শুক্রবার ● ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » রাজনীতি » পাইকগাছায় ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে উত্তাপ চরমে
পাইকগাছায় ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে উত্তাপ চরমে
প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছাঃ পাইকগাছা উপজেলার ৯ ইউনিয়নে নৌকা’র মূল প্রতিপক্ষ বিদ্রোহী বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই। ফলে নির্বাচনকে ঘিরে উত্তাপ চরমে, বাড়ছে সহিংসতাও। যে কোন উপায়ে নির্বাচিত হতে মরিয়া প্রার্থীরা। নৌকা প্রতিক পোড়ানো, পোস্টার ছেড়া, হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে পাইকগাছায়। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউপি নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার সর্বাত্মক প্রস্তুতির কথা বলা হচ্ছে।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার নির্বাচন। শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের নির্ঘুম রাত কাটছে।বিএনপি নির্বাচনে দলীয়ভাবে প্রার্থী দেয়নি। ফলে চেয়ারম্যান পদে প্রতিটি ইউনিয়নেই রয়েছেন সরকারি দলের একাধিক শক্তিশালী প্রার্থী। স্থানীয় প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেন জানা গেছে, ইউনিয়ন পর্যায়ে মূল প্রতিদ্বিদ্বতা হতে পারে আ’লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকারি দলীয় নেতাদের মধ্যেই। উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নে একজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারনে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। নির্বাচনে কপিলমুনিতে নৌকার প্রার্থী কওছার আলী জোয়াদ্দারের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ মজিবুর রহমান, লতায় নৌকার প্রার্থী কাজল কান্তি বিশ্বাসের মুখোমুখি স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মন্ডল, দেলুটি ইউনিয়নে নৌকার রিপন কুমার মন্ডলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী দিজেন্দ্রনাথ মন্ডলের, সোলাদানা ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হকের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থী আবদুল মান্নান গাজীর লড়াই হবে, লস্কর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী কেএম আরিফুজ্জান তুহিনের প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী করিম গাইন, গদাইপুরে নৌকার প্রার্থী শেখ জিয়াদুল ইসলামের লড়াই হবে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান গাজী জোনায়েদুর রহমানের সাথে, রাড়ুলী ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ নির্বাচনে জয়লাভের পথ সুগোম হয়েছে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা আব্দুল মজিদ গোলদার নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন, চাঁদখালী ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মুনসুর আলী গাজী, স্বতন্ত্র প্রার্থী মনি মোল্লা ও শাহজাদা ইলিয়াজের ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস রয়েছে এবং গড়াইখালী ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রুহুল আমিন বিশ্বাসের মূল প্রতিদ্বদ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী স্থানীয় সংসদ সদস্যের মামা আব্দুস সালাম কেরু। যদিও গত ১১ সেপ্টেম্বর জেলা আ’লীগের বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে খুলনায় ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মধ্যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে পাইকগাছার সোলাদানায় ও চাঁদখালীতে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ভোটারা জানান, সোলাদানায়, চাঁদখালী, গড়াইখালী, গদাইপুর ও লস্কর ইউনিয়ন নির্বাচনে ঝুকি থাকবে। সোলাদানায়, গদাইপুর ও রাড়ুলীর স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং বর্তমান চেয়ারম্যান এস এম এনামুল হক ও গাজী জোনায়েদুর রহমান নিজ নিজ ইউনিয়ান নির্বাচনী ঝুকিপূর্ণ উল্লেখ করে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহনের দাবি করেছেন। ইতি মধ্যে গদাইপুর ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী আব্দুস সালাম বাচ্চু ও রাড়ুলী ইউনিয়নের আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মজিদ গোলদার নির্বাচন থেকে সরে দাড়িয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, ভোট নিরপেক্ষ করার জন্য সরকারের বিধি নিষেধ অনুযায়ী সবকিছু করা হবে।
খুলনা জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার এম মাজহারুল ইসলাম জানান, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহনের জন্য প্রস্তুতি চলছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন স্থানীয় সরকারের তৃণমূল পর্যায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। এখানে প্রতিযোগিতা থাকবে, তবে বিশৃঙ্খলা কাম্য নয়। সরকারেরও কঠোর নির্দেশনা রয়েছে নিরপেক্ষ নির্বাচন করার। অতএব একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।