শনিবার ● ৫ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » কৃষি » পাইকগাছার নার্সারীতে কমলা ও মাল্টার চারা উৎপাদন বেড়েছে
পাইকগাছার নার্সারীতে কমলা ও মাল্টার চারা উৎপাদন বেড়েছে
নাসরিন সুলতানা রানী ॥
পাইকগাছায় নার্সারী গুলোতে লেবু জাতিয় ফলের চারা উৎপাদনের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। বিশেষ করে মালটা ও কমলা লেবুর চারা তৈরিতে নার্সারীর মালিকরা ব্যস্ত সময় পার করছে। মালটা ও কমলা লেবুর চারার চাহিদা বাড়ায় নার্সারীতে লেবু জাতিয় চারা তৈরি বৃদ্ধি পেয়েছে।
পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নে প্রায় ৫ শতাধিক নার্সারী রয়েছে। এ সব নার্সারীতে ফলদ, বৃক্ষ, ঔষধী ও বিভিন্ন ফুলের চারা উৎপাদন হয়ে আসছে। বিগত কয়েক বছর লবণাক্ত উপকূল এলাকায় মাল্টা ও কমলার আবাদ ভালো হওয়ায় লেবু জাতিয় কলমের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব কলম এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। নার্সারী মালিকরা চলতি মৌসুমে নার্সারীতে নাগপুরি কমলা, চায়না কমলার চারা তৈরি করছে। এক ফুট উচু কমলার চারা ২৫ টাকা ও তিন ফুট উচু কমলার চারা দেড়শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মাল্টা, দেশী কাগুজি, হাইব্রীড কাগুজি, চায়না কাগুজির চারা উৎপাদন হচ্ছে। এ ব্যাপারে গদাইপুর ইউনিয়নের মেলেক পুরাইকাটী গ্রামের খুশি নার্সারীর মোঃ মিজানুর রহমান জানান, বীজ থেকে চারা ও গ্রাফটিং করে চারা উৎপাদন করা হয়। চারারোপনের ১ বছর পর বিক্রি করার উপযোগী হয়। এ বছর তিনি ৫ বিঘা নার্সারীর মধ্যে বিভিন্ন চারার পাশাপাশি ১০ শতক জমিতে লেবু জাতিয়, কমলা ও মাল্টার উৎপাদন করেছে। এলাকার এ সকল চারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা ট্রাক যোগে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানান, নার্সারী ব্যবসায় সরকারী ভাবে ঋণের ব্যবস্থা করলে নার্সারীর উৎপাদিত চারা বিক্রি করে এলাকার আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। সে জন্য তিনি সরকারী ভাবে নার্সারী শিল্পে ঋণ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। গদাইপুরে প্রায় শতাধিক নার্সারীতে মাল্টা ও কমলা লেবুর চারা উৎপাদন হয়েছে। জনতা নার্সারীর মালিক ও পাইকগাছা উপজেলা নার্সারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার পাল বলেন, পাইকগাছার নার্সারীর সুনাম বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবছর কোটি কোটি চারা দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। চারা উৎপাদনের জন্য ছিদ্র করা গোল ছোট পলিথিন ব্যবহার না করলে চারা উৎপাদন করা সম্ভব হয় না। তবে বর্তমানে এই ছিদ্র করা ছোট পলিথিনে উৎপাদিত চারা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করার সময় আইন শৃংখলা বাহিনী পলিথিন ব্যবহার করা যাবে না বলে চারা সরবরাহ করতে দিচ্ছে না। এতে করে নার্সারীতে চারা উৎপাদন করতে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। ছিদ্র করা এ ছোট পলিথিনে চারা উৎপাদন ও সরবরাহ করার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। তাছাড়া তিনি আরো জানান, এ বছর তিনি শুধু ৬০ থেকে ৭০ লাখ মাল্টা, কমলা সহ লেবু জাতিয় কলম তার নার্সারীতে উৎপাদন করেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, গদাইপুরের নার্সারীতে উৎপাদিত চারায় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। এ এলাকার উৎপাদিত চারা কৃষিতে উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রাখছে। নার্সারীর মালিকরা যাতে সরকারী ভাবে সুযোগ সুবিধা পেতে পারে তার জন্য কৃষি অধিদপ্তরের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।