শিরোনাম:
পাইকগাছা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩১

SW News24
শুক্রবার ● ২ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » আমের গুটিতে দোল খাচ্ছে চাষীর স্বপ্ন
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » আমের গুটিতে দোল খাচ্ছে চাষীর স্বপ্ন
৫৭৭ বার পঠিত
শুক্রবার ● ২ এপ্রিল ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

আমের গুটিতে দোল খাচ্ছে চাষীর স্বপ্ন

---

প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছাঃ আশা-হতাশার দোলাচলে পড়ে আম চাষীর স্বপ্ন দুলছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবের পাশাপাশি প্রকৃতিক বিপর্যয়ে আমের গুটি টিকিয়ে রাখতে চাষীরা হিমশিম খাচ্ছে। চলতি মৌসুমে কোন বৃষ্টি না হওয়ায় খরার কারণে আমের গুটি ঝড়ে যাচ্ছে। এ কারণে  আম বাগান মালিক, চাষী ও ব্যবসায়ীরা হতাশায় ভুগছেন।

আম গাছের মুকুলের ডগায় ডগায় দোল খাচ্ছে আমের গুটি। দিন দিন বড় হচ্ছে আমের গুটি। বাগানে আমের গুটি দেখে আনন্দে আত্মহারা বাগান মালিক ও চাষী। আমের গুটিতে দোল খাচ্ছে আম চাষীর স্বপ্ন। নানা জাতের আম, স্বাধ এবং রংবেরঙের আমের রং লেগেছে চাষীর মনে। সোনালী এই স্বপ্ন পূরণে চাষীরা বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছে। তবে মনে রয়েছে শংঙ্কা। বিগত বছরের আম্ফান ঘুর্ণিঝড়ে আম চাষীদের স্বপ্ন ধুলিসাৎ করে দিয়েছে। করোনা প্রাদুর্ভাব ও বছরের শুরু থেকেই বৃষ্টি না হওয়ায় চাষীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।  তাছাড়া সামনে রয়েছে বৈশাখের তান্ডব, ঝড়-বৃষ্টি। “ঘূর্নিঝড় ও শীলা বৃষ্টি আমের শত্রু”। প্রকৃতির সাথে মিতালী করে চাষীরা সোনালী স্বপ্ন বুকে ধারণ করে বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষীরা।

পাইকগাছার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে ৪টি ইউনিয়ন গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুুনি, রাড়–লী ও পৌরসভা ছাড়া বাকী ইউয়িন গুলিতে সীমিত আমের গাছ রয়েছে। উপজেলায় ৫৮৫ হেক্টর জমিতে মোট আম গাছ রয়েছে। গাছের সংখ্যা প্রায় ৬৫ হাজার। প্রায় ৬২০টি পরিকল্পিত আম বাগান রয়েছে। এসব বাগানে সর্বনিন্ম ১০টি গাছ রয়েছে। ৫ শতক, ১০ শতক, ১ বিঘা ও ৩ বিঘা পর্যন্ত আমের বাগান রয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে ছড়ানো ছিটানো আম গাছ আছে। আম বাগান থেকে চলতি মৌসুমে ৭ হাজার ২০ মেট্রিকটন আমের ফলন পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এলাকায় স্থানীয় জাতের পাশাপাশি আ¤্রপলি, রূপালী, হিম সাগর, গোপাল ভোগ, বোম্বাই লতা, মল্লিকা, ল্যাংড়া, ফজলিসহ বিভিন্ন জাতের আম বাগানের সংখ্যা বেশি। তবে এ এলাকার গদাইপুরের বোম্বাই লতার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। বাগান গুলোতে আমের মুকুল থেকে যে পরিমান গুটি ধরেছে তাতে করে প্রচুর ফলনও হবে আমের এমনটা আশা করছেন চাষীরা। গদাইপুর গ্রামের আম চাষী মোবারক ঢালী জানান, গাছে মুকুল আসার আগে বাগান পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল আসার পরে ও আগে দু’দফা ছত্রাক নাশক স্প্রে করেছেন। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় আমে গুটি ঝড়ে যাচ্ছে। বাগান মালিক আব্দুল কাদের জানান, গাছে মুকুল আসার পর থেকে বাগান পরিচর্যা শুরু করেছেন। এবার মুকুল থেকে প্রচুর পরিমাণ গুটি ধরেছে। বৃষ্টি হলে ছত্রাকজনিত রোগে আমের গুটি রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই বৃষ্টি হলে রোগবালাইয়ের আক্রমন থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় ঔষধ ¯েপ্র করা হবে। তকিয়া গ্রামের আম ব্যবসায়ী মোঃ মুজিবর রহমান জানান, গত বছর আম্ফান ঝড়ের কারণে গাছের আম ঝড়ে পড়ায় ব্যবসায় প্রচুর পরিমান ক্ষতি হয়েছে। তাই এ বছর আম বাগান নিয়ে তিনি চিন্তিত। এ বছর করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না বিধায় বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে বাগান পরিচর্যা করায় অতিরিক্ত অর্থ খরচ হচ্ছে।

এ বিষয়ে  উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ বছর আম বাগানে প্রচুর পরিমাণ মুকুল ধরেছে। কৃষি অফিস থেকে উপ-সহকারী কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক আম চাষী ও বাগান মালিকদের আমগাছ পরিচর্যায় পরামর্শ দিচ্ছে। বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে তিনি এ বছর আমের আশানুরূপ ফলনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।





আর্কাইভ