বৃহস্পতিবার ● ৩ মে ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » মাগুরার মিষ্টি পান যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে
মাগুরার মিষ্টি পান যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে
মাগুরা প্রতিনিধি : মিষ্টি পান বলে সুখ্যাতি রয়েছে দক্ষিনাঞ্চলের অন্যতম জেলা মাগুরার। তবে গত শীতে প্রচন্ড কুয়াশাতে সারা দেশে পানের বোরজে যে ক্ষতি হয়েছিল তার প্রভাব দ্বিগুন দর এখন পানের বাজারে। খারাপ আবহাওয়ার প্রভাবে মাগুরা জেলার শ্রীপুরের ৭ শতাধীক এর বেশি পান চাষীর কপালে ও চলছে এখন শনির দশা যেন। মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার গাঙনালিয়া এলাকার গোপিনাথপুর,মোতজাপুর,মসল্লাপুর বরিশাট.মোস্তফাপুর এলাকায় পান চাষ হয় প্রাচীনকাল থেকেই। পান চাষের জন্য এলাকায় রয়েছে ৭০০ এর বেশী চাষী এবং গাঙনালিয়া বাজারেই রয়েছে ৮ টি পানের আড়ৎ ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শ্রীপুরের পান চাষের এসব এলাকায় চলছে একটা মন্দা ভাব শীত মৌসুমের পর থেকেই। আড়ৎদার দীপক সাহা গাঙনালীয়া বাজারে দীর্ঘদিন ব্যবসা করছেন কিন্তু গত শীত মৌসুমে অত্যাধিক ক’য়াশাতে পানের বোরজে ক্ষতি চাষীরা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেন নি । সে কারনে আড়তে পানের চালান অনেক কম। ফলে দেশের নানা প্রান্তে মাগুরার পানের চাহিদা থাকা সত্তেও যোগান দিতে পারছেন না এখানকার আড়ৎদাররা। তারা বলেন এখানে বরিশালের পান এখন বাজার ধরে রাখছে। তবে বরিশালের পানের স্বাদ টক বিধায় মাগুরার পানের চাহিদা বাজারে রয়েই গেছে।
পান চাষী হারুন অর রশিদ জানান, তিনি ২৫ বছরের বেশী সময় ধরে পান চাষ করছেন। সংসারে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া সহ জীবন নির্বাহের একমাত্র আয়ের উৎস পান চাষ । তিনি আরো বলেন,পানের বাজার এখন অনেকটা অশান্ত কারন পানের বোরজে নতুন পান উঠতে সময় লাগবে আরো দুতিনমাস।
এছাড়া গোপিনাথপুর,মসল্লাপুর এর অনেক চাষী বলেন, এ অঞ্চলে পানের চাষ ক্রমান্বয়ে পচন ও চিটা রোগের কারনে হ্রাস পাচ্ছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে এসব এলাকায় গত পনের বছরে ৩০ বিঘা জমিতে পান চাষ হয় না শুধু পানের মরকের কারনে।
এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের কোন সহযোগীতা তারা পান নি ফলে কমে যাচ্ছে পান চাষ উক্ত এলাকাগুলোতে। চাষীরা মনে করেন পানের কয়েকটি মরক এর দেখভাল যদি কৃষি বিভাগ করতে পারে তাহলে এ অঞ্চলে ব্যাপক সাড়া জাগাবে অনেকের মধ্যে আবারো পান চাষে । পানের বোরজে প্রাথমিক অবস্থায় মূলধনের সমস্যায় অনেক পান চাষীই স্থানীয় মহাজনদের থেকে সহযোগীতা নেন। কিন্তু পান বিক্রি করতে গেলে ঋন নেয়ার বাধ্যবাধকতায় অনেক সময় সঠিক মূল্য মহাজনরা দেন না ফলে একরকম বাধ্য হয়েই তাদের লস গুনতে হয়। তাদের যদি স্বল্প শর্তে ঋন দেয়া যেত স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তাহলে পান চাষে তাদের আর কোন বাধা থাকতো না।
এলাকার পানের স্থানীয়রা আরো জানান ,ঝিনাইদহ,কুষ্টিয়া থেকে পানচাষীরা আসে এখানে পাইকারী দরে বিক্রি পান করতে। এখানে যদি মাগুরার চাষীদের সহযোগীতা প্রশাসন থেকে করা হয় তাহলে এখানে বড় একটা পানের বাজার হতে পারে যা উক্ত এলাকার অনেক বেকার মানুষের ভাগ্য বদলাবে।