বুধবার ● ২২ নভেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » অপরাধ » ডুমুরিয়ায় গফফার বাহিনীর হাতে শতাধিক হিন্দু পরিবার জিম্মি ঃ মুক্তির দাবিতে সম্মেলন
ডুমুরিয়ায় গফফার বাহিনীর হাতে শতাধিক হিন্দু পরিবার জিম্মি ঃ মুক্তির দাবিতে সম্মেলন
ডুমুরিয়া প্রতিনিধি।
নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির আঞ্চলিত নেতা ভুমিদস্যু আব্দুল গফ্ফার বাহিনীর অত্যাচারে খুলনা জেলার ডুমুরিয়ার বরুনা-দহকুলা গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। দেশ স্বাধীনের পর থেকে বিভিন্ন সময় এসন্ত্রাসীরা ভুমি দখল, ঘের দখল, মাছ লুটসহ বিভিন্নভাবে হুমকী-ধামকি দিয়ে আসছে। দুর্বৃত্তের আস্ফালনে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না। গত সপ্তাহখানেক আগে ওই বাহিনীরা বিলকুখসীর বিলে হিন্দুদের মৎস্য ঘেরে মাছ ধরতে আসলে ঘের মালিক সুনিল বিশ্বাস(৬২) বাঁধা দেয়ায় তাকে বেধড়ক মারপিট করে মাছ লুটে নিয়ে যায়। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় দুই গ্রামের তিন শতাধিক নারী-পুরুষ বরুনা পশ্চিমপাড়া পুজা মন্দিরের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেছে। এলাকাবাসীর পক্ষে শ্রীমন্ত মন্ডল(৭০) লিখিত বক্তব্যে বলেন, বহিরাগত সন্ত্রাসী যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার আব্দুল গফ্ফার গাজী(৪৫) বাহিনীর অত্যাচারে আমরা ডুমুরিয়া উপজেলার বরুনা-দহকুলা গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছি। তারা কয়েক যুগ ধরে গায়ের জোরে হিন্দুদের সম্পত্তি দখল, চাঁদাবাজী, জমির ফসল ও মাছের ঘের লুটসহ আমাদেরকে জীবন নাশের হুমকী দিয়ে আসছে। তাদের আস্ফালনে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না। যার ফলে ওই বাহিনীর কাছে আমরা কয়েক যুগ ধরে জিম্মি রয়েছি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, খুলনা জেলার সীমান্তবর্তী ডুমুরিয়া উপজেলাধীন বরুনা-দহকুলা গ্রাম। গ্রামের কোল ঘেষে বয়ে গেছে শ্রীহরি নদী। এ গ্রামবাসীর সমস্ত বিলান জমি রয়েছে যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলাধীন বিলকুখসীর বিলে। এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের জমি রয়েছে প্রায় ১২০ বিঘা। নদী পারাপার বিধায় ফসল ঘরে তুলতে অনেক কষ্টসাধ্য করতে হয় আমাদের। ২০০৩ সালে শ্রীহরি নদীতে জোয়ার-ভাটার গতি বৃদ্ধিসহ নাব্যতা ফিরে আনতে বিলকুখসীর বিলে টিআরএম প্রকল্প চালু করে সরকার। দীর্ঘ ৯টি বছর আমাদের জমির উপর দিয়ে জোয়ার-ভাটা বইতে থাকে। কিন্তু সরকারিভাবে কোন সুযোগ সুবিধা না পাওয়াতে আমরা অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে পড়ি দুই গ্রামের ৪ শতাধিক পরিবার। বিভিন্ন আন্দোলনের একপর্যায়ে জনগন স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে ২০১২ সালে নদীর মুখ বেঁধে টিআরএম প্রকল্প বন্ধ করে। জোয়ার-ভাটার ¯্রােতে নিজেদের সমতল জমি ভেঙ্গে বড় বড় খালে পরিণত হয়। যে কারণে বরুনা-দহকুলা গ্রামবাসী ঐক্যমতে প্রায় ২’শ বিঘা সম্পত্তি জুড়ে গন ঘের শুরু করে। নদী বাঁধের পর থেকে আবার ওই ভুমিদস্যুরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। নির্বিঘেœ হিন্দুদের সম্পদ লুট করছে তারা। প্রায়ই সময় আমাদের ওই গণঘেরের মাছ মেরে নিয়ে যাচ্ছে। অত্যন্ত প্রভাবশালী ও দাঙ্গাবাজ ব্যাক্তি হওয়াতে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না। রাতের বেলায় দলবল নিয়ে আমাদের ঘেরের বাসায় পাহাদারকে মারপিট করে এবং জীবন নাশের হুমকী দিচ্ছে। ইতোমধ্যে আমাদের প্রায় ২০/২২ বিঘা সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করেও নিয়েছে ওই সন্ত্রাসী আব্দুল গফ্ফার। এ বাহিনীর নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছে ভুক্তভোগী গ্রামবাসী। এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, ধামালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম গাজী, ইউপি সদস্য নুর ইসলাম, প্রল্লাদ সরকার, কমলেশ মন্ডল, অজিত মন্ডল, পূর্নচন্দ্র মন্ডল, রবীন্দ্রনাথ মন্ডল, বিকাশ মন্ডল, পশুপতি সরকার, সুনিল বিশ্বাস, কালীপদ বিশ্বাস, শংকর মন্ডল, জীতেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, চৈতন্য বিশ্বাস, গৌর বিশ্বাস, ভুবন মন্ডল, বিনয় মন্ডল প্রমুখ।