মঙ্গলবার ● ১২ মার্চ ২০১৯
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্ববাসীর সম্মুখে দৃষ্টান্তরূপে পরিগণিত হচ্ছেঃ প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্ববাসীর সম্মুখে দৃষ্টান্তরূপে পরিগণিত হচ্ছেঃ প্রধানমন্ত্রী
এস ডব্লিউ নিউজ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশ্বে একটি রোল মডেল আখ্যায়িত করে আগামীতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সব বহুমুখী এবং বহুমাত্রিক সহযোগিতার ফলে আমাদের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিশ্ববাসীর সম্মুখে সু-প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের দৃষ্টান্তরূপে পরিগণিত হচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
আজ অপরাহ্নে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে প্রদত্ত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিগত এক দশকে উভয় দেশের মধ্যে বিভিন্ন প্রথাগত খাত যেমন নিরাপত্তা, বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, জ¦ালানি, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, জলবায়ু ও পরিবেশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, জনযোগাযোগ বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা প্রভূত পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।’
প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভারত থেকে দোতলা বাস, একতলা এসি ও নন-এসি বাস এবং ট্রাক আমদানি, ভারতীয় আর্থিক অনুদানে পাঁচ জেলায় (জামালপুর, শেরপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া) ৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, ভারতীয় অনুদানে বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়ায় ১১টি পানি শোধনাগার স্থাপন এবং সার্কভুক্ত দেশসমূহে ভারতের ন্যাশনাল নলেজ নেটওয়ার্ক (এনকেএন) সম্প্রসারণের আওতায় বাংলাদেশে উক্ত নেটয়ার্কের সম্প্রসারণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নয়া দিল্লীতে তাঁর কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগদান করেন।
ভারত এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীগণ একত্রে সুইচ চেপে প্রকল্পের ফলক উন্মোচন করেন। পরে ৪টি প্রকল্পের ওপরই অনুষ্ঠানে ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এবং ভারতের বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ উচ্ছেদে তাঁর সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় গত মাসে কাশ্মিরের পুলওয়ামায় সন্ত্রাসি হামলার নিন্দা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
টানা তৃতীয়বারের মত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পর এটাই তাঁর এবং নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রথম ভিডিও কনফারেন্স উল্লেখ করে শেখ হাসিনা তাঁর নির্বাচনে বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানানোয় মোদীকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা অত্যন্ত পরিতৃপ্তির বিষয় যে আজ দ্বিতীয় লাইন অফ ক্রেডিট (এলওসি) এর আওতাভুক্ত কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, এলওসি এর আওতায় ৬০০ বাস (৩০০ দোতলা বাস, ২০০ একতলা এসি বাস এবং ১০০ একতলা নন-এসি বাস) এবং ৫০০ ট্রাক (৩৫০টি ১৬-টন ট্রাক এবং ১৫০টি ১০-টন ট্রাক) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের পাঁচ জেলায় ৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ভান্ডারিয়ায় ১১টি পানি শোধনাগার ভারতীয় অনুদানে নির্মাণ করায় ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বাংলাদেশে ভারতের ন্যাশনাল নলেজ নেটওয়ার্ক (এনকেএন) এর সম্প্রসারণকেও সাধুবাদ জানান।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এবং ড. মশিউর রহমান, এলজিআরডি এবং সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, ইউজিসি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস এ সময় গণভবনে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ থেকে ভারতে সফররত সংসদ সদস্যদের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এ সময় নয়া দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী পরে কমলাপুর বিআরটিসি’র প্রধান কার্যালয়, ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের কার্যালয়, পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া এবং জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার জনগণের সঙ্গে মত বিনিময় করেন। বাসস।