়েছে। এর ফলে বর্তমানে যে তাপদাহ চলছে তাতে দু’একদিনের মধ্যে শত শত ঘেরের চিংড়ী সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মারা গিয়ে ঘের মালিকরা কোটি কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখিন হবে। ইউনিয়ন যুবলীগনেতা শহীদুল্লাহ কায়ছার জানান, সোমবার এলাকার একটি মাদ্রাসার আজীবন সদস্য সম্মেলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় চেয়ারম্যান খাম-খেয়ালী ভাবে পানি সরবরাহের ক্যানেলে বাঁধটি দিয়েছে। এলাকাবাসীর এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন জানান, কেয়ার রাস্তার প্রকল্পের আওতায় বাঁধটি দেয়া হয়েছে, এখানে মাদ্রাসার সম্মেলন কিংবা অন্যকোন উদ্দেশ্য নাই বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে বাঁধকে কেন্দ্র করে দুটি পক্ষের সৃষ্টি হওয়ায় যে কোন মুহূর্তে সংঘর্ষ সহ অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশংকায় বাঁধ অপসারণ সহ সংঘাত সংঘর্ষ এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন এলাকাবাসী।