সোমবার ● ১৬ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » যুদ্ধ নয়, আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব
যুদ্ধ নয়, আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব
ঢাকা ।।
যুদ্ধ নয়, আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটসহ সব সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন।বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের সদস্য ৩১টি ব্যাংকের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের জন্য তার হাতে চেক হস্তান্তরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
চেক গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী অ্যাসোসিয়েশনের উদ্দেশে বলেন, মানবিক কল্যাণে সবসময় এগিয়ে আসে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস। সম্প্রতি বন্যার সময় তারা জনগণের পাশে ছিল। এখন মিয়ানমার থেকে অত্যাচারিত হয়ে বাংলাদেশে আসা লোকদের সাহায্যেও এগিয়ে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তর সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যেমন অত্যাচার করেছিল, এরাও একই রকমের অত্যাচারের শিকার। একাত্তরে তিন কোটি বাঙালি গৃহহারা হয়েছিল, আর এক কোটি শরণার্থী হয়েছিল।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর শেখ হাসিনা তার বোন শেখ রেহানাসহ শরণার্থী হিসেবে দেশের বাইরে আশ্রয় নেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরাও শরণার্থী ছিলাম, এদের দুঃখ আমরা বুঝি।
মিয়ানমারের বিপুলসংখ্যক নাগরিককে আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এ ধরনের বিপদে মানুষ মানুষের পাশে না দাঁড়ালে সেটা হবে অমানবিক।
আশ্রয় নেওয়া মিযানমার নাগরিকদের সাহায্যে সশস্ত্র বাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ দেশের সর্বস্তরের প্রশাসন ও মানুষের আন্তরিক তৎপরতার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ স্থানে নিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সেখানে বহুমুখী সাইক্লোন সেন্টারসহ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
এই সংকট সমাধানের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা বিশ্বাস করি, আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব।
রোহিঙ্গাদের সমস্যা নিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের উত্থাপিত পাঁচ প্রস্তাবের আলোকেই এ সংকটের সমাধান সম্ভব বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি জঙ্গিবাদকে পুরো বিশ্বের সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আমাদের এখানেও জঙ্গিবাদী ঘটনা ঘটেছিল। আমরা তা দমন করেছি।
গত ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করলে প্রাণভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে থাকে রোহিঙ্গারা। সেদিন থেকে এখন পর্যন্ত সেখানকার ৫ লাখ ৩৭ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানাচ্ছে জাতিসংঘ। বিভিন্ন সংস্থার তথ্যমতে, অভিযানকালে প্রায় ৫ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।
জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা রোহিঙ্গাদের এই মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে শিগগির সমাধানের জন্য মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে।