শনিবার ● ১০ ফেব্রুয়ারী ২০১৮
প্রথম পাতা » লাইফস্টাইল » ডুমুরিয়ায় শুধু চা-বাদাম খেয়ে ২০ বছর জীবিকা নির্বাহ করে আসছে সেবিকা লিপিকা
ডুমুরিয়ায় শুধু চা-বাদাম খেয়ে ২০ বছর জীবিকা নির্বাহ করে আসছে সেবিকা লিপিকা
অরুন দেবনাথ, ডুমুরিয়া।
ডুমুরিয়া হাসপাতালের সিনিয়র নার্স (সেবিকা) লিপিকা হালদার।চির কুমারী এই নার্স প্রতিদিন শুধ ুমাত্র দু‘কাপচা ও ১‘শ গ্রাম বাদাম খেয়ে গত ২০বছর যাবত জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।সম্প্রতি দিনে দিনে রুগ্ন হয়ে পড়ছেন তিনি।তবুও জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এ ভাবেই জীবন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।তবে তার অর্জিত সকল অর্থ দিয়ে একটি অনাথ আশ্রম গড়ে তুলবেন এটাই তার শেষ ইচ্ছা বলেও জানান তিনি। লিপিকা উপজেলার বান্দা এলাকার মৃত সখী চরন হালদারের মেয়ে।লিপিকা নিজে একজন সেবিকা হয়ে কেন ভাত,রুটি,মাছ,মাংশ না খেয়ে ২০ বছর জীবিকা নির্বাহ করে আসছে ? কেনই বা এমন সিন্ধান্ত বেছে নিলেন তিনি ?এমন প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হয়ে কেনই বা নিজের জীবনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে
নিচ্ছেন তিনি।এ সব প্রশ্নের জবাব মিলাতে কথা হয় লিপিকা ও তার সহকর্মীদের সাথে। তিনি জানান পারিবারিক ভাবে ৫ বোন ও ৩ ভাইয়ের মধ্যে ৬ষ্ট তিনি।লেখা পড়া শেষে ১৯৯৮ সালের ১৪ জুন তিনি সেবিকা পদে চাকুরীতে যোগদান করেন। যোগদানের দু‘বছর আগে তিনি একদিন রাতে ঘুমের ঘরে জানতে পারেন প্রতি দিন শুধু দু‘কাপ চা ও বাদাম খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করলে তার মঙ্গল হবে।এরপর থেকে তিনি মাছ-মাংশ খেতে থাকলে তার শরীর খারাপ হতে থাকে। সেই থেকে অদ্যবধি শুধু চা-বাদাম খেয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তিনি।তিনি আরো জানান এখন ভাত-মাছ-মাংশ দেখলে ঘৃনা হয় তার। দিনে দিনে শরীর খারাপ হয়ে পড়লেও অভ্যাসে পরিনত হয়েছে,কোন কষ্ট হয় না তার। কথা হয় সহকর্মী ডুমুরিয়া হাসপাতালে কর্মরত নার্স মেহেরুন নেছা,অনিতা মন্ডল ও সঞ্জনা বৈরাগীর সাথে তারা জানান মানুষের সেবায় লিপিকা সর্বদা নিয়োজিত থাকেন।হাসপাতালে ডিউটি না থাকলেও উপস্থিত থাকেন তিনি। কিন্তু নিজের শরীর ও জীবনের দিকে লক্ষ্য নেই তার। দিনে দিনে যেন ঝিমিয়ে যাচ্ছে। তাকে ফল খেতে বললেও খেতে রাজি নয়।এ ভাবে কি জীবন চলে।এখন আর কিছুই বলিনা। লিপিকার অর্জিত অর্থ দিয়ে কি হবে ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমি তো না খেয়েই মারা যাচ্ছি,তবে যেন কিছু অনাথ যেন আমার অর্থায়নে গড়ে তোলা “অনাথ আশ্রমে“ ঠাই পেয়ে বেচে থাকতে পারে এটাই আমার শেষ ইচ্ছা।