মাগুরায় আমন চাষিরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন

   এস আলম তুহিন,  মাগুরা প্রতিনিধি :  মাগুরায় বোনা আমন চাষিরা এখন ব্যসÍ সময় কাটাচ্ছেন ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও শুকানোর কাজে। আমন ধানের ভালো ফলন হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।  তবে বর্তমানে বোরো ও অন্যান্য উচ্চফলনশীল ধানের থেকে আমন ধানের বাজার মূল্য একটু কম। কৃষকসহ কৃষি বিভাগ আশা করছে ,আবহাওয়া বোনা আমনের অনুকূলে থাকায় এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে । বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ২৫ মণ ফলন পাচ্ছেন কৃষকরা। আবাদকৃত আমনের মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলো বিআর-২৬-২৭, ব্রিধান-৪৮, সামনা, কুটিআংটি, লক্ষ্মীদীঘা, হিজলদীঘা, মানিকদীঘা, গাবুরা, ঝিঙ্গাশাইল, কার্তিকশাইল, লেহাগাছা, কাচকলা জাত। তবে সবচেয়ে ভালো ফলন হয় সামনা ও কুটিআংটি জাতের ধানের। দেশীয় জাতে বিঘাপ্রতি ১৫ থেকে ২০ মণ ফলন পেলেও উফশী জাতে বিঘাপ্রতি ২০ থেকে ২৫ মণ পর্যন্ত ফলন পাচ্ছেন।

   জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৮ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে। মাগুরা সদর উপজেলায় ২২ হাজার ৩ শত হেক্টর জমিতে, শ্রীপুর উপজেলায় ১১ হাজার ৭ শত হেক্টর জমিতে শালিখা উপজেলায় ১৩ হাজার ৩ শত ৬০ হেক্টর জমিতে, মোহাম্মদপুর উপজেলায় ১১ হাজার ৭ শত হেক্টর জমিতে। এ বছর আমন ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১৭৫ হাজার ২৯০ মে. টন ধরা হলেও ফলন ভালো হওয়ায় তা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কৃষকসহ স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

মাগুরা সদর উপজেলার হাজীপুর গ্রামের কৃষক মো: মোক্তর হোসেন বলেন, এ বছর বর্ষার শেষ সময়ে কিছুটা পানি হওয়ায় বোনা আমনের ভালো ফলন হয়েছে। এরই মধ্যে আমার দুটি খেতের ধান কাটা শেষ হয়েছে। বিঘাপ্রতি ফলন পেয়েছি সাড়ে ২৮ মণ। বাজারে ধানের দাম ভালো না। মণপ্রতি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে । গেল বছর ৩ বিঘা জমিতে আমন আবাদ করেছিলাম। ভালো ফলন পাওয়ায় এবার ৪ বিঘায় আমন আবাদ করেছি।  মাগুরা সদর উপজেলার রামনগর গ্রামের আদর্শ কৃষক মো: সিরাজুল ম-ল জানান,‘ তুলনামূলক কম খরচে ভালো ফলন হওয়ায় আমি ৭ বিঘা জমিতে  আমন আবাদ করছি। তবে কৃষক পর্যায়ে ধানের দাম কম হওয়ায় চিন্তায় আছি।

মাগুরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে উপ-পরিচালক মোঃ জাহিদুল আলম জানান,‘ আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ভালো ফলন পাবে কৃষকরা। তাই আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উন্নতজাতের বোনা আমন আবাদে মাঠ পর্যায়ে কৃষকের কারিগরি সহযোগিতাসহ উদ্বুদ্ধকরণের কাজ নিয়মিত করেছি এবং চালিয়ে যাচ্ছি। তুলনামূলক কম খরচে ভালো ফলন পেয়ে লাভবান হওয়ায় কৃষকও বেশ আগ্রহের সঙ্গে এখন বোনা আমন আবাদ করছেন। মাগুরা ধীরে ধীরে বাড়ছে বোনা আমনের আবাদ। আমন কেটে কৃষক আবার একই জমিতে বিভিন্ন মশলা ফসলসহ মাটির উপযোগিতা ও গুণাগুণ অনুযায়ী অন্যান্য ফসল আবাদ করতে পারবেন।’