মঙ্গলবার ● ৭ জুন ২০২২
প্রথম পাতা » অপরাধ » পাইকগাছায় সহায়তার টাকা পেয়েও ইউ পি চেয়ারম্যান কে জড়িয়ে মিথ্যাচার; ব্যাংক পরিচালকের অভিযোগ
পাইকগাছায় সহায়তার টাকা পেয়েও ইউ পি চেয়ারম্যান কে জড়িয়ে মিথ্যাচার; ব্যাংক পরিচালকের অভিযোগ
পাইকগাছার গড়ইখালীতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার টাকা পেয়েও সুকুমার মন্ডল নামে এক ব্যক্তি ইউপি চেয়ারম্যানকে জড়িয়ে মিথ্যাচর করছেন। জালিয়াতি ও টাকা আত্মসাৎতের কথা বলে এলাকায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছেন এমন অভিযোগ উঠেছে। ইতোপূর্বে ব্যাংক পরিচালক থানায় জিডি সহ সুকুমার মন্ডলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। যা পুলিশ তদন্ত করছেন। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানিয়েছে,খুলনা-৬’র সংসদ সদস্য মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু’র প্রচেষ্টায় উপজেলার গড়ইখালী ইউপি’র ফকিরাবাদ গ্রামের মৃত বিনোদ মন্ডলের ছেলে সুকুমার মন্ডলের নামে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা স্বরুপ ৪০হাজার টাকার চেক বরাদ্দ হয়।যার হিসাব নং ০১০৭৩৩৩০০৪০৯৩,চেক নং সিসি-১০০-৯৮১৮১৭৪,সোনালী ব্যাংক লিমিটেড কর্পোরেট শাখা,ঢাকা। চেকটি ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড গড়ইখালী এজেন্ট শাখায় দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অন্যান্য কাগজপত্র সহ চেকটি হারিয়ে ফেলে। এ ঘটনায় ব্যাংক পরিচালক মোঃ ইয়াকুব আলী গত ১৯এপ্রিল’২১ পাইকগাছা থানায় একটি জিডি করেন,যার নং ১০৫৩। এদিকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সমালোচনা এড়াতে স্হানীয় অনেকের উপস্হিতিতে সুকুমার মন্ডল কে নগত ৪০হাজার টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে এ টাকা প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের পরামর্শে সুকুমার মন্ডল হারিয়ে যাওয়া চেক পুনরায় ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালের সচিব বরাবার আবেদন করেন। যার প্রেক্ষিতে গত ২৫এপ্রিল’২২ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে পুনরায় সুকুমার মন্ডলের নামে ৪০ হাজার টাকার একটি চেক বরাদ্দ হয়। জানা গেছে, উপজেলা পরিষদে সংসদ সদস্য,সরকারি কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানদের উপস্হিতিতে আনুষ্টানিকভাবে বিভিন্ন জনের চেক বিতরন করা হয়।কিন্তু এদিন সুকুমার মন্ডল উপস্হিত না হওয়ায় গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান ও ব্যাংক পরিচালক চেকটি কালেকশন করে সুকুমার মন্ডলের হিসাব নম্বরে জমা দেন।
এ বিষয়ে ব্যাংক পরিচালক মোঃ ইয়াকুব আলী থানায় অভিযোগের কথা বলে জানান, প্রধানমন্ত্রীর তহবিলের দেওয়া সুকুমারের নামীয় চেকটি হারিয়ে গেলে আমি থানায় জিডি করি এবং ব্যাংকের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে তাকে নগদ ৪০হাজার টাকা প্রদান করি যার একটি ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। তিনি আরো জানান,পরবর্তীতে স্হানীয় সংসদ সদস্যের প্রচেষ্টায় পুনরায় তার নামে ৪০হাজার টাকার চেক আসলে আমি কালেকশন করে তার নামীয় একাউন্টে জমা করি। যা তদন্ত হলে পরিস্কার হবে। পরবর্তীতে ব্যাংকের প্রদেয় টাকা ফেরত চাইলে সে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে হয়তো কারোর প্ররোচনায় ইউপি চেয়ারম্যান জি,এম আব্দুস ছালাম কেরু’র বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতি ও টাকা আত্নসাৎ এর মিথ্যা অভিযোগ করেছে।
এ অভিযোগের বিষয়ে চেক প্রাপ্ত সুকুমার মন্ডল মুঠোফোনে বলেন,প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আমি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ইঞ্জিনিয়ার প্রেম কুমার মন্ডলের মাধ্যমে একটি ও সংসদ নির্বাচনের পরে বর্তমান এমপি’র মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আরেকটি আবেদন করি।ফলে পর পর বরাদ্দকৃত দুটি চেকের টাকা আমার বলে তিনি দাবি করেন। কিন্তু চেক হারানোর ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পুনঃ চেক প্রাপ্তির আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা কৌশলে এড়িয়ে যান। এ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সুত্র জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে একই ব্যক্তির নামে একাধিকবার চেক ইস্যু হওয়ার কোন সুযোগ নেই। মুলতঃ সুকুমার মন্ডলের চেক হারানোর আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনরায় তার নামে চেক বরাদ্দ হয়।
এ বিষয়ে গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান জি,এম আব্দুস ছালাম (কেরু)বলেন, সুকুমার মন্ডলের নামীয় চেক ইসলামী ব্যাংক গড়ইখালী এজেন্ট শাখায় তার একাউন্টে ব্যাংকে জমা আছে। এখানে কি ভাবে টাকা আত্নসাৎ এর ঘটনা ঘটলো? তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন,গত ইউপি নির্বাচনে পরাজিত অনেক প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মধ্যে কেউ হয়তো সুকুমার মন্ডলকে প্ররোচিত করে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করে জল ঘোলা করার চেষ্টা করছেন।
সর্বশেষ, থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)মোঃ জিয়াউর রহমান জানান,প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার চেক সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যাংক পরিচালকের থানায় জিডি সহ একটি অভিযোগ করেছেন।ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা আছে। এখানে আত্নসাৎ বলার সুযোগ নেই। তিনি আরো জানান, এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে।