বৃহস্পতিবার ● ২২ মার্চ ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে হবে, সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী
এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে হবে, সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী
এস ডব্লিউ নিউজ।
বাংলাদেশের উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে, সেটা যেন অব্যাহত থাকে, যেন থেমে না যায়, সেজন্য দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ সহযোগিতা কামনা করেন। স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশের যোগ্যতা অর্জনে প্রধানমন্ত্রীকে সংবর্ধনা দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে বলেছিলেন, বাঙালিকে দাবায়ে রাখতে পারবা না, সেটা আজ প্রমাণ হয়েছে। কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি। আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছি। উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে, তা যেন অব্যাহত থাকে, যেন থেমে না যায়, সেজন্য দেশবাসীর কাছে সহযোগিতা চাই।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, মানুষ নানা কারণে রাজনীতি করে। কেউ রাজনীতি করে নিজের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য, নিজের সমৃদ্ধ জীবনের জন্য। আমি রাজনীতি শিখেছি বাবার কাছ থেকে, জনগণের ভাগ্যোন্নয়ন করতে। নিজের ভাগ্যোন্নয়ন করতে নয়।
বাংলাদেশের এ যোগ্যতা অর্জনে আওয়ামী লীগ ও এর নেতৃত্বে গঠিত সরকারের কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকার গঠনের পর বেশি গুরুত্ব দিই গ্রামের দিকে। তৃণমূল পর্যায়ে আমরা উন্নয়নমূলক কাজ শুরু করি। এর পাশাপাশি খাদ্য কর্মসূচি, বাসস্থানের জন্য গুচ্ছগ্রাম ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থা করি। পাশাপাশি ঢাকার বস্তিগুলোর দিকেও নজর দেই। বস্তির মানুষগুলোকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ব্যবস্থা করে দিই। তাদের জীবনযাত্রার উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিই।
‘স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের ব্যবস্থা করি। সেইসঙ্গে শিক্ষাখাতে আমরা গুরুত্ব দেই। শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি উন্নতি করতে পারে না। এজন্য আমরা বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ, বিনামূল্যে বই বিতরণ শুরু করি। এর পাশাপাশি প্রযুক্তির ওপর নজর দিই। এখন এই দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। কৃষিখাতে আমরা গুরুত্ব দিয়ে কৃষকদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা করি। তাদের বীজ ও সার
সরবরাহ করি। কৃষির ওপর পড়াশোনার জন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিই। এমন বহুমুখী উদ্যোগ আমরা নিয়েছি জনগণের কল্যাণে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছি বলে আজ সফল হয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারে থেকে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা রেখেছি। কিন্তু উন্নয়নে কাজ করেছেন এ দেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষ আর সরকারি কর্মকর্তারা। এর পেছনে যারা কাজ করেছেন তাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। সব শ্রেণী-পেশার মানুষকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পে যেসব বন্ধুপ্রতীম দেশ সহায়তা করেছে তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে জাতির পিতা যেখানে রেখে গিয়েছিলেন সেখান থেকে আমরা এক ধাপ এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো আরও আগে আমরা এই অর্জন পেতাম। এই অর্জন আমাদের ধরে রাখতে হবে। বাঙালি জাতি যুদ্ধ করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে। আমরা মাথা উঁচু করে চলতে চাই। আমরা কেন অন্যের কাছে হাত পেতে থাকবো? আমরা যে পারি তা আজ প্রমাণ করেছি।
এ সফলতা অর্জনে জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা আমাদের নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছেন বলেই আজ বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা সম্ভব হয়েছে। সামনের দিনেও এই সহযোগিতা আমরা চাই। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রা বজায় থাকলে ২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের সারিতে পৌঁছাবো।
বক্তৃতার আগে প্রধানমন্ত্রী স্মারক ডাকটিকিট ও ৭০ টাকা মূল্যের স্মারক নোট অবমুক্ত এবং সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের ফটো অ্যালবামের উদ্বোধন করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতে শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ক্রীড়াবিদসহ সমাজের বিশিষ্ট অঙ্গনের ব্যক্তিত্বরা।