বৃহস্পতিবার ● ২৬ জুলাই ২০১৮
প্রথম পাতা » বিবিধ » “ছেলের লাশ আনতে মা দ্বারে দ্বারে”
“ছেলের লাশ আনতে মা দ্বারে দ্বারে”
মাগুরা প্রতিনিধি :
সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শাহ আলমের লাশ আনতে টাকা লাগবে আড়াই লাখ। এত টাকা কোথায় পাবেন নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়া ভিটেমাটিসহ সর্বস্ব হারানো শাহ আলমের পরিবার তা ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন মা তহুরন এবং পরের জায়গায় আশ্রিত দিশেহারা দিনমজুর পিতা সায়েন উদ্দিন। উপায়ান্তর না পেয়ে দ্বারে দ্বারে হাত পাতছেন তার মা। গত কয়েকদিনে এ পর্যন্ত ২১ হাজার মত সংগ্রহ হয়েছে তাদের। কিন্তু কোনভাবেই লাশ আনার আড়াই লাখ টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছেনা তাদের পক্ষে।
মহম্মদপুর উপজেলার দেউলি গ্রামের সায়েন উদ্দিন মোল্যার ছেলে শাহ আলম ৪ঠা জুলাই সৌদি আরবের জেদ্দায় সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হন। নিহত হওয়ার ২১ দিন পার হলে ও শাহ আলমের লাশ ফেরা এখনো অনিশ্চিত। নিহত শাহ আলমের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে দরকার আড়াই লাখ টাকা। এমনটিই জানা গেল শাহ আলমের পরিবারের নিকট থেকে। ভিটেমাটিসহ সর্বস্ব হারানো পরের বাড়িতে আশ্রিত এই পরিবারটি দিনমজুর সায়েন উদ্দিনের উপর নির্ভরশীল। সায়েন উদ্দিন মোল্যার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। ছেলের লাশের দাফন সম্পন্ন করার জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজারঘাটে গিয়ে আর্থিক সাহায্য তুলছে অসহায় পরিবারটি। প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শাহ আলমের মা তহুরন বেগম মহম্মদপুর উপজেলা সদরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাসে ক্লাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫ হাজার ৮শ টাকা সাহায্য পেয়েছেন। গত কয়েকদিনে এ পর্যন্ত ২১ হাজার মত সংগ্রহ হয়েছে তাদের। কিন্তু কোনভাবেই লাশ আনার আড়াই লাখ টাকা জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছেনা তাদের পক্ষে।
মহম্মদপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাহায্য সংগ্রহকালীন সময়ে শাহ আলমের মায়ের সাথে কথা বললে তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন,আমার কলিজার টুকরার লাশের মুখখানা শেষ দেখার জন্য সরকারের নিকট ও সমাজের বিত্তবানদের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করছি। আমার মনিরে একটু শেষ বারের মত দেখতে দেন আপনারা। এমনটি বলেই অঝর ধারায় চোঁখের পানি ফেলছিলেন তিনি।
দারিদ্রতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে ছেলেকে এনজিও থেকে লোন এবং আত্বিয় স্বজনদের নিকট থেকে ধার-দেনা করে ২০১৭ সালের ৯ই আগষ্ঠ শাহ আলম কে সৌদি আরবে পাঠান হতদরিদ্র পিতামাতা। সেখানে পৌছে ১০ মাস নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করলে ও পরিবারের জন্য একটি টাকা ও পাঠাতে পারেননি শাহ আলম। টাকা পাঠানোর আগেই লাশ হতে হয় তাকে।