শুক্রবার ● ২৪ ডিসেম্বর ২০২১
প্রথম পাতা » বিবিধ » ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে আগুন যেভাবে প্রাণে বাঁচলেন স্ত্রীসহ পাথরঘাটার ইউএনও
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে আগুন যেভাবে প্রাণে বাঁচলেন স্ত্রীসহ পাথরঘাটার ইউএনও
এস ডব্লিউ; বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটা। লঞ্চে থাকা পাঁচ শতাধিক যাত্রীর বেশিরভাগই গায়ে শীতের কাপড় জড়িয়ে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। হঠাৎ বিকট শব্দে আওয়াজ। শুরু হয় চিৎকার-চেঁচামেচি আর মানুষের দ্বিগ্বিদিক ছোটাছুটি। শত মানুষের গণনবিদারী চিৎকারের শব্দ কানে আসে লঞ্চের ভিআইপি কেবিনে থাকা যাত্রী হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ ও তার স্ত্রীর। কী হয়েছে দেখতে কেবিন থেকে দুজনেই বেরিয়ে পড়েন। বাইরে আগুনে লেলিহান শিখা দেখে তাদের চোখ ছানাবড়া। আগুনে দাউ দাউ করে জ্বলছে লঞ্চ। আগুনের মধ্যেই প্রাণ বাঁচাতে ছুটছেন মানুষ। কেউবা ওপরে উঠছেন কেউবা নদীতে লাফিয়ে পড়ছেন। এমন অবস্থা দেখে আগুন থেকে নিজেদের রক্ষার্থে সুগন্ধা নদীতে স্ত্রীকে নিয়ে লাফিয়ে পড়েন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ মুজাহিদ। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় প্রাণে রক্ষা পান দুজনে।
ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে থাকা ইউএনও মুজাহিদ এভাবে ভয়াবহ লঞ্চ দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন।হোসাইন মোহাম্মদ আল মুজাহিদ জানান, অফিসের কাজে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন তিনি। কাজ শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ছয়টায় এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের ভিআইপি কেবিনের নীলগিরিতে ওঠেন তারা। রাত তিনটার দিকে লঞ্চে অন্য যাত্রীদের চিৎকারে তার ঘুম ভাঙে। তখন লঞ্চ কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়। এরপর তড়িঘড়ি করে বের হয়ে লঞ্চের সামনে থেকে চলে যান। অবস্থা বেগতিক দেখে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি লাফ দেন নদীতে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় দুজনে প্রাণে রক্ষা পেলেও তার স্ত্রীর ডান পা ভেঙে যায়। বর্তমানে দুজনই ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।ইউএনও মুজাহিদ আরও জানান, আগুনে লঞ্চে থাকা বৃদ্ধ এবং শিশুরাই বেশি হতাহত হয়েছেন। এছাড়া লঞ্চে অনেক নারী ছিলেন যারা নদীতে লাফিয়ে পড়েছেন। কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত তীরে উঠতে পেরেছেন কিনা তা নিয়ে সংশয়ে প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের পর পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও যৌথ বাহিনী তল্লাশি চালিয়ে এসব মরদেহ উদ্ধার করে।
অগ্নিকাণ্ডের ওই ঘটনায় এখনো যারা নিখোঁজ রয়েছেন তাদের সন্ধানে উদ্ধার তৎপরতা চলমান আছে। প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।