বুধবার ● ৬ জুন ২০১৮
প্রথম পাতা » বিবিধ » ডুমুরিয়ার চুকনগরে দুটি খাল অবশেষে অবমুক্ত করা হল ২ ইউপি চেয়ারম্যানের প্রচেষ্টায়।
ডুমুরিয়ার চুকনগরে দুটি খাল অবশেষে অবমুক্ত করা হল ২ ইউপি চেয়ারম্যানের প্রচেষ্টায়।
অরুন দেবনাথ, ডুমুরিয়া ॥ ডুমুরিয়ায় অবশেষে অবমুক্ত করা হল দীর্ঘদিন দখলকৃত চুকনগরের দুটি খাল। বুধবার সকাল ৯টায় উপজেলার আটলিয়া এবং মাগুরাঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের দুই চেয়ারম্যান এলাকার হাজার হাজার মানুষকে সাথে নিয়ে খাল দুটি অবমুক্ত করা শুরু করেন। উল্লেখ্য,উপজেলার আটলিয়া ও মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের নোনাডোরা ও বিষের খাল দু’টি দীর্ঘদিন ধরে এলাকার প্রভাবশালী মহল দখল করে রেখেছে। প্রথম দিকে পাটা ও নেট দিয়ে মাছ চাষ করলেও সম্প্রতি খালের মধ্য দিয়ে আড়া আড়ি বেড়ি বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা শুরু করছে তারা। এর ফলে দুটি ইউনিয়নের প্রায় ২০টি বিলের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। এলাকার কৃষকরা পানিবদ্ধতার তাদের জমি চাষাবাদ করতে পারে না। এসব কারনে খাল দু’টি থেকে বাঁধ অপসারনের দাবি জানিয়ে আসছে এলাকার আপামর জনসাধারন। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রানীসম্পদ মন্ত্রীর নির্দেশনা থাকলেও অদৃশ্য কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি। এলাকাবাসী জানায়,উপজেলার আটলিয়া ও মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নোনাডোরা ও বিষের খাল। প্রায় চার কিলোমিার দির্ঘ এই দুটি খাল দিয়ে ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের পানি কুলবাড়িয়া সøুইস গেট দিয়ে ঘ্যাংরাইল নদীতে পড়ত। কিন্তু কয়েক বছর ধরে খাল দুটিতে বাঁধ দেয়ার কারনে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ব্যহত হয়ে গ্রাম গুলিতে মৌসুমি পানি বদ্ধতার সৃষ্টি হয়। খোজ নিয়ে জানা গেছে আটলিয়া ইউনিয়নের মালতিয়া, চুকনগর দক্ষিনপাড়া, চাকুন্দিয়া, কুলবাড়িয়, উড়াবুনিয়া, গাদর চক, মাগুরাঘোনা ইউনিয়নের মাগুরাঘোনা, হোগলাডাঙ্গা, বেতাগ্রাম, আরশনগর গোদার ডাঙ্গি সহ বিভিন্ন গ্রাম ও বিলে পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম হল নোনাডোরা ও বিষের খাল। কিন্তু মহল বিশেষ দীর্ঘদিন ধরে খাল দু’টি দখলে নিয়ে ৪০/৪৫ টি ভেঁড়ি ও নেটপাটা দিয়ে মাছ চাষ করার ফলে সাধারন মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে পানি নিষ্কাশন না হওয়ার কারণে এক দিকে যেমন এলাকাবাসীকে মৌসুমী পানিবদ্ধতার কবলে পড়তে হয় অন্যদিকে রবি মৌসুমে তাদের চাষাবাদের বিঘœ ঘটে। এলাকার আবাদুল জলিল, লাভলু, আলতাপ হোসেন, শাহিনুর রহমান মিজানুর রহমান, মনিরুল, মোতালেব, জোয়ান ফকির, মোসলেম ফকির, সালেম, ইনতাজ সহ আরও কতিপয় ব্যক্তি খাল দুটি দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এ প্রসঙ্গে আব্দুল গফুর মোড়ল, রবিউল ইসলাম মিঠু, অচিন্ত্য ঘোষ সহ এলাকার শত শত মানুষ এই অভিযোগ করেন। এমতবস্থায় বুধবার সকাল ৯টায় দুই ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ মাগুরাঘোনা করিম বক্সের মোড়ে ঈদগাহ ময়দানে জমায়েত হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা শেষে আটলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডঃ প্রতাপ কুমার রায় এবং মাগুরাঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসেনের নেতৃত্বে খালের অবৈধ বেড়ি বাধ এবং নেট পাটা উচ্ছেদের কার্যক্রম শুরু করে। এ প্রসঙ্গে আটলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডঃ প্রতাপ কুমার রায় বলেন,এই খাল দুটির বিষয়ে আমি অবগত রয়েছি। এটা দুই ইউনিয়ন বাসীর গণদাবী তাই সম্প্রতি দুই ইউনিয়নের জনগণ মৎস্য ও প্রানীসম্পদ মন্ত্রীর নিকট আবেদন করেছে। ৩১ শে মার্চ মাননীয় মন্ত্রী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য খুলনা জেলা প্রশাসক মহোদয়কে নির্দেশ দেন। কিন্তু আজও পর্যন্ত তা কার্যকর না হওয়ার কারণ জানা যায়নি। অগত্যা দুই ইউনিয়নের জনসাধারনকে সাথে নিয়ে খাল অবমুক্ত করতে এসেছি।