মঙ্গলবার ● ৫ জুন ২০১৮
প্রথম পাতা » কৃষি » সারাদেশে সমাদৃত হয়েছেন মাগুরা শালিখার আতিয়ার
সারাদেশে সমাদৃত হয়েছেন মাগুরা শালিখার আতিয়ার
এস আলম তুহিন, মাগুরা থেকে ॥
মাগুরায় নতুন আমের জাত ”ইয়াসমিন ’ উদ্ভাবন করে সারাদেশে সমাদৃত হয়েছেন মাগুরা শালিখার আতিয়ার রহমান । প্রতিটি আম ২ কেজি থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে । যার গড় ওজন ৩ কেজি । আমে আশ ঁনেই বললেই চলে ।
সরেজমিন মাগুরা শালিখার শতখালি গ্রামে আতিয়ার রহমানের নিজ উদ্যোগে গড়া নার্সারীতে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে দেশি ও বিদেশি জাতের বিভিন্ন ফলের জাত রয়েছে । আবার কিছু অংশে রয়েছে ফুলের চাষ । বিশেষ সাম্প্রতিক সময়ে তিনি নিজ গবেষণায় নতুন একটি আমের জাত “ইয়াসমিন” উদ্ভাবন করে ব্যাপক ভাবে সমাদৃত হয়েছেন । নতুন এ আমের চারাটি কিনতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বৃক্ষপ্রেমী মানুষ এসেছে তার নার্সারিতে । এই চারাটি একাধিবার শালিখা উপজেলা কৃষি মেলায় প্রর্দশিত হয়ে কুড়িয়েছে প্রশংসা ,পেয়েছে পুরস্কার । কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ঊক্ত চারাটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় কৃষি মেলায় স্থান পেয়েছে । সেখানেও অর্জন করেছে প্রশংসা ।
আতিয়ার রহমান জানান , তার এক ভাতিজা থাকে ব্রনাই ।সেখানে রাজ পরিবারের বাগানে জন্মে ব্রনাই আম । তিনি শখ করে সেখান থেকে কিছু আম নিয়ে আসে । তারপর সে কয়েকটি আম আমাকে দেন । পরবর্তীতে সেই ব্রনাই কিং আমের আটি থেকে গাছ তৈরি করে নতুন আমের জাত উদ্ভাবন করি ।
তিনি আরো বলেন, মাগুরা হর্টি কালচারের কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতায় আমি নতুন এ জাত টি নিয়ে আরো গবেষণা করি এবং পরবর্তীতে সফল হই । নতুন এ আমের জাত টি রোপনের ২ বছর পরই আম ধরে । প্রতিটি আম খুব মিষ্টি ও আশঁ মুক্ত । যার প্রতিটির গড় ওজন ৩ কেজি । এটি শ্রাবণের শেষের দিকে পাকে ।
তিনি আরো জানান , বৈশাখ থেকে আষাঢ় মাসের মধ্যে এ চারাটি রোপন করতে হয় । এ আমের তিনটি বৈশিষ্ট্য যথা - গড় ওজন ৩-৪ কেজি , শ্রাবণের শেষের দিকে পাকে ও ফলন খুবই ভালো ।
আতিয়ার বলেন ,১৯৯২ সালে নিজস্ব উদ্যোগে ১০ শতক জমিতে শুরু করি নার্সারী । প্রথমেকোন পুঁজি ছিল না । ঘরের একটি ছাগল ৩০০ টাকায় বিক্রি করে শুরু করি এ নার্সারি । অনেক কষ্ট ও পরিশ্রম করে ভালো অবস্থানে দাড় করিয়েছি নার্সারি । বর্তমানে এ নার্সারি ১০ শতক পেরিয়ে ২০০ একর জমিতে রুপান্তরিত করেছি । এখান থেকে নিজে গবেষণা করে উদ্ভাবন করেছি নতুন আমের জাত । যা নিজের মেয়ের নাম “ইয়াসমিন” নামে পরিচিত করিয়েছি । উদ্ভাবিত এ চারাটি ৩০০-৫০০ টাকায় বিক্রি করছি । প্রতি বছর এ চারা থেকে আমি ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা অর্জন করছি ।
তিনি আরো গর্ব করে বলেন , আমি এখন কমলা ফল নিয়ে গবেষণা করছি । নিজ নার্সারীতে অনেক কমলা ফল আমি লাগিয়েছি ।
মাগুরা হর্টি কালচার বিভাগের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, তার উদ্ভাবিত এ চারা টি খুবই ভালো । আমরা তাকে পরামর্শ দিচ্ছি । তার গবেষণার কাজে সহযোগিতা করছি । ভবিষ্যতে সে আরো ভালো কিছু করতে পারবে ।