বুধবার ● ৮ আগস্ট ২০১৮
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » জাতির পিতার অন্যতম প্রেরণার উৎস ছিলেন বঙ্গমাতাঃ প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতার অন্যতম প্রেরণার উৎস ছিলেন বঙ্গমাতাঃ প্রধানমন্ত্রী
এস ডব্লিউ নিউজ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশর মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অবদানের কথা স্মরণ করে বলেছেন, জাতীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বঙ্গমাতার পরামর্শ জাতির পিতাকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করেছে।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার জন্য প্রেরণা, শক্তি এবং সাহসের এক উৎস ছিলেন বঙ্গমাতা। স্বামীর সকল সিদ্ধান্তে মনস্তাত্ত্বিক সহযোগিতা ছাড়াও বঙ্গমাতার পরামর্শ অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বুধবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অত্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেগম ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রেবেকা মোমেন এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমতাজ বেগম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতার জীবন ও কর্মের ওপর একটি ভিডিও প্রামান্য চিত্র প্রদর্শিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গমাতা সম্পর্কে বলেন, তাঁর সম্পর্কে মানুষ খুব সামান্যই জানে। তিনি অত্যন্ত সাদাসিধে ও প্রচার বিমুখ ছিলেন। তাই বঙ্গমাতার অবদান লোকচক্ষুর আড়ালেই রয়ে গেছে।
বাবার কোন কাজেই মা প্রতিবন্ধক নয় বরং সহায়ক ছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মা চাইলে স্বামীকে সংসারের চার দেয়ালে আবদ্ধ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি কখনও ব্যক্তিগত-পারিবারিক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে তাকাননি।
প্রধানমন্ত্রী স্মৃতি রোমন্থনে বলেন, ‘আম্মা সোজা বলে দিলেন, কোন প্যারোলে মুক্তি হবে না। নি:শর্ত মুক্তি না দিলে কোন মুক্তি হবে না।’
বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে এসবি’র ৪৭টি ফাইল পাওয়া গেলেও বেগম মুজিবের গোপন তৎপরতা নিয়ে কোথাও কোন রিপোর্ট নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেগম মুজিব প্রকৃতই একজন গেরিলা ছিলেন।
ইউনেস্কো কতৃর্ক ওয়ার্র্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই দিন নানা জনে নানা পরামর্শ দিচ্ছে। আম্মা তখন তাঁকে একটি ঘরে বিশ্রামের সুযোগ করে দিয়ে মোড়া টেনে মাথার কাছে বসে বঙ্গবন্ধুকে কিছুক্ষণ চোখটা বন্ধ করে রাখতে বললেন।
তিনি সেদিন এ ভাষণের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুকে বলেন, ‘এই লাখো জনতা যেন হতাশ হয়ে না যায়। আবার পাকিস্তানীরা যেন গোলাগুলি করে এদের শেষ করে দিতে না পারে।’
বঙ্গবন্ধুকে বেগম মুজিব যখন এই পরামর্শ দেন তখন সেই ঘরে শেখ হাসিনাই কেবল সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বলেও বঙ্গবন্ধু কন্যা জানান।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময়ের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস আম্মার যে মনোবল দেখেছি, তা ছিল কল্পনাতীত।
তাঁর মায়ের আত্মত্যাগ বাবাকে এগিয়ে নিয়েছে বলেই বঙ্গবন্ধু জাতিকে স্বাধীনতা এনে দিতে পেরেছেন। কাজেই এ স্বাধীনতায় তাঁর মায়ের অবদান অবিস্মরণীয়’- বলেন বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার কন্যা শেখ হাসিনা। বাসস।