বুধবার ● ৪ এপ্রিল ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » ডুমুরিয়ায় জ্বীনের বাবা অশোক মুখে আগুন দিয়ে চিকিৎসা করছেন যুবক-যুবতীদের ঃ ঠকছে সাধারণ মানুষ
ডুমুরিয়ায় জ্বীনের বাবা অশোক মুখে আগুন দিয়ে চিকিৎসা করছেন যুবক-যুবতীদের ঃ ঠকছে সাধারণ মানুষ
ডুমুরিয়া প্রতিনিধি।
খুলনার ডুমুরিয়ায় আমভিটা ঘোনা এলাকায় কথিত জ্বীনের বাবা অশোক কবিরাজ যুবক-যুবতী ছেলে মেয়েদের হাত-পা বেধেঁ লাঠি পিটা,মুখো মন্ডলে ভিজা গামছা পেচিয়ে ও মুখে আগুন দিয়ে জ্বীন -ভুতের চিকিৎসা করে আসছেন। শুধু তাই নয় মনের মানূষকে খুঁজে পেতে, স্বামী বিরাহ রোধ, বাড়ি বন্ধনাসহ ক্যানসার থেকে শুরু করে সকল রোগের চিকিৎসার নামে সাধারন মানূষের নিকট থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। কে এই কথিত জ্বীন-ভুতের বাবা? আর কোথায় বা পেলেন তিনি আলাদীনের চেরাগ? আর কি বা তার শিক্ষাগতা যোগ্যতা? এমন প্রশ্নের জবাব খুঁজতে রোগী বেসে অবস্থান নেয়া হয় ভন্ড বাবার দরবারে। সে দিন ছিল গত মঙ্গলবার দুপুর বেলা।ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখা যায় প্রায় দেড় শতাধিক মধ্য বয়সী হিন্দু, মুসলিম মহিলাসহ কলেজ পড়–য়া মেয়েরা অপেক্ষায় আছে জ্বীন বাবার সাক্ষাৎ পেতে।পালা ক্রমে দেখা হচ্ছে রোগী। এর মধ্যে এক যুবককে দেখা যায় মাটির সাথে শুয়ে কান্না-কাটাসহ চিৎকার করতে।ভন্ড বাবা এলেন ওই যুবকের পাশে।তখন বাবার সহযোগীরা একটি বড় ব্যাগ নিয়ে আসেন বাবার কাছে। এরপর বাবা ওই যুবকের হাত-পা দড়ি দিয়ে বেধেঁ নিলেন।পরে ব্যাগ থেকে একটি বড় লাঠি বের করে ওই যুবকে বেপরোয়া ভাবে পিটাতে থাকেন। এরপর একটি ভিজা গামছা ওই যুবকের মুখো মন্ডলে বেধেঁ মুখে আগুন দিতে থাকেন।যন্ত্রনায় চিৎকার করতে থাকে ওই যুবক।অশোক কবিরাজ নিজেকে জ্বীন ভুতের বাবা দাবি করে বলতে থাকেন, “এর ঘাড় থেকে যাবি কি না বল?” এক পর্যায়ে প্রায় ৩০ মিনিট নির্যাতন শেষে যুবক বলেন আমি এর ঘাড় থেকে চলে যাব। এমন প্রতিশ্রুতির পর বাঁধন খুলে তাকে মুক্ত করা হয়। লোম হর্ষক এই কাহিনী দেখে উপস্থিত সকলে হতবাক।এরপর ১হাজার টাকা দিয়ে বিদায় নেন যুবক। কথাহয় ওই যুবকের সাথে।তিনি জানান নাম তার কমলেশ ঢালী,পিতা- ধীরেন ঢালী, সাং-ফুলবাড়ি গেট এলাকার তেলিগাতি গ্রাম। জ্বীন ভুত লেগেছিল তার ঘাড়ে এমনটি জানালেন তিনি।কথা হয় খুলনার রোগী রুনার সাথে তিনি জানান বলা যাবে না এমন কিছু সমস্য নিয়ে এসেছি।এখানে চিকিৎসায় কেমন খরচ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনিসহ অনেকেই জানান ৫‘শ/হাজার দিলেই চলে।এরপর দীর্ঘক্ষণ প্রতিক্ষার পর কথা হয় জ্বীন বাবার সাথে। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন আশোক মল্লিক(৫৫) ফকির/ কবিরাজ/ জ্বীন বাবাসহ যে যে নামে ডাকে। পিতা মৃত্যু শিশির মল্লিক,সাং আমভিটা ঘোনা। শিক্ষাগতা যোগ্যতা অষ্টমশ্রেনী। তাও আবার সার্টিফিকেট নেই। যুবক-যুবতী ছেলে মেয়েদের হাত-পা বেধেঁ লাঠি পিটা, মুখো মন্ডলে ভিজা গামছা পেচিয়ে ও মুখে আগুন দিয়ে জ্বীন -ভুতের চিকিৎসা বিদ্যা আপনি কোথায় পেয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জ্বীনের বাবা দাবি করে বলেন এটি আমার পাকিস্তান আমলে আয়ত্ব করা। এছাড়া মনের মানূষকে খুঁজে পেতে, স্বামী বিরাহ রোধ,বাড়ি বন্ধনাসহ ক্যানসার থেকে শুরু করে সকল রোগী চিকিৎসায় পারদর্শী দাবি করে তিনি বলেন ঝাড়, ফুক, গাছ, গাছড়া, ড্রাগ ও কবিরাজি সিরাপও তিনি ব্যবহার করে আসছেন। এত অল্প বিদ্যায় এতকিছু কি ভাবে সম্ভব? এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি আরো বলেন কাজ না হলে কি আর শতশত রোগী আসতো। এ প্রসংগে কথা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এএসএম মারুফ হাসানের সাথে।এমন চিকিৎসার বর্ননা শুনে তিনি জানান আধুনিক যুগের মানূষ যদি নির্বোধের মত ঘরের টাকা পরকে দেয় তাহলে কি করার আছে।তবে প্রশাসনিক ভাবে এসব ভন্ডদের আটক করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন না করলে সাধারন মানূষেরা যেভাবে ঠকছে, এভাবে ঠকেই যাবে, আশু প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।