বৃহস্পতিবার ● ১৩ জুলাই ২০১৭
প্রথম পাতা » কৃষি » ডুমুরিয়ায় মৎস্য ঘেরে লবণ পানি তোলা বন্ধ,মিষ্টি পানিতে মাছ চাষের অঙ্গীকার।
ডুমুরিয়ায় মৎস্য ঘেরে লবণ পানি তোলা বন্ধ,মিষ্টি পানিতে মাছ চাষের অঙ্গীকার।
ডুমুরিয়া প্রতিনিধিঃ ডুমুরিয়ার চুকনগরে মৎস্য ঘেরে লবণ পানি তোলাকে লাল কার্ড প্রদর্শন করা করেছে এলাকাবাসী। এ সময় হাজার হাজার জনতা মিষ্টি পানিতে মাছ চাষের অঙ্গীকার করে অসাধু প্রভাবশালী কতিপয় ঘের ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এমনকি এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে মৎস্য ঘেরে লবন পানি তুলে মাছ চাষ বন্ধ করার জন্য ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ কয়েকটি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছে।
প্রাপ্ত অভিযোগ সূত্রে জানাযায়,ডুমুরিয়া উপজেলার কুলবাড়িয়া মৌজার নরকুড় (বদ্ধ) জলমহলটির মাত্র ৫.৮৫একর জমি গোনালী মৎস্য সমবায় সমিতির অনুকূলে ৩বছরের ইজারা নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি সিদ্দিকুর রহমান শেখ,রহিম দফাদার,লেওকাত গাজী,রাজ্জাক কাগজী ও কাশেম পাহাড় ক্ষমতার জোরে গত ৩/৪মাস আগে জনগনের কাছ থেকে ঘেরটি কেড়ে নেয়। এরপর থেকে তারা নিজেদের ইচ্ছামত ঘ্যাংরাইল নদী থেকে লবন পানি তুলে মাছ চাষ শুরু করে। এতে নরকুড় বিলের শতাধিক কৃষকের প্রায় ২শতাধিক বিঘা কৃষি জমি প¬াবিত হয়ে পানি বন্দী করে বাগদা চিংড়ি চাষ করছে। এতে আমন চাষের জন্য বীজতলা তৈরি ও আমন চাষাবাদে বিলটি অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাছাড়া প্রায় শতাধিক ব্যক্তির পকেট ঘেরে লবন পানি ঢুকে হাজার হাজার মন সাদা মাছ মারা গেছে। মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে লাগানো সিম,বেগুন,বরবটি শসা,পুইশাক সহ অনেক রকমের কাঁচা ফসল মারা গেছে। এতে প্রায় ৫০লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একাধিক এলাকাবাসী জানায়,একাধিক মামলার আসামী সন্ত্রাসী রাজ্জাক কাগজী এবং কুখ্যাত সন্ত্রাসী রাঙা সাইদের সেকেন্ড ইন কমান্ড লেওকাত গাজীর নেতৃত্বে প্রায় ৩০বছর ধরে জনগনের করা ঘেরটি গত ৩মাস আগে কেড়ে নেয়া হয় এবং নিজেদের ইচছামত লবন পানি তুলে মানুষের একের পর ক্ষতি করা হচ্ছে। তাই এই সন্ত্রাসীদের হাত থেকে তাদের ঘেরটি ফেরত নেয়ার জন্য তারা স্থানীয় মন্ত্রী মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি কাছে সার্বিক সহযোগীতাও কামনা করেছেন। এব্যাপারে জাবের গাজী যশোর মোল্যা,আজমল উদ্দিন,হামিদ মোল্যা,নুর আলী,শহিদুল মালী,হায়দার মোড়ল,মুন্নাফ শেখ,হান্নান শেখ,সেলিম শেখ,কামরুল শেখ,মই শেখ,জামির গাজী,কালাম মোল্যা,আবুল মোল্যা,নিছার শেখ,রহিম শেখ প্রমুখ ব্যক্তি জানায় ১৫বিঘা জমি ইজারা নিয়ে লবন পানি তুলে প্রায় শতাধিক পকেট ঘেরের হাজার হাজার মন সাদা মাছ মেরে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এবিষয় নিয়ে কোন কথা বলতে গেলে তারা হয়রানীমূলক মামলা সহ জীবন নাশের হুমকী দিচেছ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান রাজু বলেন, জনগনের দীর্ঘদিন ধরে করা মৎস্য ঘেরটি জবর দখল করে কতিপয় সস্ত্রাসী লবন পানি তুলে মাছ চাষ করছিল। আমরা এলাকার জনগনকে সাথে নিয়ে তাদের উচ্ছেদ করে জনগনের ঘের জনগনকে ফিরিয়ে দিয়েছি।
বিশিষ্ট শিল্পপতি ও তরুন সমাজ সেবক শেখ হেলাল উদ্দিন বলেন দীর্ঘ ৩০বছর ধরে এই এলাকার ৩৭জন জমির মালিক মিষ্টি পানিতে মাছ চাষ করে আসছিল। গত ইউপি উপ নির্বাচনের তাদের ঘের থেকে উ্েচছদ করে কতিপয় ব্যক্তি ঘেরটি দখল করে নেয়। কিন্তু তারা ঘেরটি শুধু দখল করেই ক্ষান্ত থাকেনি। নিজেদের ইচ্ছামত লবন পানি তুলে সাধারণ মানুষের চরম ক্ষতি করছে। তাই আমরা এই এলাকার প্রায় ৯৫ভাগ লোক নিয়ে তাদেরকে ঘের থেকে উচ্ছেদ করে জনগনের ঘের জনগনের হাতে তুলে দিয়েছি এবং আর কোন দিন লবন পানি না তোলার জন্য অঙ্গীকার তাদের করিয়েছি। বাংলাদেশ পানি কমিটির সভাপতি এবং খুলনা জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক অধ্যক্ষ এবিএম শফিকুল ইসলাম বলেন,কিছু অসাধু ব্যক্তি বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত করতে মৎস্য ঘেরের জমিতে লবন পানি তুলে মাছ চাষ করছে। এতে মানুষ একদিকে যেমন তারা বীজতলা করতে পারল না। অপর দিকে যারা আমন ধান করবে তারা লবন পানির ভয়ে ধান রোপন করতে ভয় পাচ্ছে। কারণ লবন পানিতে ধান উৎপাদন করা সম্ভব না। ফলে কৃষকদের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে।