শিরোনাম:
পাইকগাছা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
বৃহস্পতিবার ● ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » পরিবেশ » ২৭ বিলের পানি নিষ্কাশন পানি নিষ্কাশনে গ্রামবাসী
প্রথম পাতা » পরিবেশ » ২৭ বিলের পানি নিষ্কাশন পানি নিষ্কাশনে গ্রামবাসী
৭২৩ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার ● ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

২৭ বিলের পানি নিষ্কাশন পানি নিষ্কাশনে গ্রামবাসী

---

এস ডব্লিউ নিউজ ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপর আস্থা হারিয়েআর ৩০ বছরের জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে যশোর জেলার বিল খুকশিয়াসহ ২৭টি বিলের পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ নিয়েছে এলাকাবাসী। ‘বিল খুকশিয়াসহ ২৭ বিলের জলাবদ্ধতা নিরসন বাস্তাবায়ন কমিটি’ নামে স্থানীয়রা এই উদ্যোগ নিয়েছেন। ১০৮ টি পাম্পের মাধ্যমে ১৬ জানুয়ারি  থেকে এই কাজ শুরু হয়েছে। এভাবে পানি নিষ্কাশন করা গেলে প্রায় ৩লাখ মানুষ উপকৃত হবেন।

এ সময় বিল খুকশিয়াসহ ২৭ বিলের জলাবদ্ধতা নিরসন বাস্তাবায়ন কমিটি নেতারা জানান, বিল খুকশিয়াসহ ২৭ বিলের অবস্থান খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার শেষ  প্রান্ত আর যশোর জেলার কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলায়হরি নদীর গা ঘেঁষে। কেশবপুর উপজেলার ৭ নম্বর পাঁজিয়া ও ৮ নম্বর সুফলাকাঠি ইউনিয়ন আর মনিরামপুর উপজেলার ১৪ নম্বর দূর্বাডাঙ্গাও ১৭ নম্বর মনোহরপুর এই চারটি ইউনিয়নের মধ্যে এই ২৭ বিলের অবস্থান। এই চারটি ইউনিয়ানে মোট গ্রাম রয়েছে ৬৯টি। ২৭ বিলে মোট জমির পরিমান প্রায় দেড় হাজার একর আর ভুক্তভোগী মানুষের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লাখ।এক সময়হরি নদীর দিয়ে এই বিলগুলোর পানি নিষ্কাশন হত। কিন্তু ৩০ বছর আগে নদীটি ভরাট হতে থাকে। তখন বিলের পানি নিষ্কাশনের বিকল্প পথ না থাকায় বিলগুলো জলাবদ্ধতার রূপ নেয়। আর তখন থেকে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যায় এই বিলগুলোতে। তখন এই বিলের মৎস ঘের গড়ে উঠে। দীর্ঘদিন থেকে এই সমস্যার সমাধান না হওয়ায় এ বছর পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা শুরু করেছে এই কমিটি। পানি নিষ্কাশনে ব্যবহার করা হচ্ছে ১০৮ স্যালো মেশিন। প্রতিটি মেশিন মালিকে দিন প্রতি দেওয়া হচ্ছে ৫শত টাকা। আর ডিজেলখরচ বাস্তবায়ন কমিটি। এই কাজে তদারকিসহ নানা রকম কাজের জন্য মোট ২৪ জন শ্রমিককে নিযুক্ত করা হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য জমি মালিদের থেকে বিঘা প্রতি ১ হাজার করে টাকা নেওয়া হচ্ছে। সকল খরচ এই টাকা দিয়ে  মেটানো হচ্ছে।

সুফলাকাঠি ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বর) আজিজুর রহমান মোল্লা বলেন, বিলের পাশ দিয়ে বয়ে চলা হরি নদীটি ভরাট হওয়ার কারণে এই বিলের জলাবদ্ধতার মুল কারণ। এখন নদীটি বিলের থেকে উঁচু হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন থেকে নদীটির খনন না করায় এ অবস্থা হয়েছে। দ্রুত নদীটি খনন করা প্রয়োজন।

---

এ সময় কাজ তদারকি করছিলেনসুফলাকাঠি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রকল্প বাস্তায়ন কর্মকর্তা প্রদত্ত বিশ্বাস। তিনিদেশ রূপান্তরকে বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে এই ২৭ বিলের জলাবদ্ধতার কারণে উপর নির্ভরশীল প্রায় সাড়ের তিন লাখ মানুষ ভীষণ কষ্ঠে দিন পার করছে। তারা এই বিলে ধান চাষ করতে পারছে না। মাৎস ঘেরে যারা করছেন পানি সঠিক নিয়মে নিষ্কাশন করতে না পারায় মৎস চাষও ভাল হচ্ছে না। বর্ষাকালের পানি উঠে যাচ্ছে বিলের আশে-পাশের বসবাসকারীদের ঘরে। গত ৩০ বছরে পাউবো তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়নি। অবশেষে ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে আমরা এই কাজে নেমেছি। বর্তমানে ১০৮টি মেশিন চলছে। এই সপ্তাহের মধ্যে  ২৫০ মেশিন চালাবো। তখন ২০ দিনের পানি সব নিষ্কাশন করা যাবে।

কমিটির আহবায়ক ও কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমিন বলেন, এই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে মানুষের দীর্ঘশ্বাস দেখে। এই বিল খুকশিয়ার সাথে২৭টি বিল জড়িত। এখানে মনিরামপুরের অসংখ্য বিল জড়িত। এসব বিলগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে কোন ফসল হচ্ছে না। গরু, ছাগল, মানুষ না খেয়ে মরছে। তাদের কথা চিন্ত করে এই কাজ শুরু করেছি। এই সেচ কার্যের ফলে আমরা আশা করছি বিলের ১৬ আনা না হোক ১২-১৪ আনা জমিতে ফসল হবে। এক সময়  এখানে টিআরএম চালু করা হয়েছিল তখন অনেক জমিতে ফসল হত। হরি নদীটি বেশ গভীর হয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আমাদের দাবি যত দ্রুত হোক এখানে টিআরএম চালু করতে হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী তহিদুল ইসলামবলেন, ওই বিলগুলোতে টিআরএম চালু করার জন্য একটি বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তা বাস্তবায়ন নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। আমরা আশা করছি এই প্রকল্প বাস্তাবায়ন হলে বিলগুলোর জলাবদ্ধতা আর থাকবে না।

 





আর্কাইভ