শুক্রবার ● ১৬ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » কৃষি » কয়রায় পানির অভাবে তরমুজ চাষীরা চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে
কয়রায় পানির অভাবে তরমুজ চাষীরা চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে
এস ডব্লিউ নিউজ: ঘূর্ণিঝড় আম্পানে ঘরবাড়ী ও মৎস্য ঘের হারিয়ে কয়রা উপজেলার চন্ডীপুর গ্রামে মামার বাড়ীতে থেকে ৫ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা গ্রামের ধীরাজ সরকার। পুনরায় জীবন যুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এবার তরমুজ চাষ করেও পানির অভাবে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। তিনি জানান, মহাজনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋন নিয়ে তরমুজ চাষে নেমেছি। প্রতি মাসে ঋন বাবদ মহাজনকে ১ হাজার পাঁচশ’ টাকা দিতে হচ্ছে। আশা ছিল এপ্রিলের শেষের দিকে তরমুজ বিক্রি করে মহাজনের ঋন পরিশোধ করবেন এবং লভ্যাংশ দিয়ে নিজের সংসার খরচ মিটাবেন। কিন্তু পানি সংকটের কারনে তার সমস্ত আশা যেন ফিকে হতে চলেছে। পানির অভাবে গাছ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ফল শুকিয়ে যাচ্ছে । ফলে আশানুরূপ ফল পাওয়া নিয়ে চিন্তিত। চান্নির চক গ্রামের সাধন কুমার সরকার নিজের জমি না থাকায় অন্যর জমি বিঘা প্রতি দুই হাজার টাকা হারে লীচ নিয়ে আড়াই বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। বিগত বছরে অন্যদের ভাল লাভবান হওয়া দেখে এবারই প্রথম তিনি তরমুজ চাষ করেন। প্রথম বারেই পানির সংকটে চরম ক্ষতির ম্মুখিন হয়েছেন। তিনি জানান, তার আড়াই বিঘা জমি চাষ করতে এবং সেচের জন্য মোট ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় শ্যালো থেকে পানি আনতে খরচ বেড়েছ দ্বিগুণ। ধীরাজ ও সাধন এর মত প্রায় তিন শতাধীক চাষী এধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। চাষাবাদের খরচ উঠবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা। খালের পানি দিয়ে চাষিরা প্রথমে চারায় সেচের ব্যবস্থা করেছেন।খালটি অগভীর থাকায় এবং বৃষ্টি না হওয়ায় খালের পানি শুকিয়ে যায়। দূরবর্তী পুকুর থেকে কলসে করে পানি এনে গাছ বাঁচিয়ে রেখেছে। অনেেেকই এক কিলো দুর থেকে অন্যর শ্যালো থেকে পাইপের মাধ্যমে পানি এনে সেচ ব্যবস্থা করছেন।তবে শ্যালো মালিকদের নিজের জমির পানির চাহিদা মিটিয়ে ওই বিলের ১ হাজার দুই’শ বিঘা জমির মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ বিঘা জমিতে পানি দিতে পারছেন।ফলে অধিকাংশ জমির ফসল পানির সমস্যার কারনে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। স্থানীয় খাল গুলি খনন ও শ্যালো স্থাপনের ব্যবস্থা করতে পারলে তরমুজ চাষ এ এলাকার একটি গুরত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল হয়ে উঠবে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে ,বিগত কয়েক বছর ভাল ফলন পাওয়ায় চাষিদের তরমুজ চাষে আগ্রহ ব্যাপক বেড়েছে। গত বছর ১৫০ হেক্টরজমিতে তরমুজ চাষ করেন। ফলন ভাল হওয়ায় এবছর ৬৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষাবাদ করছেন ১ হাজার ২’শ চাষি।এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার( অতিরিক্ত দায়িত্ব) এস এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পানির সমস্যা নিরসনের জন্য খাল গুলো খনন করে কৃষকের কাছে যাতে ইজারা দেওয়া হয় সেজন্য জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে। পানি সমস্যার কারণে গাছ গুলোতে ভাইরাস দেখা দিয়েছে। এজন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তবে বৃষ্টি না হলে এ সমস্যা পুরোপুরি সমাধান হবে না। কয়রা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এসএম শফিকুল ইসলাম বলেন, তরমুজ চাষ লাভ জনক হওয়ায় চাষীরা তরমুজ চাষে ঝুকেছে । এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় তরমুজ সহ অনন্য ফসল উৎপাদনে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সরকার কৃষকের কথা চিন্তা করে এলাকার খাল খনন শুরু করেছে। আশাকরি খালগুলি খনন হলে পানির সমস্যার সমাধান হবে।