রবিবার ● ২২ অক্টোবর ২০১৭
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » পাইকগাছায় ৩ দিনের ভারী বর্ষণে বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত; চিংড়ি ঘের ও আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
পাইকগাছায় ৩ দিনের ভারী বর্ষণে বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত; চিংড়ি ঘের ও আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
এস ডব্লিউ নিউজ ॥
পাইকগাছায় নিম্নচাপের প্রভাবে গত ৩ দিনের ভারী বর্ষণ ও ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর চিংড়ি ঘের ও আমন ফসলের জমি। ধ্বসে পড়েছে অসংখ্য কাঁচা ঘর-বাড়ী। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে পাউবো’র ওয়াপদার বেড়িবাঁধ। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা, বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে জনজীবন। সাগরে গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে এলাকার সর্বত্রই শুরু হয় ভারী বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া। যা বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ও ঝড়ের গতি কয়েকগুণ বেড়ে শুক্রবার ও শনিবার অব্যাহত থাকে। এতে এলাকার হাজার হাজার হেক্টর চিংড়ি ঘের ও আমন ফসলের জমি তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ধ্বসে পড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ অসংখ্য কাঁচা ঘর-বাড়ি। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার বিকাল পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গোটা এলাকা। ৩ দিনের ভারী বর্ষণে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয় স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। বিপর্যস্থ হয়ে পড়ে জনজীবন। স্থবির হয়ে পড়ে দৈনন্দিন সকল কার্যক্রম। কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়াদ্দার জানান, ভারী বর্ষণে কাশিমনগর, নাছিরপুর, রামনগর, রেজাকপুর, হাউলি, প্রতাপকাটী সহ কয়েকটি এলাকার শত শত বিঘা চিংড়ি ঘের ও আমন ফসলের জমি তলিয়ে যায়। এছাড়া মালথের গফফার গাজী, নজরুল জোয়াদ্দার ও বারইডাঙ্গার আজাদ মোড়ল সহ কয়েক জনের কাঁচা ঘর-বাড়ী ধ্বসে পড়েছে। দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল জানান, ২২নং পোল্ডারের বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে আমন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি পোল্ডারের ক্ষতিগ্রস্থ ওয়াপদার বাঁধ ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হক জানান, পাটকেলপোতা এলাকার পাউবো’র বেড়িবাঁধ ধ্বসে যায়, পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি প্রাথমিক মেরামত করা হয়। বেতবুনিয়া আবাসন প্রকল্পের দুই শতাধিক পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা সহ ইউনিয়নের ৩২টি গ্রামের বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গদাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী জুনায়েদুর রহমান জানান, চেঁচুয়ায় একটি ঘর ধ্বসে পড়েছে, গদাইপুর ও মেলেক পুরাইকাটী এলাকার শত শত বিঘা চিংড়ি ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। রাড়–লী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ গোলদার জানান, বাঁকা ও কাটিপাড়া এলাকার বিস্তির্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। আওয়ামীলীগনেতা জিএম ইকরামুল ইসলাম জানান, চাঁদখালী ইউনিয়নের ওড়াবুনিয়া, ঢেমশাখালী ও ফেদুয়ারাবাদ সহ কয়েকটি গ্রামের বিস্তির্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে শত শত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মেয়র সেলিম জাহাঙ্গীর জানান, গোপালপুর, বান্দিকাটী, সরল, বাতিখালী ও শিববাটী এলাকার অভ্যন্তরিন রাস্তাঘাট, চিংড়ি ঘের ও ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রায় শতাধিক হেক্টর আমন ফসলের জমি সম্পূর্ণ পানিতে তলিয়ে গেছে বলে স্বীকার করেছে। ভারী বর্ষণে ক্ষয়ক্ষতি সহ এলাকার সার্বিক পরিস্থিতির উপর বিশেষ নজর রাখা হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফকরুল হাসান ও উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাডঃ স ম বাবর আলী জানিয়েছেন।