মঙ্গলবার ● ১৬ মার্চ ২০২১
প্রথম পাতা » খেলা » কেশবপুরে যুবকের বাই সাইকেলে ৬৪ জেলা ভ্রমণ
কেশবপুরে যুবকের বাই সাইকেলে ৬৪ জেলা ভ্রমণ
এম. আব্দুল করিম, কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি :
যশোরের কেশবপুর উপজেলার মজিদপুর গ্রামের আজিমুদ্দিন ও সুখজান বিবির কনিষ্ঠ ছেলে হেলাল উদ্দিন ৫১ দিনে দেশের ৬৪ জেলা ভ্রমণ করেছেন। ভ্রমণকালে তিনি দেখেছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান, উপভোগ করেছেন অপরূপ সৌন্দর্য। এ সময় পড়তে হয়েছে নানা সমস্যায়ও। ভ্রমণ শেষে হেলাল উদ্দিন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তার নানা অভিজ্ঞতার কথা। তিনি কেশবপুর বাহরুল উলুম কামিল মাদরাসা থেকে ২০১৫ সালে দাখিল ও ২০১৭ সালে আলিম পাশ করেন। বর্তমানে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ছোটবেলা থেকে তার মাথায় সাইকেল চালিয়ে ভ্রমণের নেশা ভর করে। সেই নেশা থেকেই অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে ১৫ জানুয়ারি বেরিয়ে পড়েন দু’চাকার সাইকেল নিয়ে দেশের ৬৪ জেলা ঘুরে দেখতে। খুলনা থেকে ভ্রমণ শুরু করে দীর্ঘ ৫১ দিন পর সাতক্ষীরায় এসে শেষ করেন ভ্রমণ। এসময় তিনি ৬৪ জেলার সৌন্দর্য্যকে কাছ থেকে উপভোগ ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের জীবন সংস্কৃতি দেখার কৃতিত্ব অর্জন করে। ভ্রমণ শেষে বাড়ি ফিরে সাংবাদিকদের জানালেন তার অভিজ্ঞতার কথা। হেলাল উদ্দিন বলেন, বাড়ি থেকে বাবা-মাকে এক সপ্তাহের কথা বলে নিজের কাছে গচ্ছিত নয় হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে সাইকেলে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বের হন। ১৫ জানুয়ারি খুলনা থেকে শুরু হয় তার ভ্রমণ। ৫১ দিনের এ ভ্রমণে হোটেলে ও ডাকবাংলোয় ছিলেন ১৯ দিন। বাকি ৩২ দিন থাকেন বন্ধু ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে । ফেসবুকে তার ভ্রমণের পোস্টকৃত ছবি দেখে সবাই তাকে অনুপ্রাণিত করেছে বলে জানান তিনি। গচ্ছিত টাকা শেষ হওয়ার আগেই বাবা মা তাকে বিভিন্ন সময় টাকা পাঠিয়েছেন। ভ্রমণে তার প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি বলেন, নেত্রকোনায় মামুনুর রহমান নামে এক চাকুরিজীবীর সাথে পরিচয় হলে তিনি টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেন। সব থেকে বেশি আতিথেয়তা পেয়েছি নোয়াখালীতে। প্রথমে মানুষের কাছ থেকে রাস্তর লোকেশন নিয়ে ও পরবর্তীতে গুগল ম্যাপের মাধ্যমে যাতায়াত শুরু করেন। এছাড়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইয়ামীন ইস্কা রহমান রাজশাহীতে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। ভ্রমণকালে বিভিন্ন জেলার অনেকেই তাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছেন। অনেকেই থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। তাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞ। ৬৪ জেলা ভ্রমণ করার মাধ্যমে বাংলাদেশের অনেক ঐতিহাসিক ও প্রাচীন স্থাপনা ও নতুন নতুন জায়গা ও মানুষের সংস্কৃতিকে জানার সুযোগ হয়েছে তার । হেলাল উদ্দিন আরো বলেন, “খাগড়াছড়িতে ঝর্ণা থেকে পড়ে গিয়ে ঠোঁট ফেটেছিলো আর হাত পায়ে ব্যাথা পেয়েছিলাম। এছাড়া পথে তেমন কোনো ঝামেলা পাহাতে হয়নি। হেলালের ভবিষ্যত পরিকল্পনা স¤পর্কে বলেন, সাইকেল নিয়ে দেশের বাইরে ভারত, নেপাল ও ভুটানে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। এর আগে তিনি ২০১৬ সালে নিজ জেলা যশোর থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত গেছেন সাইকেল চালিয়ে। সেটি ছিল ৮ দিনের ভ্রমণ। হেলাল উদ্দিন তার এই অর্জনকে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল দেশপ্রেমিকদের উৎসর্গ করেন।