শনিবার ● ২৬ জুন ২০২১
প্রথম পাতা » সারাদেশ » কয়রা-বেতগ্রাম সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু, জনমনে স্বস্তি
কয়রা-বেতগ্রাম সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু, জনমনে স্বস্তি
রামপ্রসাদ সরদার, কয়রা, খুলনাঃ
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতাধীন খুলনার কয়রা উপজেলার কাঁশিরহাট থেকে বেতগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ ও বাঁক সরলীকরণ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
তুলনামূলক কম প্রশস্ত ও বেহাল এ সড়ক দিয়ে কয়রাসহ চারটি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকি নিয়ে জেলা শহরে যাতায়াত করে আসছিলেন। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনাসহ নানামুখী ভোগান্তি পোহাতে হতো তাদের। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হবে এ অঞ্চলের মানুষের।
সংশ্নিষ্ট সূত্র অনুযায়ী, গত বছরের ২১ জুন ‘বেতগ্রাম-তালা-পাইকগাছা-কয়রা সড়ক উন্নীতকরণ’ প্রকল্পটি একনেকের সভায় পাস হয়। এ বছরের ২২ জানুয়ারি প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয় সংশ্নিষ্ট দপ্তর। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৯ কোটি ৫৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। ২০২২ সালের ৩০ জুন নাগাদ কাজের মেয়াদ শেষ হবে। এ মুহূর্তে প্রকল্পটির ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় মানুষ জানান, আশির দশকে এ সড়কপথে জেলা শহরে যাতায়াত শুরু হয়। সে সময় কয়রা থেকে পাইকগাছা পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা ছিল। পাইকগাছা থেকে বেতগ্রাম পর্যন্ত ছিল ইটের সোলিং। নদীপথে দীর্ঘ সময় এড়াতে শুস্ক মৌসুমে এভাবেই সড়কপথে যাতায়াত করত মানুষ। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে সড়কের কিছুটা উন্নয়ন করা হলে বাস চলাচল শুরু হয়। পরে ১৯৯৮ সালের শুরুতে কয়রা থেকে বেতগ্রাম পর্যন্ত সড়ক শতভাগ উন্নয়ন করা হয়। তবে অপ্রশস্ত সড়কে অর্ধশত বাঁক থাকায় যাতায়াতে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয় গাড়িচালকদের। ওই সময় থেকে সড়কটি প্রশস্তকরণ ও বাঁক সরলীকরণের দাবী জানিয়ে আসছিলেন এ অঞ্চলের মানুষ।
সওজ সূত্র জানায়, এ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ ১১.২৫ হেক্টর, বিদ্যমান পেভমেন্ট মজবুতীকরণ ২৫.৫১ কিলোমিটার, বিদ্যমান পেভমেন্ট পুনর্নির্মাণ ৬.৫৮ কিলোমিটার, বাঁক সরলীকরণ ৪.৮০ কিলোমিটার, সার্ফেসিং ৬০.৪৪ কিলোমিটার, আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ ২৩টি, নদী শাসনকাজ ১০০ মিটার, আরসিসি প্যালাসাইডিং ৯ হাজার মিটার, ব্রিক টো ওয়াল ৭ হাজার দুইশ মিটার, আরসিসি টো ওয়াল ১ হাজার ৮০০ মিটার, আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল (৫.০ মিটার উঁচু) ৭০০ মিটার, সার্ফেস ড্রেন নির্মাণ ২ হাজার ৩৫০ মিটার, কনক্রিট ইউ-ড্রেন নির্মাণ সাড়ে ৬ হাজার মিটার, পরিদর্শন বাংলো নির্মাণ, নির্মাণকালীন রক্ষণাবেক্ষণ, ইউটিলিটি সিফটিং, জেনারেল ও সাইট ফ্যাসিলিটিস, বনায়ণ, ট্রাফিক সাইন, সিগন্যাল রোড মার্কিং ও কিলোমিটার পোস্ট ইত্যাদি কাজ করা হবে।
কয়রা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রত্যন্ত জনপদের মানুষের কথা চিন্তা করে মেগা প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
সংসদ সদস্য আকতারুজ্জামান বাবু বলেন, জেলা সদর থেকে উপজেলায় যাতায়াতের জন্য অন্য কোনো সড়ক না থাকায় বিভিন্ন সময় সরু এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচলে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এজন্য সড়কটি উন্নয়নে আমি স্থানীয় মানুষের কাছে ওয়াদাবদ্ধ ছিলাম।