মঙ্গলবার ● ২১ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » প্রকৃতি » পাইকগাছায় খেঁজুরের রস আহরণে ব্যস্ত গাছিরা
পাইকগাছায় খেঁজুরের রস আহরণে ব্যস্ত গাছিরা
এস ডব্লিউ নিউজ।
পাইকগাছায় শীতের আগমনে গাছিরা খেঁজুরের রস আহরণের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের সাথে খেঁজুরের রস ও শীতকালের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক। শীতের মূল উৎসবই হলো শীতের পিঠা ও পায়েশ। যার মূল উপাদান খেঁজুরের রস, ঝোলাগুড় ও পাটালী। শীতের সকালে রোদে বসে যেমন পিঠা খেতে শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ সকলের ভাল লাগে। শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সবাই মেতে উঠে পিঠা খাওয়ার উৎসবে। এ বছর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে খেঁজুরগাছ পরিচর্যার কাজ প্রায় শেষ করেছেন গাছিরা। গাছের মাথায় অনেকখানি বাকল তুলে সেখানে হাঁড়ি বেঁধে এ রস সংগ্রহ করা হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৪৬ হাজার ২শ রস আহরণ যোগ্য খেঁজুরগাছ আছে। উপজেলার গদাইপুর গ্রামের গাছি আফিল উদ্দীন জানান, অন্য মৌসুমে তিনি বিভিন্ন কাজ করেন। কিন্তু শীত এলেই খেঁজুরগাছ কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এ অঞ্চলে খেঁজুর রসের পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় ভালো আয় করেন। এছাড়া শীতের সময় ধনী-গরীব সকলের কাছে খেঁজুরের গুড়েরও বেশ চাহিদা। তিনি আরো জানান, তার নিজের গাছের সংখ্যা খুবই কম। বেশির ভাগই অন্যের গাছ কেটে রস সংগ্রহ করতে হয়। তাই গাছের মালিককে রসের একটা অংশ দিতে হয়। তারপরেও প্রতিবছর তিনি রস ও গুড় বিক্রি করে লাভবান হন। গাছে সংগ্রহের জন্য যে মাটির পাত্র পাতা হয়,এলাকায় ভাড় বলে পরিচিত। এই এক ভাড় রস একশত টাকা দরে বিক্রি হচ্ছ। তাই বেশি লাভবান হন কাচা রস বিক্রয় করে।
উপজেলার গদাইপুর, গোপালপুর, মঠবাটী, পুরাইকাটী, মালথ, সিলিমানপুর সহ বিভিন্ন গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ এলাকার গাছিরা গাছের পরিচর্যা শেষ করেছে এবং কেউ কেউ রস আহরণ শুরু করেছে।তবে এলাকায় গাছির সংখ্যা খুব কম।সে জন্য অনেক গাছ গাছির অভাবে গাছ থেকে রস আহরণ করা সম্ভাব হয় না।তাছাড়া প্রতি বছর বহু গাছ কেটে ফেরা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: জাহাঙ্গীর আলম জানান, খেঁজুরগাছ ও রসের সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে খেঁজুর রস আহরণ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। তাছাড়া গাছির অভাবে অনেক গাছ থেকে রস আহরণ করা যায় না। প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখতে খেঁজুরগাছের ভূমিকা অপরিসীম। তাই কৃষি অফিস থেকে এলাকার খেঁজুরগাছ রোপন করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।