মঙ্গলবার ● ৬ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » জনপ্রতিনিধিদের ইচ্ছাপূরণে পাইকগাছার গদাইপুর মৌজায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ বাস্তবায়ন হচ্ছে
জনপ্রতিনিধিদের ইচ্ছাপূরণে পাইকগাছার গদাইপুর মৌজায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ বাস্তবায়ন হচ্ছে
এস ডব্লিউ নিউজ ॥
নীতিমালা এড়িয়ে জনপ্রতিনিধিদের ইচ্ছাপূরণে কর্তৃপক্ষ গদাইপুর মৌজায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন বাস্তবায়ন করতে চলেছে। জমির মালিকদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ও আবেদনকে উপেক্ষা করে জনপ্রতিনিধিদের ইচ্ছা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। উল্লেখ্য, সলুয়া মৌজায় পাইকগাছায় টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ বাস্তবায়নের জন্য প্রথম স্থান পছন্দ করা হয়। আর গদাইপুর মৌজা তৃতীয় পছন্দের স্থান। তবে প্রথম পছন্দের স্থান সলুয়াকে বাদ দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের ইচ্ছা পূরণে গদাইপুর মৌজায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন করা হচ্ছে। পাইকগাছা উপজেলার সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র সে সময় তিনি জানিয়েছিলেন, সলুয়া মৌজায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ৩টি প্রস্তাব পাঠানোর জন্য সর্বশেষ গদাইপুর মৌজার নাম রাখা হয়েছে। তবে সরকারি এ ধরণের স্কুল নির্মাণের জন্য দুরত্বে বিষয় নীতিমালায় গদাইপুর মৌজা পড়ে না। তারপরও নাম রাখা হয়েছে। তবে এখানে স্কুল নির্মাণ হবে না বলে তিনি সে সময় জানিয়ে ছিলেন। স্কুল নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণের শুরু থেকে প্রকৃত জমির মালিকরা এই বিষয়ে জানতে পারে না। প্রকৃত মালিকদের না জানিয়ে এসএ খতিয়ানের মালিকদের নোটিশ প্রদান করা হয়। তাছাড়া খুলনা জেলা এলএ শাখা থেকে স্থানীয় জমির মালিকদের নামে যে নোটিশ প্রদান করার জন্য খুলনা অফিস থেকে যে কর্মচারী পাইকগাছায় নোটিশ প্রদান করতে আসেন তিনি নোটিশ প্রতি ২ থেকে ৪শ টাকা গ্রহণ করেন। টাকা না দিলে নোটিশ প্রদান করেন না। খুলনা থেকে নোটিশ নেওয়ার জন্য বলে চলে যান। এসব কারণে প্রকৃত জমির মালিকরা জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি প্রথমে জানতে পারেনি। পরবর্তীতে জমির মালিকগণ বিষয়টি অবগত হলে জমি না দেওয়ার জন্য আপত্তি প্রদান করে খুলনা জেলা প্রশাসক ও খুলনা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর আবেদন করেন। তবে জমির মালিকদের আবেদনে সাড়া না দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের ইচ্ছা পূরণে কর্তৃপক্ষ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ বাস্তবায়ন করতে চলেছে। উক্ত স্থানটি আবাসিক এলাকার মধ্যে এবং নির্ধারিত স্থানের মধ্যে বসতবাড়ীও রয়েছে। বর্তমানে গদাইপুর মৌজার টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের নির্ধারিত জায়গার বর্তমান বাজার মূল্য শতক প্রায় ১ লক্ষ টাকা। যা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তারা ৪০ হাজার টাকার কম নির্ধারণ করে জমির দাম নির্ধারণ করেছেন। তাছাড়া ৬৬৮ দাগের ঘোষ পরিবারের ৩৫ শতক ও ঋশি পরিবারে ৬৬৭ দাগে ১৬ শতক জমির মধ্যে যে সকল গাছ রয়েছে তার মূল্য নির্ধারণ না করে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ইতিপূর্বে গদাইপুর মৌজার তফসিল বর্ণিত সম্পত্তির ২১৯ ও ২৫০ খতিয়ানের ৬৬৮ ও ৬৬৭ দাগের জমির মালিক ঋশি পরিবার ও ঘোষ পরিবার পক্ষ থেকে খুলনা জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে। কলেজের জন্য অধিগ্রহণকৃত উক্ত জমির মালিকদের সম্পত্তি ইতোপূর্বে বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামার স্থাপনের সময় ১৯৫৪ সালে ঋশি পরিবারের ১০ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অধিগ্রহণকৃত জমিতে ঋশিদের বসতভিটা ও উপসানলয় রয়েছে। আর ঘোষ পরিবারের জমিতে অনলাইন নিউজ পোর্টাল এস ডব্লিউ নিউজ ২৪ ডটকম এর নিজস্ব কার্যালয় নির্মাণের প্রস্তুতি ছিল। দুই পরিবারের জমি ইতোপূর্বে অধিগ্রহণ হওয়ায় মানবিক কারণে তাদের উভয় পরিবারের জমি বাদ দিয়ে বা অন্য দাগের সঙ্গে সমন্বয় করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপনের সুযোগ রয়েছে। এ বিষয় উভয় পরিবারের জমির মালিকরা উক্ত দাগের জমি সমন্বয় বা অধিগ্রহণ না করার জন্য এবং এ্যালোটমেন্ট বদল করে ভূমি অধিগ্রহণ করার জন্য দুই পরিবারের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক ভাবে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়ার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারপরও জমির মালিকদের আবেদনে নন্মুতম মূল্যায়ন না করে জনপ্রতিনিধিদের ইচ্ছা পূরণ করা হচ্ছে বলে জমি দিতে অনিচ্ছুক মালিকগণ জানিয়েছে। এ বিষয়ে পাইকগাছা টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের জন্য প্রথম নির্ধারিত জায়গা সলুয়া মৌজাকে বাদ দিয়ে যে সকল জনপ্রতিনিধিদের ইচ্ছায় গদাইপুর মৌজায় স্থাপন করা হচ্ছে সে সকল জনপ্রতিনিধিদের অধিগ্রহণ এলাকায় তাদের কোন জমি নাই। নীতিমালা এড়িয়ে ও জনপ্রতিনিধিদের ইচ্ছা পূরণে গদাইপুর মৌজায় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ স্থাপন করায় এ অঞ্চলের সরকারের অনেক সাফল্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। স্থানীয় এবং জেলা প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় জমির মালিকগণ প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।