শনিবার ● ২৪ নভেম্বর ২০১৮
প্রথম পাতা » অপরাধ » সুন্দরবনে বেপরোয়া হরিণ শিকারিরা : আটক ৫৭
সুন্দরবনে বেপরোয়া হরিণ শিকারিরা : আটক ৫৭
এস ডব্লিউ নিউজ।
সুন্দরবনে রাসমেলাকে কেন্দ্র করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে হরিণ শিকারিরা। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে বন বিভাগ ৫৭ জনকে আটক করেছে।
আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা হয়েছে। এ সময় হরিণের মাথা, শিং, চামড়াসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করেছেন বন বিভাগের সদস্যরা।
সুন্দরবনে বন বিভাগের স্মার্ট প্যাট্রোল টিম-১ এর লিডার ও কাশিয়াবাদ স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ টিটো বলেন, রাসমেলা উপলক্ষে শিকারিদের ঠেকাতে বন বিভাগ টহল জোরদার করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে দুটি ট্রলারবোঝাই দর্শনার্থীরা সুন্দরবনের পাটকোষ্টা মোরগখালী এলাকায় ঘুরছিল।
এ সময় স্মার্ট প্যাট্রোল টিম তাদের থামতে বলে তল্লাশি চালালে ট্রলারে হরিণের মাথা, শিং, চামড়াসহ বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র দেখতে পায়। এ সময় ট্রলার দুটিতে ৫৭ জন ছিল। তারা সবাই রাসমেলার উদ্দেশ্যে খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসে। ট্রলার দুটি থেকে হরিণ শিকারের ফাঁদ, হাড়, দা ও কুড়াল উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, তাদের আটক করে শুক্রবার বিকালে কয়রা উপজেলা আদালতে সোপর্দ করা হয়। বন বিভাগ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার থেকে সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী রাস উৎসব। সারা বছর সুন্দরবনে যে পরিমাণ হরিণ শিকার হয়, রাসমেলা ঘিরে তার চেয়ে বেশি হরিণ শিকার হয়ে থাকে। নাইলনের ফাঁদ, জাল পেতে, স্প্রিং বসানো ফাঁদ, বিষ টোপ, তীর বা গুলি ছুড়ে, কলার মধ্যে বড়শি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা ফাঁদসহ পাতার ওপর চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে হত্যা করা হয়ে থাকে বিপুলসংখ্যক হরিণ।
এরপর চামড়া, শিং, মাথাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ পাঠিয়ে দেয়া হয় উপযুক্ত ক্রেতাদের কাছে। কখনও কখনও ঝামেলা এড়াতে তা মাটিতে পুঁতে বা সাগরে ফেলে দেয়া হয়। লন্ডনভিত্তিক ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশ ও জুলজিক্যাল সোসাইটির তথ্যমতে, সুন্দরবনে বছরে ১০ হাজারেরও বেশি হরিণ শিকারিদের হাতে মারা পড়ে।
মেলা চলাকালীন দর্শনার্থী ও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চোরা শিকারিরা সুন্দরবনের হিরণ পয়েন্ট, দুবলারচর, আলোর কোল, কটকা, কচিখালী, চান্দেরশ্বর, বগি, চরখালী, তালপট্টিসহ যেসব এলাকায় হরিণের বেশি বিচরণ, সেসব এলাকায় বিভিন্ন ফাঁদ পেতে শিকার করে হরিণ।