শনিবার ● ২ ডিসেম্বর ২০১৭
প্রথম পাতা » কৃষি » কলার মোচা নানা পুষ্টিগুণে ভরা জাতীয় সবজী
কলার মোচা নানা পুষ্টিগুণে ভরা জাতীয় সবজী
প্রকাশ ঘোষ বিধান ॥
বাংলাদেশে বারমাসী সবজীগুলোর মধ্যে কলার মোচা হলো জাতীয় সবজী। সারা বছর কলার মোচা পাওয়া যায়। আমাদের দেশের সব অঞ্চলে কলাগাছ জন্মায় এবং এর ফলনও সহজেই হয়। তেমন কোন যত্নের প্রয়োজন হয় না। কলাগাছ নিজে থেকে বেড়ে ওঠে। গাছে ঝুলে থাকা কলার কাঁদির একেবারে শেষ প্রান্তে থাকা না ফোটা ফুল কুঁড়ির নাম হলো মোচা। মোচার অগ্রভাগ সূঁচালো। মোচা বাইরে থেকে পরপর খোলার দ্বারা ঢাকা থাকে। এর খোলাটি দেখতে গাড় লাল রঙের।
কলার মোচা ভর্তা, ভাজি ও ভুনা করে খাওয়া যায়। চিংড়ি মাছ দিয়ে কলার মোচা খেতে খুবই সুস্বাদু ও মুখরোচক। মোচা বা থোড় কেটে পরিষ্কার করে নিতে হয়। কলার ফুলের মাঝে কাটির মত শক্ত দন্ডটি বের করে ফেলতে হয়। তারপর ছোট ছোট টুকরা করে রান্না করতে হয়। কলার মোচা দিয়ে নানা পদের রান্না করা যায়।
কলার মোচার সবজীতে পুষ্টি উপাদান বেশী। মোচা দেখতে সুন্দর তেমনি খেতেও সুস্বাদু। পুষ্টিতে অতুলনীয়, প্রতিটি ১০০ গ্রাম মোচায় রয়েছে- প্রোটিন ১.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩২ মিঃ গ্রাম,কার্বোহাইড্রেট ৫.১ গ্রাম, ফসফরাস ৪২ মিঃ গ্রাম, ভিটামিন ‘এ’ ২৭ আই ইউ লৌহ ১.৬ মিঃ গ্রাম, ফ্যাট ০.৭ গ্রাম, পটাশিয়াম ১৮৫ মিঃ গ্রাম, ভিটামিন ৪২০ মিঃ গ্রাম, আঁশ ১.৩ গ্রাম, থায়ামিন .০৫ মিঃ গ্রাম। তাছাড়া মোচায় কার্বোহাইড্রেট ও প্রেটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় দেহ গঠনের কাজে সাহায্য করে। মোচায় লৌহ থাকায় এটি থেলে অ্যানিমিয়া বা রক্ত স্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে, মোচার আঁশে হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করে। মোচায় ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকায় শিশুদের দাঁত ও হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। পটশিয়াম থাকায় হাই ব্লাডপ্রেসার কমে। কলার মোচা হজমে, ডায়বেটিস, পিত্ততে খুবই উপকারি। কলার মোচাভর্তা খেলে নাক দিয়ে রক্তা পড়া বন্ধ হয়, পেটের অসুখ, মেয়েদের শ্বেত ও রক্তপ্রদর রোগে উপকারী।
দামকম বলে গ্রাম অঞ্চলের অনেকেই কলার মোচা খেতে অবহেলা করে। অথচ কলার মোচায় পুষ্টিগুণ ও ঔষধিগুণ অনেক বেশী। কলার মোচা সারা বছর বাজারে পাওয়া যায়। গ্রামের হাট-বাজারের তুলনায় শহরের বাজারে কলার মোচা যেমন বেশী পাওয়া যায় তেমন চাহিদাও বেশী।