বুধবার ● ১৭ অক্টোবর ২০১৮
প্রথম পাতা » বিবিধ » উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থে সৌদি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থে সৌদি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
এস ডব্লিউ নিউজ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উভয় দেশের পারস্পরিক স্বার্থে সৌদি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এই ব্যাপারে তাঁর সরকার সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে।
বুধবার সকালে বাদশাহ সৌদ রাজপ্রাসাদে সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের সংগঠন সৌদি চেম্বার এবং রিয়াদ চেম্বার অব কমার্স নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি পারস্পরিক স্বার্থেই আপনাদেরকে বাংলাদেশে ব্যবসা, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনী চিন্তা নিয়ে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা সৌদি বাদশাহ এবং পবিত্র দু’টি মসজিদের খাদেম সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের আমন্ত্রণে চারদিনের সরকারি সফরে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এখানে আসেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সৌদি উদ্যোক্তাদের দেশের বিভিন্ন উদীয়মান খাত যেমন পুঁজি বাজার, বিদ্যুৎ, জা¡লানি, টেলিকমিউনিকেশন এবং তথ্য প্রযুক্তি, পেট্রোকেমিক্যাল, ওষুধ শিল্প, জাহাজ নির্মাণ এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে হাল্কা প্রকৌশল শিল্প, ব্লু ইকোনমি, গবেষণা এবং উন্নয়ন ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন, পানি এবং সমুদ্র সম্পদ এবং অন্যান্য ভৌত অবকাঠামোগত প্রকল্পে এবং সেবামূলত খাত যেমন ব্যাংকিং এবং অর্থনীতি, লজিষ্টিক এবং মানব সম্পদ খাতেও বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাই।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় বাংলাদেশে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সব চেয়ে ভাল বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ বজায় থাকা এবং অত্যন্ত আকর্ষণীয় প্রণোদণার সুযোগ গ্রহণের মাধ্যমে অধিকহারে মুনাফা নিয়ে দেশে ফেরার বিষয়টিও উল্লেখ করেন। যার মধ্যে রয়েছে- আইন দ্বারা সুরক্ষিত সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই), ট্যাক্স হলিডে, যন্ত্রাংশ আমদানীতে স্বল্প শুল্ক প্রদান, বিনা শুল্কে শিল্পের কাঁচামাল আমদানীর সুযোগ, টেমিট্যান্স অন রয়্যালিটি, শতভাগ ফরেন ইক্যুয়িটির নিশ্চয়তা এবং লাভ এবং পুঁজিসহ বিনা বাধায় চলে যাবার সুবিধা।
অন্যান্য সুবিধার উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের রয়েছে প্রতিযোগিতামূলক বেতন-ভাতায় সহজে প্রশিক্ষণযোগ্য নিবেদিত প্রাণ জনশক্তি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপনে স্বল্প ব্যয় এবং আমাদের বৃহৎ শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশ সুবিধা। যার মধ্যে রয়েছে- ইউরোপিয় ইউনিয়ন (ইউ), অষ্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, জাপান এবং নিউজিল্যান্ডের বাজারে প্রবেশ সুবিধা।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ এবং পানি প্রাপ্তির সুবিধাও রয়েছে। রয়েছে ভাল ক্রেডিট রেটিং, স্বল্প ঝুঁকি এবং দ্রুত প্রযুক্তির গ্রহনযোগ্যতার সুবিধা। এই সবগুলো একত্রে বাংলাদেশে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের সর্বোচ্চ মুনাফা প্রাপ্তির সুবিধাই নিশ্চিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের কৌশলগত ভৌগলিক অবস্থানের কথা উল্লেখ করে বলেন, এই দেশের ভৌগলিক অবস্থান দেশটিকে আঞ্চলিক যোগাযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ এবং গ্লোবাল আউট সোর্সিয়ের একটি কেন্দ্রে পরিণত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন সৌদি বিনিয়োগের পরিমাণ ২৫টি প্রকল্পে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার। যার প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে-কৃষিভিত্তিক শিল্প, খাদ্য এবং প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার, বস্ত্র এবং তৈরি পোষাক, চামড়া, প্রেট্রো কেমিক্যাল, প্রকৌশল এবং সেবা খাত।
গত মার্চে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গ্রাজুয়েশন প্রাপ্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে তাঁর সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ২০০৮ সাল থেকে দেশে রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নের লক্ষ্য স্থির করেছে।
‘উন্নয়নশীল দেশ হওয়া তাঁর রূপকল্প-২০২১ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধশালী হিসেবে গড়ে তোলার পথে প্রথম ভিত্তি,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রসংগ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাপী চলমান অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশ গত ১০ বছরে ৭ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি অর্জনে সমর্থ হয়েছে এবং এ বছর ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আগামী বছর ৮ দশমিক ২৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রত্যাশা করছি।’ বাসস।