সোমবার ● ৪ জানুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » অপরাধ » পাইকগাছায় সাংবাদিকের বসতবাড়ি দখল করে প্রাচীর ও স্থাপনা নির্মাণ
পাইকগাছায় সাংবাদিকের বসতবাড়ি দখল করে প্রাচীর ও স্থাপনা নির্মাণ
এস ডব্লিউ নিউজ ॥
খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় আইনের তোয়াক্কা না করে পাইকগাছার কপিলমুনির অভিজিৎ সাধু নামে এক ব্যক্তি সাংবাদিক মহানন্দ অধিকারী মিন্টু’র পরিবারিক জমি জবর দখল করে সীমানা প্রাচীর ও স্থাপনা নির্মাণ করছেন। স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে কাজ করে চলেও এ বিষয়ে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগি পরিবার জানায়, দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে ভোগদখলীয় জায়গায় তারা শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি এই জমিতে নজর পড়ে স্থানীয় মৃত সত্যেন্দ্রনাথ সাধুর ছেলে প্রভাবশালী অভিজিত সাধুর। গত বছরের ২৫ নভেম্বর প্রায় ২৫ জন ভাড়াটিয়া অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী নিয়ে মিন্টুদের মালিকানাধীন রেকর্ডীও ও ভোগদখলীয় বসত বাড়ীর জায়গায় দাঙ্গা হাঙ্গমা ও ত্রাসসৃষ্টি করে প্রথমে জোর পূর্বক প্রায় ২২শতক জায়গা জুড়ে কাঁটা তারের বেড়া দেয়। পরে সেখানে লাগানো মূল্যবান ফলজ ও বনজ বৃক্ষাদি কেটে নিয়ে যায়। এ সময় মিন্টু বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। কিছু দিন চুপ থাকার পর অভি গেল বছরের ২৩ ডিসেম্বর মিন্টু ও তার বৃদ্ধ পিতা-মাতাসহ পরিবারের ৮জনের নামে থানায় মিথ্যা মামলা দেন। এরপর ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর পাইকগাছা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রট আদালত উভয় পক্ষের আইনজীবির উপস্থিতে জমি পরিমাপের জন্য মৌখিক আর্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু অভিজিৎ জমি মাপতে রাজি হননি। পরে তিনি ক্ষব্ধ হয়ে দ্বিগুন শ্রমিক নিয়ে ওই স্থানে প্রাচীর ও বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন।
মহানন্দ অধিকারী মিন্টু জানান, তার ঠাকুরমা মৃত ননীবালা অধিকারী ইং-১৯৫৬ সালে ২৫৬৫নং রেজিষ্ট্রকৃত কবলা দলিল মূলে খরিদ করেন কুঞ্জু বিহারী সাধু নিকট হইতে। বিগত এসএ জরিপে প্রকৃত ভোগদখল দৃষ্টে ননীবালা খরিদকৃত ঐ সম্পত্তি কুঞ্জুবিহারী সাধু সাথে যথারীতি তাদের নামেও রেকর্ড এস এ খতিয়ানে চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হয়। এসএ খতিয়ানে ১.৫৫ একর সম্পত্তির মধ্যে ননীবালা অধিকারী ০.৩৩ একর সম্পত্তিতে ভোগদখলকার থাকা সময় ৪ ছেলে ওয়ারেশ রেখে মারা যান। ওই সম্পত্তি ডিপি ৪১৬নং খতিয়ানে যথারীতি তার বাবা-কাকাদের নামে ওয়ারেশ সূত্রে রেকর্ড হয়। ওই সম্পত্তি সরকারি কর খাজনাদি তারা যথারীতি দিয়ে আসছেন। চলমান বাংলা ১৪২৭সাল পর্যন্ত পরিশোধও তারা করেছেন।
তিনি বলেন, দখলে বাঁধা দিতে গেলে মারপিট করছে। এমনকি খুন করার হুমকি দিচ্ছে অভিজিৎ। এমনকি জাতীয় হেলপ লাইন (৯৯৯) মাধ্যমে থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ প্রশাসন কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তাছাড়া সিনিয়ার সহকারী জজ আদালত পাইকগাছায় গেল বছরের ১ ডিসেম্বর একটি মামলাও করেছি। অভিজিতকে আদালত ১ মাসের মধ্যে এই বিষয়ে জবাব দিতে বলেছে কিন্তু এখনও সে জবাব দেয়নি। আদালতের রায়ও তারা মানছে না। ইচ্ছামত গায়ের জোরে তারা কাজ করে চলেছে।
অভিজিত সাধু বলেন, এখন এখানে নিষেধাজ্ঞা নেই। তাছাড়া আমার পক্ষে আদালতের রায় রয়েছে। তাছাড়া জমি পরিমাপের জন্য তো আদালত লিখিত ভাবে কোন কিছু বলেনি। কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি দেখাতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এজাজ শফি জানান, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। জবর দখলকারী ও শৃংখলা ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে থানা পুলিশের নজরদারী রয়েছে। তবে তারা ইতি মধ্যে আদালতে কিছু কাগজপত্র তাদের অনুকুলে নিয়ে এসেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, এ বিষয়ে কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যানকে মিমাংশা করার জন্য দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তাছাড়া ভূমি অফিসের মাধ্যমে জমি পরিমাপ করে বিষয়টি সমাধান করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে সেখানে আমিও উপস্থিত থাকবো। বিষয়টি সমাধানের জন্য সব রকম চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।