শনিবার ● ৭ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » প্রযুক্তি » দেশেই নির্মিত হলো আরো ৪ যুদ্ধ জাহাজ
দেশেই নির্মিত হলো আরো ৪ যুদ্ধ জাহাজ
এস ডব্লিউ নিউজ ।
সমুদ্র সীমানায় নিরাপত্তা, সম্পদ আহরণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর চারটি যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ শেষ হয়েছে। নিশান, দুর্গম, হালদা ও পশুর নামের জাহাজগুলো নির্মাণে ৯৪২ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। খুলনা শিপইয়ার্ড আন্তর্জাতিকমানের এ যুদ্ধ জাহাজগুলো নির্মাণ করেছে। খুলনার খালিশপুরস্থ তিতুমীর নেভাল জেটিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আগামী ৮ নভেম্বর নবনির্মিত জাহাজগুলো উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।
নৌ-বাহিনী সূত্র জানায়, যুদ্ধ জাহাজগুলো পরীক্ষামূলকভাবে ভৈরব ও রূপসা নদীতে চলাচল করেছে। গত মঙ্গলবার যুদ্ধ জাহাজ বিএন দুর্গম বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। বিএন নিশানও পরীক্ষামূলক চলাচলের জন্য আগামীকাল শুক্রবার বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশ্যে রওনা হবে।
খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (উত্পাদন) ক্যাপ্টেন এম নুরুল ইসলাম শরীফ জানান, ৬৪ মিটার দৈর্ঘ্য, ৯ মিটার প্রস্থের বিএন নিশান ও দুর্গম নামের যুদ্ধ জাহাজ দু’টি নির্মাণে আটশ কোটি টাকা ব্যয় হয়। এই মানের জাহাজ বিদেশে তৈরি করতে এক হাজার কোটি টাকা খরচ হতো। জাহাজ দু’টি নির্মাণে ২৪ মাস সময় লেগেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। নৌ-বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদ গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর বিএন দুর্গমের লাঞ্চিং (পানিতে ভাসানো) প্রোগ্রামের সূচনা করেন। যুদ্ধ জাহাজ দু’টি নির্মাণে চীন কারিগরি সহায়তা দেয়। জাহাজ দু’টির প্রত্যেকটির ঘণ্টায় গতি বেগ ২৫ নটিকেল মাইল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, একই সঙ্গে ১৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন দু’টি টাগ বোট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই জাহাজগুলো সাবমেরিন চলাচলে সহায়তা করবে। হালদা ও পশুর নামের জাহাজ দুটির দৈর্ঘ্য ৩২ মিটার। মালয়েশিয়া এতে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে। যুদ্ধ জাহাজ দু’টিতে আধুনিক সামরিক সক্ষমতা এবং সাবমেরিনের বিরুদ্ধে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র ব্যবহারের সুবিধাও রয়েছে।
প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানায়, এর আগে খুলনা শিপইয়ার্ড পদ্মা, সুরমা, অতন্দ্র, অদম্য ও অপরাজেয় নামে পাঁচটি যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণ করে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে শিপইয়ার্ড ৬৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং গত অর্থবছরে ৭৯ কোটি টাকা লাভ করেছে। শিপইয়ার্ড এ পর্যন্ত ৭২৫টি জাহাজ নির্মাণ ও দুই হাজার ২২৪টি জাহাজের মেরামত কাজ সম্পন্ন করেছে।
প্রসঙ্গত, মৃতপ্রায় শিপইয়ার্ডটি ১৯৯৯ সালের ৩ অক্টোবর বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। রূপসা নদীর তীরে লবণচরা মৌজায় স্থাপিত শিপইয়ার্ডের বয়স ৬০ বছর। ১৯৫৭ সালে ৬৮ দশমিক ৫৭ একর জমির উপর এ জাহাজ নির্মাণ কারখানাটি স্থাপিত হয়।