শুক্রবার ● ১৮ আগস্ট ২০১৭
প্রথম পাতা » শিক্ষা » নড়াইলে শ্লীলতাহানির ঘটনায় স্কুলছাত্রীর লেখাপড়া বন্ধ প্রায়, মামলা তুলে নিতে হুমকি, বিচার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন
নড়াইলে শ্লীলতাহানির ঘটনায় স্কুলছাত্রীর লেখাপড়া বন্ধ প্রায়, মামলা তুলে নিতে হুমকি, বিচার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন
নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পাংখারচর গ্রামে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এলাকাবাসী ও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আয়োজনে আজ সকাল ১০টার দিকে লোহাগড়ার পাংখারচর কাজীপাড়ায় এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পাংখারচরের বাসিন্দা লিয়াকত আলী কাজীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন স্বরসতী একাডেমীর প্রধান শিক্ষক এ.কে.এম. আরিফ-উ-দ্দৌলা, স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাসুদ রানা, ইতনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহাদুজ্জামান, কাজী বুলবুল আহম্মেদ, ওবায়দুর কাজী, স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শারমিন খানম, নবম শ্রেণির রাশেদ কাজী, অষ্টম শ্রেণির মাসুমা আক্তার, আশা খানম প্রমুখ।
বক্তারা, স্বরসতী একাডেমীর নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় আসামিদের দ্রুত বিচারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
ভূক্তভোগী পরিবার ও মামলার বিবরণে জানা যায়, নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার পাংখারচরের কাজীপাড়ার রয়েল কাজী স্থানীয় স্বরসতী একাডেমীর নবম শ্রেণির ওই ছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। তার প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় গত ২ আগস্ট সন্ধ্যায় ওই ছাত্রী দর্জি বিজ্ঞান কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে রয়েল কাজীর নের্তৃত্বে কাজীপাড়ার বাবু শেখ, নয়ন সরদার, জুয়েল কাজী, ফয়েজ কাজী ও বাঁধন কাজী তার গতিরোধ করে। ওই শিক্ষার্থীকে ঝাঁপটে ধরে বাগানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশী এক মহিলা ছুটে এসে বাঁশ দিয়ে ধাওয়া করলে রয়েলসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই স্কুল শিক্ষার্থীর মা বাদি হয়ে ৩ আগস্ট রাতে লোহাগড়া থানায় রয়েল কাজীসহ ছয়জনের নামে মামলা করেন। এর মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদিকে ভূক্তভোগী ওই ছাত্রী বলে, বর্তমানে স্কুলে যেতে আমার সমস্যা হচ্ছে। সেইদিনের শ্লীলতাহানির ঘটনায় এলাকাবাসী আমাকে নিয়ে বিভিন্ন বাজে মন্তব্য করছে। বিভিন্ন ক্লাসের শিক্ষার্থী আমাকে জড়িয়ে কটূক্তি করছে। এখন আমি কী করব। স্বরসতী একাডেমীর প্রধান শিক্ষক এ.কে.এম. আরিফ-উ-দ্দৌলা বলেন, সেদিনের ওই ঘটনার পর থেকে মেয়েটি কেমন যেন নির্জীব হয়ে গেছে। লেখাপড়ায় অমনোযোগী ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মেয়েটি আমার স্কুলের নবম শ্রেণির মানবিক শাখার শিক্ষার্থী। ওই ছাত্রীর মা বলেন, মামলা তুলে নিতে আসামিপক্ষের লোকজন আমাদের হুমকি দিচ্ছে। এ ঘটনায় গত বুধবার (১৬ আগস্ট) লোহাগড়া থানায় জিডি করেছি। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লোহাগড়া থানার এসআই রানা প্রতাপ ঘোষ জানান, ছয় আসামির মধ্যে পাঁচজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আর বাদিপক্ষকে হুমকির বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।