বৃহস্পতিবার ● ১৪ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » পাইকগাছায় নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনে কদর বেড়েছে পরিবেশ বান্ধব ঘোড়ার গাড়ি; দুই’শ পরিবারের জীবিকা নির্বাহ
পাইকগাছায় নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনে কদর বেড়েছে পরিবেশ বান্ধব ঘোড়ার গাড়ি; দুই’শ পরিবারের জীবিকা নির্বাহ
মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা, খুলনা ॥
পাইকগাছায় নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনে কদর বেড়েছে ঘোড়ার গাড়ি। এতে একদিকে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে অপরদিকে দূষণ থেকে মুক্ত থাকছে পরিবেশ। বর্তমানে উপজেলায় ঘোড়ার গাড়ির উপর জীবিকা নির্বাহ করছে দুই শতাধিক পরিবার। সূত্রমতে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় মালামাল পরিবহনের একমাত্র মাধ্যম ছিল নদী পথ। আর নদী পথে মালামাল বহনের জন্য নৌযান হিসাবে ব্যবহত হতো নৌকা। জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈষ্ণিক উষ্ণতার ফলে ধীরে ধীরে বেশির ভাগ নদ-নদী গুলো ভরাট হয়ে যায়। আবার দু’একটি নদী সচল থাকলেও নাব্যতা সংকটের কারণে নৌযান চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। নৌপথ গুলো বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন ঘটে। দেশের অন্যান্য স্থানের ন্যায় মালামাল পরিবহনে উপজেলার সর্বত্রই ব্যবহত হতে থাকে আধুনিক যানবহন। বিশেষ করে নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনে বেশির ভাগ ব্যবহার হতো ট্রাক, পিকআপ, ট্রলি, থ্রী হুইলার ও ইঞ্জিন চালিত নসিমন। এতে একদিকে যেমন বাড়তি জ্বালানি খরচ হতো তেমনি যানবাহনের ধুয়াই মারত্মক ভাবে দূষণ হতো পরিবেশ। এদিকে মালামাল পরিবহনে গত কয়েক বছরে কদর বেড়েছে ঘোড়ার গাড়ির। বিশেষ করে অভ্যন্তরীন নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঘোড়ার গাড়ির প্রচলন বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাটা গুলো থেকে বসতবাড়ী কিংবা যেখানে স্থাপনা নির্মিত হয় এর যাবতীয় নির্মাণ সামগ্রী যেমন, ইট, বালি, কাঁঠ, বাঁশ সহ প্রায় সব সামগ্রী বহনের জন্য ঘোড়ার গাড়িই এখন অন্যতম পরিবেশ বান্ধব পরিবহন হিসাবে প্রচলন হয়েছে। দিনে দিনে মানুষের জীবন যাত্রার মান যেমন বেড়েছে, তেমন বেড়েছে স্থাপনা নির্মাণ। আর তার সাথেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ইট ভাটা সহ নির্মাণ সামগ্রী ব্যবসা। ফলে এসব সামগ্রী পরিবহনে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি। বর্তমানে উপজেলার গদাইপুর, চেচুয়া, ঘোষাল, গোপালপুর, বিরাশী, মালথ, আগড়ঘাটা, কপিলমুনি, কাশিম নগর, গজালিয়া, চাঁদখালী সহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় দুইশ পরিবারের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে ঘোড়ার গাড়ি। এতে একদিকে জ্বালানি খরচ লাগছে না। অপরদিকে পরিবেশও দূষণ হচ্ছে না। স্বল্প সময়ে অধিক আয়ের জন্য অনেকেই অন্য পেশা ছেড়ে ঝুকছে প্রাচীনতম ঘোড়ার গাড়ি চালানোর পেশায়। সরল গ্রামের মান্দার গাজীর ছেলে রাজ্জাক গাজী জানান, তিনি দীর্ঘদিন এ পেশায় জড়িত রয়েছেন। দিনে দুইবার ভাটা থেকে ইট বহন করে থাকেন। পুরাইকাটি ইট ভাটা থেকে উপজেলা সদর পর্যন্ত ৪শ ইট (এক গাড়ি) বাবদ বহন খরচ পান আড়াইশ টাকা। এতে দিনে কমপক্ষে ৫শ টাকা আয় হয় যার মধ্যে ঘোড়ার খাদ্যবাবদ ব্যায় হয় ১শ টাকা। বাকি ৪শ টাকায় তিনি সংসার চালান। দিনের অন্য সময় তিনি বাড়ীর অন্যান্য কাজ করেন। সব মিলিয়েই ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখেই আছেন তবে ঘোড়ার খাদ্য সংকটের কারণে কিছুটা হলেও বিপাকে পড়তে হয় বলে অধিকাংশ ঘোড়ার গাড়ি চালকরা জানান।