শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
রবিবার ● ১৮ জুন ২০১৭
প্রথম পাতা » পরিবেশ » পুকুরের পানি খেয়ে লাখো পরিবারের জীবন ধারণ
প্রথম পাতা » পরিবেশ » পুকুরের পানি খেয়ে লাখো পরিবারের জীবন ধারণ
৫২৩ বার পঠিত
রবিবার ● ১৮ জুন ২০১৭
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

পুকুরের পানি খেয়ে লাখো পরিবারের জীবন ধারণ

---

এস ডব্লিউ নিউজ ॥

জেলা শহর খুলনা থেকে পাইকগাছা উপজেলা সদরের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার। আর উপজেলা সদর থেকে গড়ইখালী ইউনিয়ন সদরের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। ১৭টি গ্রাম নিয়ে গঠিত গড়ইখালী একটি দূর্গম ও নদীবেষ্টিত ইউনিয়ন। ইউনিয়নের এক পাশে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী শিবসা নদী, আরেক পাশে রয়েছে মিনহাজ নদী, আর সবশেষ প্রান্তে রয়েছে গাংরখী নদী। ইউনিয়নের সীমান্ত জুড়েই রয়েছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন। যার ফলে প্রাকৃতিক দূর্যোগ আঘাত হানলেই সর্বপ্রথম আক্রান্ত হয় গড়ইখালীর মানুষ। এক সময় এ ইউনিয়নের বেশিরভাগ মানুষের জীবিকা নির্বাহ ছিল সুন্দরবনের উপর। যদিও নানামূখি কর্মসংস্থান হওয়ার ফলে এখন আর তেমনটি নাই। বর্তমানে ইউনিয়নে লোকসংখ্যা ৩০ হাজার। প্রত্যান্ত এলাকা হওয়ায় এ এলাকার মানুষের জীবনমান এখনো তেমন কোন উন্নতি ঘটেনি। সুন্দরবনের সাথেই ইউনিয়নটির অবস্থান হওয়ায় প্রাকৃতিক দূর্যোগের পাশাপাশি এ ইউনিয়নসহ পাশ্ববর্তী এলাকার মানুষের সমস্যার যেন অন্তনেই। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বিদ্যুতায়ন হওয়ায় অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কিছুটা বাড়লেও অত্র এলাকার মানুষের বর্তমানে প্রধান সমস্যা হচ্ছে সুপেয় পানি। নদীবেষ্টিত ইউনিয়ন হওয়ায়, এ ইউনিয়নের কোথাও কোন সুপেয় পানির সু-ব্যবস্থা নাই। শতভাগ নলকূপ ব্যবহারের অনুপোযোগী। লবণ আর আর্সেনিকে ভরা ভূ-গর্ভস্থপানি। ফলে পুকুর কিংবা বৃষ্টির পানি ধরে রাখায় একমাত্র সুপেয় পানির সু-ব্যবস্থা। ইউনিয়নের সদরের অতিপরিচিত একটি গ্রামের নাম ফকিরাবাদ। এ গ্রামের বুকেই প্রায় শত বছর আগে একটি পুকুর খনন করেন আলমশাহ ফকির বংশধররা। শত বছরের পুরাতন এই পুকুরটি অত্র ইউনিয়নের গড়ইখালী, বাসাখালী, ফকিরাবাদ, আমিরপুর, শান্তা, হুগলারচক, বাইনবাড়িয়া, কানাখালী, পাতড়াবুনিয়া, কুমখালী, বগুড়ারচক সহ পাশ্ববর্তী, সোলাদানা, লস্কর ও চাঁদখালী ইউনিয়ন এবং কয়রা উপজেলার আমাদী, মহেশ্বরীপুর এবং দাকপের চতুরখালী সহ আশপাশ এলাকার প্রায় ১ লাখ পরিবারের সুপেয় পানির একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে অত্র পুকুরটি। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত দূর-দূরন্ত থেকে লোকজন পিকআপ, নছিমন, করিমন, ইঞ্জিন ভ্যান ও নৌকা যোগে পুকুর থেকে পানি নিয়ে যায়। এ ছাড়াও প্রতিদিন কয়েক কিলোমিটার পথ পায়ে হেটে গ্রামের গৃহবধুরা অত্র পুকুরের পানি নিয়ে জীবন ধারণ করে। অত্র এলাকার হোটেল রেস্তরার সুপেয় পানির একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে অত্র পুকুরটি। অত্র পুকুরের পানি বিক্রি করে অনেক পরিবার জীবিকা ধারণ করছে। এ ব্যাপারে গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বিশ্বাস জানান, পুকুরটি বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তদারকি করা হয়। পুকুরের পানি ভাল রাখার জন্য মাছ চাষ, হাত-পা ধোয়া এবং গোসল করা নিষেধ রয়েছে। তবে মাঝে মধ্যে অনেক সময় হাস এবং গরু-ছাগল পুকুর এরিয়ার মধ্যে ধুকে পড়ে এবং হাস ও গরু-ছাগলের মল-মুত্র বৃষ্টির পানিতে পুকুরে নেমে যায়। এতে পানির মান অনেক সময় নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়। এ ক্ষেত্রে অত্র এলাকার লাখো পরিবারের সুপেয় পানির একমাত্র মাধ্যম অত্র পুকুরের চারিপাশে সীমানা প্রাচীর দেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে। সরকারী সহায়তা পেলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে পারলে ভবিষ্যতে পুকুরের পানির মান নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা থাকবে না। পুকুরটি সংরক্ষণের জন্য সরকার এবং সহযোগী সংস্থা এগিয়ে আসবেন এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন প্রত্যান্ত এলাকার সাধারণ মানুষ।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)